ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশনের জীবিকা প্রকল্প: চাঁদপুরের ২,৫০০ পরিবারকে স্বাবলম্বিতার পথে
২০১৫ সাল থেকে ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলায় শুরু করে একটি স্বপ্নযাত্রা—জীবিকা প্রকল্প। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের অপেক্ষাকৃত দুর্বল, হতদরিদ্র, ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারকে আর্থিক, সামাজিক ও আত্মিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। এই যাত্রায় ২৫০০ এরও বেশি পরিবারকে চারটি টেকসই প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্গঠিত ও আত্মনির্ভরশীল করার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
জীবিকা প্রকল্পের মূল সহযোগিতা ও কার্যক্রম:
১. স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানি:
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য টিউবওয়েল বসানো, স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্যানিটারি ল্যাট্রিন সরবরাহ।
মা ও শিশুর পুষ্টি, প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যপরীক্ষা শিবির আয়োজন।
২. শিশু শিক্ষা ও শিক্ষা সহায়তা:
সুবিধাবঞ্চিত শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ।
বই, পোশাক, স্কুলব্যাগ এবং উপবৃত্তি প্রদান।
শিশু ও অভিভাবকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কমিউনিটি সভা।
৩. দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান:
নারী ও যুবদের জন্য সেলাই, কৃষিকাজ, গবাদিপশু পালন, হস্তশিল্প, বুটিক, কারিগরি ট্রেনিং।
প্রশিক্ষণ-পরবর্তী পর্যায়ে ক্ষুদ্র পুঁজি সহায়তা ও ব্যবসায়িক পরামর্শ।
৪. সুদের বিকল্প: হালাল অর্থব্যবস্থা ও কার্জে হাসানা:
যাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিবারের মাঝে সুদমুক্ত পুঁজি বিতরণ।
পরিবারগুলোকে আত্মকর্মসংস্থানের পথে সহায়তা দিয়ে ধীরে ধীরে দানগ্রহীতা থেকে দানদাতা হিসেবে গড়ে তোলা।
সাফল্যের চিত্র:
বহু পরিবার এখন নিজেদের আয় দিয়ে জীবন চালাতে সক্ষম।
নারীরা ঘরে বসেই আয় করছেন; শিশুরা স্কুলে ফিরেছে।
সুদের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে পরিবারগুলো সম্মানজনক জীবনে ফিরে এসেছে।
স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব গড়ে উঠেছে—পরিবারগুলো এখন সহায়তা চাহিদাকারী নয়, বরং সহায়তাদাতা।
উপসংহার
ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশনের জীবিকা প্রকল্প কেবল একটি সহায়তা কর্মসূচি নয়—এটি একটি মানবিক বিপ্লব। এটি প্রমাণ করেছে যে, সঠিক পরিকল্পনা, আন্তরিকতা ও মূল্যভিত্তিক উদ্যোগ থাকলে সমাজের প্রান্তিক মানুষও নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারে। চাঁদপুরের মাটি থেকে উঠে আসা এই পরিবর্তন হতে পারে সারা দেশের জন্য একটি রোল মডেল।