Daffodil Foundation Forum

Daffodil Institute of Social Sciences- DISS => Success Story => Achievement => Topic started by: Farhana Haque on July 15, 2018, 04:37:01 AM

Title: বিশ্ব শিশু দিবস
Post by: Farhana Haque on July 15, 2018, 04:37:01 AM
বিশ্ব শিশু দিবস-২০১৭

গত বিশ্ব শিশু দিবসে, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্কুল "সৌহার্দ্য" আয়োজন করেছিল সোহার্দ্য শিশু দিবস - ২০১৭। ইভেন্ট টি আয়োজিত হয় আশুলিয়াতে "ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির" স্থায়ী ক্যাম্পাসের মনোরম পরিবেশে। ইভেন্ট এ অংশগ্রহণকারী প্রতিটি শিশুর সম্ভবত স্বপ্নের দিন ছিল এটি। সকালে নির্ধারিত সময়ে অপেক্ষারত শিশুরা এবং সৌহার্দ্যের সম্মানিত সকল সদস্যদের নিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বাস ছুটতে শুরু করে। গন্তব্য, স্থায়ী ক্যাম্পাস, আশুলিয়া। শিশুদের গান আর আনন্দে মুখর ছিল পুরো যাত্রাপথ। গাড়ি থেকে নেমেই এক এক জনের চোখ ছানাবড়া , যেন এত্ত বিশাল মাঠ, ক্যাম্পাস তারা স্বপ্নেও কখনো দেখেনি। লাইন ধরে যখন তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছিল, খুব খেয়াল করে দেখলাম, তাদের অনেকের ই পায়ে জুতো নেই, কারো শার্ট টা হয়তো পেছন দিকে সামান্য ছেঁড়া। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছিল এরা প্রত্যেকেই রাজা। গতকালের জন্য তারা রাজা ই ছিল। সারাদিন বিভিন্ন রকম খেলাধূলা, গান, অভিনয় চলল। দিনটি তো ওদেরই ছিল।

দুপুরে সবাই যখন একসাথে খেতে বসলো। তখন চোখে পড়লো আরেকটি বিষয়, সদস্যরা খুব যত্ন করে মুখে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে একেবারে ছোট শিশুদের। চোখ জুড়িয়ে যাবার মত দৃশ্য।

ভাবনার জগত তীব্র বিষাদে ভরে গেলো, যখন দেখলাম, অধিকাংশ শিশুই তাদের খাবার না খেয়ে খাবারের বক্স রেখে দিয়েছে বাড়িতে নিয়ে তাদের ছোট ভাইবোন কিংবা বাবা-মায়ের সাথে বসে খাবে বলে।
একবার ভাবললাম আমরা একবেলা সময়মত খাবার না খেলেই পেট জানান দেয়, খেতে হবে নইলে আর কোন কাজ করা যাবে না। আর ছোট ছোট বাচ্চাগুলো সারাদিন না খেয়ে তাদের খাবার জমিয়ে রাখছে, বাড়ি ফিরে সবাই মিলে খাবে বলে।
'পাপেট শো' ছিল ইভেন্ট এর অন্যতম আকর্ষণ। বাচ্চাগুলো খুব খুশি মনে উপভোগ করল পুতুল নাচ। তাদের কেউ কেউ কাছে গিয়ে পুতুলদের ছুঁয়ে দেখলো, কেউ কেউ তো পর্দার পেছনেই চলে গেল অদম্য কৌতূহল নিয়ে দেখার জন্য যে পুতুলগুলো কিভাবে নাচ করছে। এক এক করে শেষ হলো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানও।
এর পর ফেরার পালা......
মুখগুলো কেমন মেঘে ঢেকে গেলো। ফিরতে হবে, আবার কবে এমন সুযোগ আসবে, এ নিয়ে সকলের মনে মনে জিজ্ঞাসা। ফেরার সময় পথে ক্লান্তিতে অনেকেই ঘুমিয়ে গেল। সৌহার্দ্যের সকল সদস্য এক এক করে বিদায় নিল। কৃতজ্ঞতা রয়ে গেলো আমাদের ড্যাফোডিল গ্রুপের সম্মানিত চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ সবুর খান স্যারের প্রতি। যিনি অনুমতি দিয়েছিলেন বলেই শিশুরা পেরিয়েছিল স্বপ্ন পরিবেশের প্রবেশপথ। এখান থেকেই হয়তো কোন শিশুর মনে গেঁথে গেছে স্বপ্নের বীজ, এমন সুন্দর পরিবেশে তারাও একদিন শিক্ষা গ্রহন করবে। এমন বিশালাকার মাঠে তারাও খেলবে এই আগ্রহ তৈরি করে দেওয়াই  আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।

যে একটি দিন ওদের কাছে স্বপ্নের মত, আমরা চাইলেই পারি তাদের প্রতিটি দিনকেই এমন স্বপ্নের মত করে দিতে। ওই বিশাল খেলার মাঠ, সুন্দর পরিবেশ, আদর্শ শিক্ষা, আবাসন এবং প্রতিবেলা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার এসব কিছুই অধিকারবঞ্চিত শিশুদের অপেক্ষাতেই রয়েছে। এ সব কিছু নিয়ে "ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অব সোশ্যাল সাইন্সেস'' প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত।
এগিয়ে আসতে হবে আমাদেরকেই। সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে, সৌহার্দ্য স্কুল, জ্ঞানের পাঠশালা, লালসবুজ নামক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যারা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করে থাকে। যারা "ভালোবেসে পাশে দাঁড়াই" স্লোগানে এগিয়েই আছে,  তারা যদি আর একটি ধাপ এগিয়ে এসব শিশুদেরকে সুন্দর ভবিষ্যৎ এর দিকে পা বাড়াতে সহায়তা করে, তবে আমরা একটি শিক্ষিত জাতি কিংবা সুন্দর বাংলাদেশ এর স্বপ্ন দেখতেই পারি।