Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - ashraful.diss

Pages: [1] 2 3 ... 21
1
কখন শিশুরা মিথ্যা বলা শুরু করে?

সাধারণত শিশুদের আট বছর বয়সের আগে পূর্ণ অর্থে মিথ্যা বলার মতো মানসিক বিকাশ ঘটে না।
যেমন, যদি ৩ বছরের শিশুকে জিজ্ঞেস করা হয়, “তুমি কি দুধ খেয়েছো?”—সে দুধ না খেয়েও বলে, “হ্যাঁ, খেয়েছি।”
এক্ষেত্রে শিশুটি আপনাকে ধোঁকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভুল তথ্য দেয়নি; বরং আপনাকে খুশি করার জন্য বা শাস্তি এড়ানোর জন্য এমনটি বলেছে। তাই এটিকে প্রকৃত মিথ্যা বলা যায় না।

কেন শিশুরা মিথ্যা বলে?

১. শাস্তির ভয়: পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিশু বুঝে যায়—সত্য বললে শাস্তি পেতে হবে। তাই শাস্তি এড়াতে মিথ্যা বলে।
২. লজ্জা ও অস্বস্তি: ভুল করলে শিশু লজ্জায় পড়ে। পূর্বে যদি লজ্জা দেওয়া হয়ে থাকে, তবে শিশুরা লজ্জা এড়াতেও মিথ্যা বলে।
৩. বাস্তবতা ও কল্পনার গুলিয়ে ফেলা: ৮ বছর বয়সের আগে শিশুরা বাস্তব আর কল্পনার পার্থক্য ঠিকভাবে বুঝতে পারে না।
৪. পরিবার থেকে শেখা: শিশুরা বড়দের দেখে মিথ্যা বলতে শেখে। যদি পরিবারের কেউ শিশুর সামনে মিথ্যা বলে এবং বলে “প্রয়োজনে মিথ্যা বলা যায়”, তবে শিশুও একই আচরণে উৎসাহিত হয়।
৫. কিছু পাওয়ার জন্য: যেমন—“রুটি খেলে আইসক্রিম পাবে।” শিশু রুটি না খেয়েই বলে দেয় সে খেয়েছে।
৬. স্কুলের পরিবেশ: গবেষণায় দেখা গেছে—যেসব স্কুলে বেশি শাস্তি দেওয়া হয়, সেসব স্কুলের শিশুরা বেশি মিথ্যা বলে। কারণ শাস্তি এড়াতে তারা গুছিয়ে মিথ্যা বলতে শেখে।

ডেভেলপমেন্টাল সাইকোলজির ব্যাখ্যা

১। ছোট শিশুরা মনে করে, সব পরিস্থিতিতে মিথ্যা বলা ভুল।
২। ১০ বছর বয়সের পর থেকে তাদের চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আসে।
৩। ১০–১৮ বছরের মধ্যে শিশু মিথ্যা বলার সঠিকতা বা ভুল হওয়া নির্ধারণ করে ঘটনার ফলাফলের উপর।
৪। যদি মিথ্যা বলে কিছু পাওয়া যায়, তবে তা তাদের কাছে সঠিক মনে হয়।
৫। অন্যকে খুশি করার জন্য মিথ্যা বলাও তখন গ্রহণযোগ্য মনে হয়।

শিশুকে সত্য বলায় উৎসাহিত করার উপায়

✅ গল্প শুনানো: সত্য বলার সুবিধা বা পুরস্কারের গল্প বলুন। ধর্মীয় গল্প বা বয়স অনুযায়ী ছোট-বড় গল্প তৈরি করতে পারেন।
✅ প্রশংসা করা: শিশু সত্য বললে তার সততা প্রশংসা করুন।
✅ নিজে উদাহরণ হওয়া: শিশুর সামনে সবসময় সত্য বলুন এবং কথা দিয়ে কথা রাখুন।
✅ ভিন্ন সমাধান খোঁজা: শিশু মিথ্যা বললে শাস্তি না দিয়ে বিকল্প উপায়ে সমস্যার সমাধান করুন। যেমন—হোমওয়ার্ক না করে বললে করেছে, তখন তাকে হোমওয়ার্ক শেষ করতে বলুন এবং পরে চেক করুন।
✅ কাউন্সেলিং: যদি মিথ্যা বলা অভ্যাসে পরিণত হয় এবং পরিবারের জন্য সমস্যার কারণ হয়, তবে ফ্যামিলি ও ইন্ডিভিজুয়াল কাউন্সেলিং করা যেতে পারে। এতে শিশুর উদ্বিগ্নতা ও বিষণ্নতা কমে, আত্মমর্যাদা বাড়ে এবং ট্রমা থাকলে তা নিয়েও কাজ হয়।

যা করবেন না

❌ শিশুকে ভিন্ন ভিন্ন বার্তা দেবেন না—একবার সত্য বলতে বলে আবার বলবেন, প্রয়োজনে মিথ্যা বলা যায়।
❌ মিথ্যা বললে শাস্তির গল্প শুনাবেন না।
❌ কথা দিলে তা রাখুন। রাখতে না পারলে কারণ ব্যাখ্যা করুন।
❌ শিশুকে “মিথ্যুক” বলে ডাকবেন না বা অন্যদের সামনে হেয় করবেন না।
❌ সত্য বলার জন্য উপহার দিতে শুরু করে আবার বন্ধ করবেন না। উপহারের ওপর নির্ভরশীল হলে উপহার না পেলে শিশু সত্য বলা বন্ধ করে দিতে পারে।

👉 এইভাবে শিশুর প্রতি সহানুভূতিশীল, ধারাবাহিক এবং ইতিবাচক আচরণই তাকে সত্য বলার অভ্যাসে গড়ে তুলবে।

2
🌟 ডিআইএসএস শিশুদের জন্য কিছু নির্দেশনা 🌟

নির্দেশনা কী?

শিশুর বা শিক্ষার্থীর ক্ষমতার সর্বাধিক বিকাশে সাহায্য করার একটি অবিরত প্রক্রিয়া। এটি সহায়তা প্রদান, কিন্তু কখনো জোর প্রয়োগ নয়। নির্দেশনা গণতান্ত্রিক ও সহযোগিতা মূলক।

নির্দেশনার ধরন:

1️⃣ শিক্ষামূলক – জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি
2️⃣ বৃত্তিমূলক – পেশাগত বা কর্মসংক্রান্ত দক্ষতা উন্নয়ন
3️⃣ স্বাস্থ্য – শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা
4️⃣ ধর্মবিষয়ক – নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ
5️⃣ অবসর ও বিনোদনমূলক – সৃজনশীলতা ও আনন্দদায়ক কার্যক্রম
6️⃣ সামাজিক ও নৈতিক – দায়িত্বশীল ও নৈতিক আচরণ গঠন

🏫 বিদ্যালয়ে নির্দেশনার প্রয়োজনীয়তা:

✔ শিক্ষার কৌশল আয়ত্ত
✔ শিক্ষোপকরণের সঠিক ব্যবহার
✔ পরীক্ষার সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ
✔ নিয়মিত হাজিরা
✔ কার্যক্রম ও সহ-পাঠক্রমিক কর্মসূচীর সমন্বয়
✔ সু-অভ্যাস গঠন
✔ দৈনন্দিন কার্যক্রম ও শিক্ষাক্রম নিয়মিত অনুমোদন
✔ ভবিষ্যৎ গঠনমূলক কর্মসূচি পরিকল্পনায় সহায়তা

📋 নির্দেশনার ধাপ:

1️⃣ ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ
2️⃣ পরিবেশগত সুযোগ সুবিধা যাচাই
3️⃣ পরামর্শ প্রদান
4️⃣ অভিযোজন (Adaptation)
5️⃣ সুযোগ ধরে রাখা ও প্রবর্তন

3
Age Group / প্যারেন্টিং
« on: September 09, 2025, 04:07:44 AM »
🧒👨‍👩‍👧 প্যারেন্টিং: শিশুর আচরণ পরিবর্তন করার আগে নিজেকে পরিবর্তন করুন

সন্তান আমাদের প্রতিচ্ছবি। আমরা যেমন আচরণ করি, তারা তেমনই শিখে নেয়। তাই শিশুর চরিত্র গঠনে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন অভিভাবকের নিজেকে পরিবর্তন করা।

কি করবেন

১। ভালো কাজের জন্য শিশুকে উৎসাহ দিন বা পুরস্কৃত করুন – এতে সে আত্মবিশ্বাসী হবে।
২। শিশুকে প্রশংসা করুন – এতে সে অন্যকেও প্রশংসা করতে শিখবে।
৩। শিশুকে নৈতিকতা শিক্ষা দিন – সে সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত নাগরিক হবে।
৪। শিশুকে স্নেহ ও ভালোবাসা দিন – সে অন্যকে ভালোবাসতে শিখবে।
৫। শিশুর সাথে বন্ধুভাবাপন্ন হোন – তার নিজের জগৎ গড়ে তুলতে পাশে থাকুন।

কি করবেন না

১। শিশুকে নিন্দা করবেন না – এতে তার মনে ঘৃণা তৈরি হবে।
২। শিশুকে মারবেন না – এতে তার মধ্যে অবাধ্যতা জন্ম নেবে।
৩। শিশুকে উপহাস করবেন না – এতে তার মধ্যে হীনমন্যতা তৈরি হবে।
৪। শিশুকে সকলের সামনে লজ্জা দিবেন না – এতে সে অপরাধী মানসিকতায় ভুগবে।
৫। শিশুর সামনে কোনো অপরাধ করবেন না বা অপরাধের পক্ষ নেবেন না – এতে সে অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠতে পারে।
৬। শিশুর সামনে দাম্পত্য কলহ করবেন না – এতে তার ভবিষ্যৎ পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৭। শিশুর সামনে শিক্ষক বা পরিচিত কারো নিন্দা করবেন না – এতে তার শ্রদ্ধাবোধ নষ্ট হবে।

👉 মনে রাখবেন, শিশু আপনার কথায় নয়, আপনার আচরণে গড়ে ওঠে

4

কা'বা হল আজরের পুত্র ইব্রাহীম খলিলের বানানো, আর মানুষের হৃদয় হল মহান আল্লাহ্ অবস্থানের পথ

আমরা জানি, কা'বা শরীফ মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র স্থান, যার নির্মাণ নবী ইব্রাহীম (আঃ) এর হাতে সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু কেন একটি মানব হৃদয়কে সেই পবিত্র কা'বার থেকেও অধিক মূল্যবান বলা হচ্ছে? এর কারণটি নিহিত রয়েছে উভয়ের উৎপত্তির মহিমায় এবং উদ্দেশ্যের গভীরতায়।

কা'বা শরীফ, নিঃসন্দেহে, আল্লাহর এক বিশেষ নিদর্শন। এটি সেই কিবলা, যেদিকে মুখ করে সারা বিশ্বের মুসলমানগণ সালাত আদায় করেন। এর ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় তাৎপর্য অপরিসীম। নবী ইব্রাহীম (আঃ), যিনি আল্লাহর একনিষ্ঠ বন্ধু (খলিল) ছিলেন, তিনি স্বহস্তে এই ঘর নির্মাণ করেছিলেন আল্লাহর ইবাদতের জন্য। এটি আল্লাহর একত্ববাদের প্রতীক এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু।

কিন্তু যদি আমরা গভীরভাবে চিন্তা করি, তবে দেখব যে কা'বা একটি কাঠামো, যা পাথর ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে নির্মিত। এর একটি নির্দিষ্ট স্থান এবং আকার রয়েছে। এটি আল্লাহর ইবাদতের জন্য একটি পবিত্র স্থান হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে, যেখানে মানুষ একত্রিত হয়ে তাদের আনুগত্য প্রকাশ করে।

অন্যদিকে, মানুষের হৃদয় – এটি কোনো বস্তু নয়। এটি মহান আল্লাহ্ তায়ালার এক বিশেষ সৃষ্টি, যেখানে তিনি স্বয়ং অবস্থান করেন। হাদীসে ইরশাদ হয়েছে, "আমার আকাশ ও পৃথিবী কিছুই আমাকে ধারণ করতে পারে না, কিন্তু মুমিনের হৃদয় আমাকে ধারণ করতে পারে।" (আল-হাদীস আল-কুদসী)।

এই হাদীস থেকে আমরা বুঝতে পারি, মানুষের হৃদয় আল্লাহর এক বিশেষ আবাসস্থল। যখন কোনো মুমিনের হৃদয় ঈমান, ভালোবাসা, এবং আল্লাহর স্মরণে পরিপূর্ণ থাকে, তখন সেই হৃদয় আল্লাহর নূরে আলোকিত হয়। সেই হৃদয় যেন এক জীবন্ত কা'বা, যেখানে সর্বদা আল্লাহর জিকির ও মহিমা ধ্বনিত হয়।

নবী ইব্রাহীম (আঃ) কর্তৃক নির্মিত কা'বা যেমন আল্লাহর ইবাদতের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান, তেমনি প্রতিটি মুমিনের হৃদয় আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি ব্যক্তিগত ক্ষেত্র। বাহ্যিক কা'বার দিকে মুখ করে আমরা যেমন আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করি, তেমনি আমাদের ভেতরের হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করি।

একটি বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে, বাহ্যিক ইবাদতের গুরুত্ব কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না। কা'বা শরীফের সম্মান ও মর্যাদা আমাদের হৃদয়ে সর্বদা অক্ষুণ্ণ থাকবে। কিন্তু এর পাশাপাশি আমাদের অন্তরের দিকেও নজর দিতে হবে। যদি আমাদের হৃদয় কলুষিত থাকে, হিংসা-বিদ্বেষে পরিপূর্ণ থাকে, তাহলে শুধু বাহ্যিক ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা কঠিন।

আমরা আমাদের বাহ্যিক ইবাদতের পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ জগতকে সুন্দর ও পবিত্র করি। আমাদের হৃদয়কে আল্লাহর ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করি। কারণ যে হৃদয় আল্লাহর মহব্বতে পূর্ণ, সেই হৃদয় নিঃসন্দেহে হাজার হাজার কা'বার থেকেও উত্তম। এটি মহান আল্লাহর অবস্থানের পথ, যেখানে তিনি সর্বদা বিরাজমান।

আমাদের লক্ষ্য হোক এমন একটি হৃদয় গড়ে তোলা, যা সর্বদা আল্লাহর স্মরণে সজীব থাকে, যা অন্যের কষ্টে ব্যথিত হয় এবং অন্যের সুখে আনন্দিত হয়। এই প্রকার হৃদয়ই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় এবং এটাই হল আধ্যাত্মিকতার সর্বোচ্চ শিখর।

5
জীবিকা – চাঁদপুর: সুদমুক্ত অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা

ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন পরিচালিত জীবিকা – চাঁদপুর প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সদস্যরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

সুদের অভিশাপ থেকে মুক্তি

প্রকল্পের আওতায় সদস্যদের কর্জে হাসানাহ প্রদান করা হচ্ছে, যা সুদবিহীন অর্থ। এর মাধ্যমে তারা:

১। প্রয়োজনীয় মূলধন দিয়ে ব্যবসা বা উদ্যোক্তা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন
২। সুদের বোঝা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন
৩।আত্মসম্মান ও আর্থিক নিরাপত্তা অর্জন করছেন

টেকসই সুবিধা

🔹 ক্ষুদ্র ব্যবসা ও পশুপালন/কৃষিভিত্তিক উদ্যোগে বিনিয়োগ
🔹 পরিবারে আয়ের উৎস বৃদ্ধি
🔹 সমাজে দারিদ্র্য হ্রাস ও আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধি

জীবিকা – চাঁদপুর প্রমাণ করছে যে, সুদমুক্ত অর্থনৈতিক সহায়তা এবং সঠিক নির্দেশনার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ নিজের জীবনকে গড়ে তুলতে পারে এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে পারে।

6
জীবিকা – চাঁদপুর: কর্জে হাসানাহ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কার্যক্রম

অসহায় ও পিছিয়ে পড়া মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন পরিচালিত “জীবিকা – চাঁদপুর” একটি কার্যকর কর্মসূচি। জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি এবং স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে সদস্যদের আর্থিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

কর্জে হাসানাহ প্রদান

জীবিকা – চাঁদপুর প্রকল্পের আওতায় সদস্যদের কর্জে হাসানাহ প্রদান করা হচ্ছে। এটি একটি সুদবিহীন আর্থিক সহায়তা, যা সমাজের দুর্বল শ্রেণীর মানুষের জন্য একটি বড় সহায়ক শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মূলধন হস্তান্তরের পদ্ধতি

প্রকল্পের সদস্যদের জন্য সমান মালিকানা নিশ্চিত করতে:

১। প্রত্যেক সদস্যের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে
২। উপযুক্ত নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে
৩। ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে স্বচ্ছতার সাথে মূলধন হস্তান্তর করা হয়েছে

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কার্যক্রম

এই মূলধনের মাধ্যমে সদস্যরা ক্ষুদ্র ব্যবসা, পশুপালন, কৃষিভিত্তিক উদ্যোগ ও অন্যান্য আয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে করে:

১। সদস্যরা আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে
২। পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসছে
৩। সমাজে দারিদ্র্য হ্রাস ও টেকসই উন্নয়নের পথ সুগম হচ্ছে

জীবিকা – চাঁদপুর প্রকল্প প্রমাণ করছে যে, সঠিক দিকনির্দেশনা ও আর্থিক সহায়তা পেলে প্রত্যেক মানুষই নিজেকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে সক্ষম।

7
🌾 ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন – জীবিকা (চাঁদপুর)

সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য একটি সম্মানজনক জীবন গড়ে তোলাই ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন-এর অন্যতম লক্ষ্য। বিধবা, ইয়াতিম, বয়স্ক ও বিপদাপন্ন মানুষরা প্রায়ই জীবিকার অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করেন। তাদের জন্য টেকসই সমাধান তৈরি করতেই ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন পরিচালনা করছে “জীবিকা – চাঁদপুর” কর্মসূচি।

কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য

✅ বিধবা, ইয়াতিম, বয়স্ক ও অসহায় মানুষদের জীবিকা নির্বাহের সুযোগ সৃষ্টি করা
✅ দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করা
✅ দারিদ্র্য হ্রাস ও পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা

সাম্প্রতিক কার্যক্রম

📌 গাভী ও ছাগল পালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ
📌 গরু মোটাতাজাকরণ কৌশল নিয়ে দক্ষতা উন্নয়ন
📌 অংশগ্রহণকারীদের হাতে-কলমে শেখার সুযোগ প্রদান
📌 গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান রাখার পথ উন্মুক্ত করা

প্রত্যাশিত ফলাফল

🌟 প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পরিবারগুলো নিয়মিত আয় করতে সক্ষম হবে
🌟 স্থানীয় পর্যায়ে পশুপালন ও কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি শক্তিশালী হবে
🌟 অসহায় মানুষরা আত্মসম্মান ও স্বনির্ভর জীবনে অভ্যস্ত হবে

🌱 ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে—শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থানের সুযোগের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ স্বনির্ভর হতে পারে।
“জীবিকা – চাঁদপুর” প্রকল্প সেই স্বপ্নপূরণের একটি বাস্তব উদ্যোগ।

8
🌍 ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন – মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধে উদ্যোগ

দুর্যোগ মানুষের জীবনে অনিবার্য সত্য। প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট—যে কোনো ধরনের দুর্যোগ মুহূর্তের মধ্যে পারিবারিক স্থিতি নষ্ট করে দিতে পারে, মানুষের জীবনে এনে দিতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয়। বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রতিবন্ধী মানুষরা এসব পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে—সঠিক সচেতনতা, প্রস্তুতি এবং সহায়তার মাধ্যমে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই আমরা কাজ করছি:

আমাদের কার্যক্রম

🔹 দুর্যোগ প্রস্তুতি প্রশিক্ষণ – পরিবার ও ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি
🔹 প্রতিবন্ধী-বান্ধব কর্মসূচি – বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
🔹 মানবিক সহায়তা – দুর্গত মানুষকে খাদ্য, চিকিৎসা ও মানসিক সমর্থন প্রদান
🔹 সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি – স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করে দুর্যোগ মোকাবেলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা

আমাদের লক্ষ্য

✅ পরিবারকে স্বনির্ভর করে তোলা
✅ ব্যক্তি পর্যায়ে আত্মবিশ্বাস তৈরি করা
✅ দুর্যোগ-পরবর্তী মানবিক বিপর্যয় রোধ করা
✅ সমাজে একটি টেকসই ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা

🌱 ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে—মানবিক সহযোগিতা ও সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে একটি মানবিক, সহমর্মী ও নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।

9
Right / মনকে নিজের আয়ত্বে আনুন
« on: August 30, 2025, 12:37:49 AM »

মনকে নিজের আয়ত্বে আনুন

মনকে নিজের আয়ত্বে আনুন, এটাই হল আকবরী হজ; হাজার হাজার কা'বা থেকে একটি হৃদয় অতি উত্তম

একটি প্রবাদ যা আমাদের অন্তরের অন্তঃস্থলে আলোড়ন সৃষ্টি করে, আমাদের জীবনের লক্ষ্য ও তাৎপর্য সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শেখায়। সেই প্রবাদটি হলো – "মনকে নিজের আয়ত্বে আনুন, এটাই হল আকবরী হজ; হাজার হাজার কা'বা থেকে একটি হৃদয় অতি উত্তম।"

এই বাক্যটি আপাতদৃষ্টিতে সরল মনে হলেও, এর গভীরতা অসীম। হজ ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম, যা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য অবশ্য পালনীয়। কা'বা শরীফ মুসলিমদের পবিত্রতম স্থান, যেখানে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মানুষ আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় ছুটে যান। তাহলে কেন একটি হৃদয়কে হাজার হাজার কা'বার থেকেও উত্তম বলা হচ্ছে?

এর কারণ হলো, বাহ্যিক আচার-অনুষ্ঠানের চেয়ে অভ্যন্তরীণ পবিত্রতা এবং আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। হজ একটি শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত, যা আমাদের পাপ মোচনের এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি মাধ্যম। কিন্তু যদি আমাদের মন কলুষিত থাকে, হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার আর পার্থিব লোভ-লালসায় পরিপূর্ণ থাকে, তাহলে শুধু বাহ্যিক হজের মাধ্যমে প্রকৃত মুক্তি লাভ করা সম্ভব নয়।

অন্যদিকে, একটি বিশুদ্ধ হৃদয় আল্লাহর আরশস্বরূপ। যে হৃদয়ে ভালোবাসা, সহানুভূতি, ক্ষমা, এবং অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বিদ্যমান, সেই হৃদয় আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়। যখন আমরা আমাদের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, কুপ্রবৃত্তি দমন করতে পারি এবং সৎগুণাবলী অর্জন করতে পারি, তখন আমরা যেন আমাদের অন্তরেই এক পবিত্র কাবা নির্মাণ করি।

আকবরী হজ বলতে এখানে সেই আধ্যাত্মিক যাত্রাকে বোঝানো হচ্ছে, যেখানে একজন মানুষ তার ভেতরের কুপ্রবৃত্তি ও অন্ধকারকে পরাজিত করে আত্মশুদ্ধির পথে অগ্রসর হয়। এই যাত্রা কোনো নির্দিষ্ট স্থান বা কালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের সাধনা।

হাজার হাজার কা'বা প্রদক্ষিণ হয়তো বাহ্যিক দিক থেকে অনেক বড় ইবাদত মনে হতে পারে, কিন্তু একটি বিশুদ্ধ হৃদয় আল্লাহর প্রতি গভীর বিশ্বাস ও ভালোবাসার আবাসস্থল। যে হৃদয় অন্যের কষ্টে ব্যথিত হয়, অন্যের সুখে আনন্দিত হয়, এবং সর্বদা ন্যায় ও কল্যাণের পথে অবিচল থাকে – সেই হৃদয় নিঃসন্দেহে আল্লাহর কাছে অধিক মূল্যবান।

আমাদের মনে রাখতে হবে, আল্লাহ আমাদের বাহ্যিক রূপ বা সম্পদের দিকে তাকান না, বরং তিনি আমাদের অন্তরের পবিত্রতা ও ভালোবাসার গভীরতা দেখেন। তাই আসুন, আমরা আমাদের বাহ্যিক ইবাদতের পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ জগতকে পরিশুদ্ধ করার দিকে মনোযোগ দেই।

আমাদের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখি। লোভ, মোহ, অহংকার, ঘৃণা – এই সমস্ত নেতিবাচক আবেগ থেকে নিজেদের মুক্ত রাখি। ধৈর্য, সহনশীলতা, ক্ষমা, এবং ভালোবাসার মতো গুণাবলী নিজেদের মধ্যে লালন করি।

যখন আমরা আমাদের মনকে আয়ত্তে আনতে পারব, তখন আমাদের প্রতিটি কাজ ইবাদতে পরিণত হবে। আমাদের প্রতিটি নিঃশ্বাস আল্লাহর স্মরণে ভরে উঠবে। তখন আমাদের হৃদয়ই হবে আমাদের আকবরী হজ, এবং সেই পবিত্র হৃদয় নিঃসন্দেহে হাজার হাজার কা'বার চেয়েও উত্তম হবে।

আমাদের অন্তরকে পবিত্র করি, আমাদের মনকে নিয়ন্ত্রণ করি এবং একটি সুন্দর, সহানুভূতিশীল সমাজ গড়ে তুলি।


10
Survey / সেই কঠোর হাতের স্নেহ
« on: August 25, 2025, 11:21:16 PM »
সেই কঠোর হাতের স্নেহ

বারিধারা মাদ্রাসার সবুজ চত্বরে পা রাখতেই আমার স্মৃতিরা ভিড় করে আসে। নাহুমীর ক্লাসের সেই দিনগুলো, কঠিন সবক আর তীক্ষ্ণ দৃষ্টির এক শিক্ষকের মুখ – হোসাইন আহমেদ। নামটা মনে পড়তেই একটা চাপা অস্বস্তি যেন বুকের ভেতর মোচড় দেয়। তিনি ছিলেন রাশভারী, ক্লাসে ঢুকলেই পিনপতন নীরবতা নেমে আসত। আমাদের পড়াতেন সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া।

একদিন ক্লাসে এসেই হুকুম দিলেন, "সিরাত শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুখস্থ শুনাও।" বুক ধুকপুক করছিল, তবুও সাহস করে দাঁড়ালাম। গড়গড় করে অনেকটা অংশ শুনিয়ে গেলাম। কিন্তু এক কঠিন অধ্যায়ে এসে তালগোল পাকিয়ে গেল। একটি শব্দও আর মনে পড়ছে না।

সাথে সাথেই গর্জে উঠলেন হোসাইন আহমেদ, "বের হও ক্লাস থেকে!" মুহূর্তের মধ্যে যেন আকাশ ভেঙে পড়ল আমার মাথায়। শুধু বের করেই দিলেন না, দু'কানে হাত দিয়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকার শাস্তিও দিলেন। তীব্র রোদ্দুরে দাঁড়িয়ে কান দুটো টনটন করছিল, চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, এই বুঝি আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন শাস্তি।

অথচ আজ, সেই হোসাইন আহমেদ আর নেই। কিন্তু যতবার বারিধারা মাদ্রাসায় যাই, আমার পা যেন আপনাআপনি তার পুরোনো ঘরের দিকে চলে যায়। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ নীরবে থাকি। ভেতরে উনার স্মৃতিগুলো আজও জীবন্ত।

আশ্চর্য লাগে, এত শাসনের পরেও কেন আমি সেই শিক্ষককে এত ভালোবাসি? কেন প্রতিবার মাদ্রাসায় গিয়ে উনার সাথে দেখা করার জন্য মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে? কেন উনার জন্য আজও আমার অন্তর থেকে দোয়া বের হয়?

এর উত্তর আমি বহুবার খুঁজেছি। ধীরে ধীরে বুঝতে পেরেছি, সেই কঠিন হাতের আড়ালে লুকিয়ে ছিল এক স্নেহপূর্ণ হৃদয়। হোসাইন আহমেদ কখনো নিজের স্বার্থে আমাদের শাসন করতেন না। তার প্রতিটি ধমক, প্রতিটি শাস্তি ছিল আমাদের ভালোর জন্য। তিনি চাইতেন আমরা জ্ঞান অর্জন করি, সত্যের পথে অবিচল থাকি। সেই দিনের কান ধরে সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকার শাস্তি হয়তো আমার স্মৃতিতে গভীর দাগ কেটেছিল, কিন্তু একইসাথে বুঝিয়েছিল, শিক্ষকের শাসন কতটা কঠোর হতে পারে।

উনার সেই কঠিন নিয়মনিষ্ঠা, জ্ঞানের প্রতি গভীর অনুরাগ, ছাত্রদের ভবিষ্যতের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম – এই সবকিছুই ধীরে ধীরে আমার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিল। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, আপাতদৃষ্টিতে রাগী মনে হলেও, আমার সেই শিক্ষক আসলে ছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ। তিনি চেয়েছিলেন তাঁর ছাত্ররা যেন সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে।

তাই আজ যখন সেই পুরোনো ক্লাসরুমের সামনে দাঁড়াই, আমার চোখে পানি আসে। সেই কান্নার কারণ ভয় নয়, বরং গভীর ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার। হোসাইন আহমেদ হয়তো আর ইহলোকে নেই, কিন্তু তাঁর Ensenanzas, তাঁর কঠোর স্নেহ আমার জীবনে আজও এক অমূল্য সম্পদ। আমি বিশ্বাস করি, আমার মতো আরও অনেক ছাত্রের হৃদয়ে তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন – একজন কঠোর, কিন্তু পরম হিতাকাঙ্ক্ষী শিক্ষক হিসেবে।


11
ডিআইএসএস চাইল্ড হোমের শিশুদের শাসন: সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়, তবে ভুল ধারণার অবকাশ নেই

ডিআইএসএস চাইল্ড হোম – একটি আশ্রয়, একটি পরিবার বঞ্চিত শিশুদের জন্য। এখানে যারা পরিচর্যা করেন, তারা শুধু কর্মী নন, তারা যেন এই শিশুদের বাবা-মা, বন্ধু, পথপ্রদর্শক। স্বাভাবিকভাবেই, একটি পরিবারের মতো এখানেও নিয়মকানুন থাকে, আর সেই নিয়ম ভাঙলে শাসনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রায়শই, এই শাসনের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, সমালোচনা হয়। আজ আমি সেই বিষয়টির গভীরে যেতে চাই, কোনো সমালোচনা নয়, বরং একটি বাস্তবসম্মত দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করতে চাই।

আমাদের সমাজে একটি ভুল ধারণা প্রচলিত আছে যে, শিশুদের শাসন করা মানেই তাদের প্রতি অবিচার করা, তাদের মানসিক বিকাশে বাধা দেওয়া। বিশেষ করে যখন কোনো প্রতিষ্ঠানে শিশুদের শাসনের প্রসঙ্গ আসে, তখন অনেকেই নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। কিন্তু ডিআইএসএস চাইল্ড হোমের প্রেক্ষাপটটি একটু ভিন্নভাবে বোঝা দরকার।

প্রথমত, এখানে যারা শিশুদের লালন-পালন করেন, তারা কোনো ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকে তাদের শাসন করেন না। তাদের কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই এই শিশুদের উপর রাগ দেখানোর। তাদের একমাত্র লক্ষ্য হলো এই অসহায় শিশুদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা। একটি সুস্থ, সুশৃঙ্খল জীবন দেওয়ার জন্য কিছু নিয়মকানুন মেনে চলা অপরিহার্য। আর সেই নিয়ম ভাঙলে, তাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য শাসনের প্রয়োজন হয়।

দ্বিতীয়ত, এই শিশুরা অনেকেই কঠিন জীবন পার করে এখানে এসেছে। হয়তো তারা দেখেছে অবহেলা, বঞ্চনা, এমনকি সহিংসতাও। তাদের মধ্যে অনেকেরই হয়তো নিয়ম মানার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি। এমন পরিস্থিতিতে, ভালোবাসা এবং ধৈর্যের পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে শাসনের প্রয়োজন হতে পারে। তবে সেই শাসন যেন অবশ্যই হয় গঠনমূলক। এমন শাসন যা তাদের ভুল বুঝতে সাহায্য করে এবং ভবিষ্যতে সেই ভুল আর না করার শিক্ষা দেয়। শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন কখনোই কাম্য নয় এবং আমি বিশ্বাস করি ডিআইএসএস চাইল্ড হোমের কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন।

তৃতীয়ত, আমাদের মনে রাখতে হবে, শিশুরা শেখে তাদের চারপাশের পরিবেশ থেকে। যদি তারা দেখে যে কোনো ভুল কাজের জন্য কোনো রকম অনুশোচনা বা শাস্তির ভয় নেই, তাহলে তারা হয়তো সেই ভুল কাজ বারবার করতে উৎসাহিত হবে। একটি সঠিক শাসনের পদ্ধতি শিশুদের মধ্যে দায়িত্ববোধ এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের মতো গুণাবলী বিকাশে সাহায্য করে। তারা বুঝতে শেখে যে তাদের আচরণের একটি ফলাফল আছে।

কর্তৃপক্ষের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা এই বিষয়টিকে সংবেদনশীলতার সাথে বিবেচনা করুন। যখন কোনো অভিভাবক বা শুভানুধ্যায়ী শিশুদের শাসনের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তখন তাদের ভুল ধারণা ভাঙানো প্রয়োজন। তাদের বোঝানো প্রয়োজন যে, এখানে যারা শিশুদের লালন-পালন করেন, তারা তাদের সর্বোচ্চ ভালো চান। তাদের শাসন হয়তো কখনো কখনো কঠোর মনে হতে পারে, কিন্তু তার পেছনে রয়েছে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের সুরক্ষা এবং উন্নতি কামনার আন্তরিক প্রচেষ্টা।

তবে একইসাথে, কর্তৃপক্ষেরও একটি দায়িত্ব রয়েছে। শাসনের পদ্ধতি যেন সবসময় শিশুবান্ধব হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো প্রকার শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন যেন কোনোভাবেই প্রশ্রয় না পায়। প্রতিটি শিশুর মানসিক এবং আবেগিক চাহিদা বিবেচনা করে শাসনের পদ্ধতি নির্ধারণ করা উচিত। প্রয়োজনে প্রশিক্ষিত মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

পরিশেষে আমি এটাই বলতে চাই, ডিআইএসএস চাইল্ড হোমের শিশুদের শাসনকে একপেশেভাবে সমালোচনা করা উচিত নয়। বরং এর পেছনের উদ্দেশ্য এবং প্রেক্ষাপট বোঝার চেষ্টা করা উচিত। শিক্ষকের বা পরিচর্যাকারীর ব্যক্তিগত স্বার্থ এখানে মুখ্য নয়, মুখ্য হলো শিশুদের কল্যাণ। আসুন, আমরা সকলে মিলে এই শিশুদের একটি সুন্দর এবং সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য সহানুভূতিশীল হই এবং সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করি।


12
📖 দক্ষতা ও সক্ষমতা উন্নয়নে শিক্ষা উদ্যোগ

ডিআইএসএস বিশ্বাস করে—সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব শুধুমাত্র শিক্ষা, দক্ষতা ও নৈতিক মান উন্নয়নের মাধ্যমে।
এজন্য আমরা দুইটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছি:

1️⃣ বয়স্ক শিক্ষা কর্মসূচি

🔹 নিরক্ষর প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সহজ ও ব্যবহারিক শিক্ষা
🔹 দৈনন্দিন জীবনে প্রযোজ্য পঠন, লিখন ও গাণিতিক জ্ঞান প্রদান
🔹 আর্থিক ও সামাজিক জীবনে আত্মনির্ভরশীল হতে সহায়তা

2️⃣ শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা

🔹 শিশুদের মৌলিক শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধ শেখানো
🔹 খেলাধুলা, গল্প ও চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি
🔹 প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ ও ভিত্তি তৈরি

🎯 আমাদের মূল লক্ষ্য

✅ লক্ষিত জনগোষ্ঠীর নিরক্ষরতা দূরীকরণ
✅ ব্যক্তিগত ও সামাজিক সক্ষমতা বৃদ্ধি
✅ আগামী প্রজন্মকে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা

🌱 এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চাই—
একটি শিক্ষিত, দক্ষ ও নৈতিক সমাজ গড়ে তুলতে, যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।

13
অনুমতি ছাড়া কোনো জিনিস স্পর্শ না করার গুরুত্ব: কুরআন ও হাদিসের আলোকে ডিআইএসএস চাইল্ড হোমের শিশুদের জন্য নৈতিক শিক্ষা সেশন

সেশনের শিরোনাম: অন্যের জিনিসের প্রতি সম্মান: ইসলামে অনুমতির গুরুত্ব

সেশনের উদ্দেশ্য:

১। ডিআইএসএস চাইল্ড হোমের শিশুদের অনুমতি ছাড়া অন্যের জিনিস ধরা বা ব্যবহার না করার গুরুত্ব সম্পর্কে জানানো।
২। কুরআন ও হাদিসের স্পষ্ট দলিল ও ব্যাখ্যার মাধ্যমে এই নৈতিক শিক্ষার অপরিহার্যতা তুলে ধরা।
৩। শিশুদের মধ্যে অন্যের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করা এবং এর তাৎপর্য উপলব্ধি করানো।
৪। তাদের দৈনন্দিন জীবনে এই শিক্ষা বাস্তবায়নে উৎসাহিত করা এবং এর সুফল সম্পর্কে জানানো।

সময়: প্রায় ৪৫-৫০ মিনিট

উপকরণ:

১। কুরআনের আয়াত ও হাদিসের নির্বাচিত অংশ (স্পষ্ট আরবি উচ্চারণ ও বাংলা অর্থসহ পোস্টার বা স্লাইডে লিখে আনা)।
২। কিছু সাধারণ জিনিসপত্র (যেমন: কলম, বই, খেলনা) উদাহরণ হিসেবে ব্যবহারের জন্য।

সেশনের ধাপ:

১. ভূমিকা ও শুভেচ্ছা (৫ মিনিট):

১। কাউন্সিলর শিশুদের আন্তরিকভাবে সালাম (আসসালামু আলাইকুম) জানাবেন এবং তাদের প্রতি ভালোবাসা ও স্নেহের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবেন।
২। তাদের নাম ও সাধারণ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার মাধ্যমে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ ও হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করবেন।
৩। আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেবেন: "আজ আমরা কুরআন ও হাদিসের আলোকে শিখবো কেন আমাদের কারো অনুমতি ছাড়া কোনো জিনিস ধরা বা ব্যবহার করা উচিত না। ইসলাম এ বিষয়ে আমাদের কী শিক্ষা দেয় এবং কেন এটা আমাদের জীবনে মেনে চলা জরুরি।

"২. কুরআনের দলিল ও ব্যাখ্যা (১৫ মিনিট):

১। কাউন্সিলর কুরআনের সুস্পষ্ট দলিল তেলাওয়াত করবেন এবং শিশুদের উপযোগী সরল ভাষায় এর অর্থ ও ব্যাখ্যা পেশ করবেন:
২। সূরা আন-নিসা'র ২৯ নম্বর আয়াত:
৩। আরবি: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ إِلَّا أَنْ تَكُونَ تِجَارَةً عَنْ تَرَاضٍ مِنْكُمْ ۚ وَلَا تَقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا
৪। বাংলা অর্থ: "হে মুমিনগণ! তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না; তবে পারস্পরিক সম্মতিতে ব্যবসার মাধ্যমে যা অর্জিত হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু।

৫। "ব্যাখ্যা: কাউন্সিলর এই আয়াতের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে বোঝাবেন যে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করতে নিষেধ করেছেন। পারস্পরিক সম্মতিতে লেনদেন বৈধ হলেও কারো জিনিস তার অনুমতি ছাড়া নেওয়া বা ব্যবহার করা 'অন্যায় ভক্ষণ'-এর অন্তর্ভুক্ত। এর মাধ্যমে অন্যের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়, যা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

৬। সূরা আল-হুজরাতের ১২ নম্বর আয়াতের অংশ:
৭। আরবি: وَلَا تَجَسَّسُوا
৮। বাংলা অর্থ: "এবং তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না।

"ব্যাখ্যা: যদিও এই আয়াত মূলত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়ে, কাউন্সিলর এর অন্তর্নিহিত অর্থ শিশুদের কাছে তুলে ধরবেন। অন্যের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র তার অনুমতি ছাড়া ধরা বা দেখা এক ধরনের অনধিকার চর্চা এবং এটি গোপনীয়তার লঙ্ঘন। এটি অন্যের অপছন্দ হতে পারে এবং তাদের মনে কষ্ট দিতে পারে। ইসলাম অন্যের অনুভূতি ও অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর শিক্ষা দেয়।

৩.  হাদিসের দলিল ও ব্যাখ্যা (২০ মিনিট):

১। কাউন্সিলর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিছু সুস্পষ্ট হাদিস উল্লেখ করবেন এবং সহজ ভাষায় এর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করবেন:
২। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
৩। আরবি: لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ
৪। বাংলা অর্থ: "কোনো মুসলিমের সম্পদ তার আন্তরিক সন্তুষ্টি ছাড়া গ্রহণ করা হালাল নয়।" (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৪৫৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ২০৬৯৫)

৫। ব্যাখ্যা: এই হাদিসটি অত্যন্ত স্পষ্ট দলিল যে কোনো মুসলিমের জিনিস তার খুশি ও আন্তরিক অনুমতি ছাড়া নেওয়া বা ব্যবহার করা ইসলামে বৈধ নয়, বরং তা হারাম। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, অন্যের সামান্য জিনিসও তার অনুমতি ছাড়া স্পর্শ করা উচিত নয়।
৬। অন্য একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
৭। আরবি: كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ
৮। বাংলা অর্থ: "তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।" (সহীহ বুখারী, হাদিস নং ৭১৩৮; সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১৮২৯)

৯। ব্যাখ্যা: এই হাদিসের মাধ্যমে কাউন্সিলর বোঝাবেন যে আমাদের প্রতিটি কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। অন্যের জিনিসের প্রতি সম্মান দেখানো এবং অনুমতি ছাড়া তা স্পর্শ না করা আমাদের দায়িত্বের অংশ। এই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে আল্লাহর কাছে জিজ্ঞাসিত হতে হবে।
১০। একটি শিক্ষামূলক ঘটনা: কাউন্সিলর একটি ছোট ঘটনা উল্লেখ করতে পারেন, যেখানে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) অন্যের সামান্য জিনিসও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, কারো ছড়ি বা মেসওয়াকও অনুমতি ছাড়া ধরা উচিত নয়।

৪.  বাস্তব উদাহরণ ও আলোচনা (৫ মিনিট):

১। কাউন্সিলর শিশুদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু বাস্তব উদাহরণ দেবেন এবং তাদের মতামত জানতে চাইবেন:
২। "যদি তোমার কোনো বন্ধু একটি নতুন পেন্সিল নিয়ে আসে, তুমি কি তার অনুমতি ছাড়া সেটি ব্যবহার করতে পারো?" (শিশুদের 'না' বলার জন্য উৎসাহিত করুন)
৩। "হোমের অন্য কোনো ভাই বা বোনের ব্যক্তিগত জামাকাপড় বা খেলনা কি তোমরা না জিজ্ঞাসা করে ধরতে পারো?" (তাদের নীতিবাচক উত্তর প্রত্যাশা করুন)
৪। "যদি তোমরা কারো বই টেবিলে রাখা দেখো এবং সেটি পড়তে ইচ্ছে করে, তোমাদের প্রথম কাজ কী হওয়া উচিত?" (তাদের 'অনুমতি চাওয়া' উত্তর দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করুন)
৫। কাউন্সিলর তাদের জিজ্ঞাসা করবেন, যদি তাদের কোনো প্রিয় জিনিস অন্য কেউ অনুমতি ছাড়া নেয়, তাদের কেমন লাগবে। এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে অন্যের অনুভূতির প্রতি সহানুভূতি তৈরি হবে।
৬। কাউন্সিলর তাদের শেখাবেন যে সবসময় বিনয়ের সাথে অনুমতি চাওয়া উচিত এবং অনুমতি পাওয়ার পরেই কেবল সেই জিনিস ব্যবহার করা উচিত।

৫. সারসংক্ষেপ ও দোয়া (৫ মিনিট):

১। কাউন্সিলর আজকের আলোচনার মূল বিষয়গুলো সংক্ষেপে পুনরায় উল্লেখ করবেন:
২। কুরআন ও হাদিসের স্পষ্ট দলিল অনুযায়ী কারো অনুমতি ছাড়া কোনো জিনিস ধরা বা ব্যবহার করা ইসলামে জায়েজ নয়।
৩। অন্যের সম্পদের প্রতি সম্মান দেখানো এবং তাদের অধিকার রক্ষা করা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য।
৪। অনুমতি ছাড়া অন্যের জিনিস ব্যবহার করলে পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ হতে পারে।
৫। আমাদের উচিত সবসময় অন্যের কাছে অনুমতি চাওয়া এবং তাদের সম্মতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।
৬। কাউন্সিলর শিশুদের এই গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা তাদের জীবনে মেনে চলার জন্য উৎসাহিত করবেন এবং এর ফজিলত সম্পর্কে বলবেন।
৭। পরিশেষে, কাউন্সিলর এবং শিশুরা একসাথে আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন যেন তিনি তাদের এই বিষয়ে জ্ঞান দান করেন এবং তা মেনে চলার তাওফিক দান করেন।

কাউন্সিলরের জন্য কিছু টিপস:

১। শিশুদের সাথে আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন। তাদের বোঝার মতো সহজ ভাষায় কথা বলুন।
২। আলোচনাকে জীবন্ত ও আকর্ষণীয় করার জন্য ছোট ছোট গল্প বা শিক্ষামূলক উদাহরণ ব্যবহার করুন।
৩। শিশুদের প্রশ্ন করার এবং তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ দিন।
৪। যারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে তাদের প্রশংসা করুন এবং অন্যদের উৎসাহিত করুন।
৫। নিয়মিতভাবে এই ধরনের নৈতিক শিক্ষা সেশনের আয়োজন করুন এবং বিষয়গুলো পুনরাবৃত্তি করুন।

এই কাঠামোটি অনুসরণ করে আপনি ডিআইএসএস চাইল্ড হোমের শিশুদের জন্য কুরআন ও হাদিসের স্পষ্ট দলিলের মাধ্যমে অনুমতি ছাড়া কোনো জিনিস স্পর্শ না করার গুরুত্ব সম্পর্কে একটি কার্যকর নৈতিক শিক্ষা সেশন পরিচালনা করতে পারেন। আল্লাহ আপনাদের প্রচেষ্টাকে কবুল করুন।


14
🌱DISS: যেখান থেকে শিশুর নতুন জীবনের যাত্রা শুরু হয়... 🌱

অনেক শিশুর জন্য “শৈশব” মানেই অভাব, অনিশ্চয়তা আর অবহেলা। কেউ হয়তো বাবা-মাকে হারিয়েছে, কেউ বেড়ে উঠছে ক্ষুধা আর কষ্টের মধ্য দিয়ে।

কিন্তু এক জায়গা আছে, যেখানে এই সব ‘অসহায়’ শিশুরা পায় ভালোবাসা, শিক্ষা, আশ্রয় আর স্বপ্ন দেখার সুযোগ
সেই জায়গাটির নাম –Daffodil Institute of Social Sciences (DISS Child Home)।

🏡 DISS কী করে?

DISS কোনো সাধারণ প্রতিষ্ঠান নয়। এটি একটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পূর্ণাঙ্গ জীবন-সহায়ক ব্যবস্থা, যেখানে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা পায়—

🔹 নিরাপদ আবাসন ও খাবার
🔹 বিনামূল্যে শিক্ষা ও ইসলামিক আদর্শ শিক্ষা
🔹 জামা-কাপড়, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যসেবা
🔹 খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক বিকাশের সুযোগ
🔹 কম্পিউটার ও জীবনদক্ষতা প্রশিক্ষণ
🔹 মায়ের মতো কেয়ার ও বাবার মতো দায়িত্ব


প্রতিটি শিশু যেন নিজের সম্ভাবনাকে আবিষ্কার করতে পারে, সেটাই DISS-এর অঙ্গীকার

👦👧 DISS-এর ছায়ায় শিশুরা বদলে যাচ্ছে...

এখানে কেউ ‘এতিম’ নয়, কেউ ‘অসহায়’ নয়। এখানে সবাই নিজের মতো করে বাঁচে, শেখে, বেড়ে ওঠে।
DISS শিশুদের দেয়—ঘরের মতো নিরাপত্তা, পরিবারের মতো মমতা, আর সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচার সাহস

📢 আমরা চাই না কোনো শিশু ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাক। চাই না তারা অন্ধকারে হারিয়ে যাক। আমরা চাই, তারা বড় হোক স্বপ্ন নিয়ে, শক্তি নিয়ে, আলোর পথে।

💚 যদি আপনিও চান একটি শিশুর জীবন বদলাতে, জানতে চান DISS সম্পর্কে আরও, অথবা পাশে দাঁড়াতে চান— যোগাযোগ করুন, এগিয়ে আসুন।

DISS—যেখানে ভালোবাসা, আশ্রয় ও সম্ভাবনার এক অপূর্ব সম্মিলন

15
🛠️
ডিআইএসএস শিশুদের নিয়ে একটি অর্থবহ ও শিক্ষামূলক ওয়ার্কশপ

Daffodil Institute of Social Sciences (DISS) সবসময় চেষ্টা করে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শুধু পড়ালেখা নয়, ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস গঠনের একটি পূর্ণাঙ্গ প্ল্যাটফর্ম দিতে।

এই লক্ষ্যেই সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো একটি বিশেষ ওয়ার্কশপ — যেখানে শিশুরা শিখেছে নতুন কিছু, অনুভব করেছে আত্মসম্মান, এবং প্রকাশ করেছে নিজেদের প্রতিভা।

🎯 ওয়ার্কশপের মূল উদ্দেশ্য:

শিশুদের সামাজিক দক্ষতা বাড়ানো
সাংগঠনিক আচরণ, মূল্যবোধ ও দলে কাজ করার ক্ষমতা গড়ে তোলা
নিজের চিন্তা ও স্বপ্নগুলো প্রকাশ করার সুযোগ দেওয়া
সৃজনশীলতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির অনুপ্রেরণা দেওয়া

👦👧 ওয়ার্কশপে ছিল—

✅ Storytelling সেশন
✅ Art & Expression ক্লাস
✅ Basic Life Skills (কীভাবে নিজের খেয়াল রাখতে হয়)
✅ ‘আমার স্বপ্ন’ লিখন ও আলোচনা
✅ গ্রুপ গেম, নাট্যচর্চা ও নেতৃত্ব অনুশীলন

💬 শিশুদের অভিব্যক্তি:

“আমি আগে জানতাম না আমি এত ভালো গল্প বলতে পারি।”
“আমরা একসাথে কাজ করেছি, মজা করেছি, আবার শিখেছিও।”
“আমি এখন বুঝতে পেরেছি, আমি শুধু একজন সুবিধাবঞ্চিত না — আমি একজন মানুষ, যার স্বপ্ন আছে।”

🫂 কেন এমন ওয়ার্কশপ জরুরি?

DISS বিশ্বাস করে— প্রতিটি শিশু হচ্ছে একটি সম্ভাবনার আঁধার
এই ওয়ার্কশপ তাদের শেখায় কীভাবে তারা নিজের শক্তিকে চিনে নেয়, দলবদ্ধভাবে কাজ করে এবং সাহসের সাথে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যায়।

🤝 ভবিষ্যতের পরিকল্পনা:

DISS শিশুদের জন্য প্রতি মাসে বিষয়ভিত্তিক ওয়ার্কশপ আয়োজন করার উদ্যোগ নিচ্ছি—
যাতে করে তারা হয়ে উঠতে পারে আত্মনির্ভরশীল, নেতৃত্বদানে সক্ষম, এবং মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক।

🔔 সবাইকে ধন্যবাদ জানাই যারা এই ওয়ার্কশপে সময়, শ্রম ও ভালোবাসা দিয়ে পাশে ছিলেন।

📌 আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবক, প্রশিক্ষক, ও দাতা—আপনারাও যুক্ত হতে পারেন।
যোগাযোগ করুন:
📞 01811458870 / 01847140186 / 01847334947

📍 #DISSWorkshop #ChildrenDevelopment #HopeInAction #DaffodilFoundation #EmpowerChildren #SupportDISS


Pages: [1] 2 3 ... 21