Recent Posts

Pages: [1] 2 3 ... 10
1

খারাপ সময়ে যখন সব দরজা বন্ধ, তখনো খোলা আল্লাহর রহমতের দুয়ার

জীবনের পথ সবসময় মসৃণ থাকে না। ঝড়-ঝঞ্ঝা, দুঃখ-বেদনা, অভাব-অনটন আমাদের জীবনে নেমে আসতে পারে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে, যেন চারপাশ থেকে সব দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। আপনজন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, বন্ধু-বান্ধব দূরে সরে গেছে, সহায়তার সকল পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। হতাশা আর নিরাশার কালো মেঘ আমাদের আকাশ ছেয়ে ফেলে।

কিন্তু এই ঘোর অন্ধকারেও এক ক্ষীণ আলোর রেখা আমাদের অন্তরে আশা জাগাতে পারে। সেটি হলো মহান আল্লাহ তা'আলার দরজা। মানুষের দরজা হয়তো কোনো কারণে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, স্বার্থপরতা, ভয় বা অক্ষমতা তাদের সরিয়ে নিতে পারে। কিন্তু যিনি সর্বশক্তিমান, যিনি দয়াময়, যাঁর রহমতের কোনো সীমা নেই, সেই আল্লাহর দরজা কখনোই তাঁর বান্দাদের জন্য বন্ধ হয় না।

কোরআন মাজীদে আল্লাহ তা'আলা বলেন:

وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ ۖ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
   
"আর যখন আমার বান্দা আমার সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তখন বলো, নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী। আমি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দিই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।" (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

এই আয়াতে আল্লাহ তা'আলা স্পষ্ট ঘোষণা করছেন যে তিনি তাঁর বান্দাদের অতি নিকটে। যখন কোনো বান্দা আন্তরিকভাবে তাঁকে ডাকে, তখন তিনি সেই ডাকে সাড়া দেন। খারাপ সময়ে যখন আর কোনো আশ্রয় থাকে না, তখন আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করাই মুমিনের শান।

কেন আল্লাহর দরজা কখনো বন্ধ হয় না?

অসীম দয়া ও ক্ষমা: আল্লাহ তা'আলার দয়া ও ক্ষমা অসীম। তিনি তাঁর বান্দাদের ভুলত্রুটি ক্ষমা করতে সদা প্রস্তুত। খারাপ সময়ে অনুতপ্ত হয়ে তাঁর কাছে আশ্রয় নিলে তিনি কখনোই ফিরিয়ে দেন না।

সর্বশক্তিমান: তিনি সর্বশক্তিমান। মানুষের সাধ্য সীমিত হলেও আল্লাহর ক্ষমতার কোনো সীমা নেই। কঠিনতম পরিস্থিতিতেও তিনি সাহায্যের হাত বাড়াতে পারেন।

বান্দার প্রতি ভালোবাসা: আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভালোবাসেন। তিনি চান তাঁর বান্দারা কষ্টের সময় তাঁর কাছে সাহায্য চাক এবং তিনি তাদের সেই কষ্ট দূর করবেন।

হতাশ হওয়া নিষেধ: ইসলামে হতাশ হওয়া কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। খারাপ সময়েও আল্লাহর রহমতের উপর ভরসা রাখা মুমিনের কর্তব্য।

খারাপ সময়ে আমাদের করণীয়:

আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া: যখন সব দরজা বন্ধ মনে হয়, তখন একমাত্র আল্লাহর দিকেই আন্তরিকভাবে প্রত্যাবর্তন করুন।

দু'আ ও কান্নাকাটি: নিজের অসহায়তা আল্লাহর কাছে পেশ করুন, চোখের পানি ফেলে সাহায্য চান। আল্লাহ অবশ্যই শুনবেন।

ধৈর্য ধারণ: খারাপ সময়ে ধৈর্য ধারণ করা ঈমানের পরীক্ষা। বিশ্বাস রাখুন, কষ্টের পরেই শান্তি আসবে।

ক্ষমা চাওয়া: নিজের ভুলত্রুটির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। হয়তো আপনার কোনো ভুলের কারণেই এই বিপদ এসেছে।

আশা রাখা: কখনোই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হবেন না। মনে রাখবেন, রাতের পরেই দিন আসে।

পরিশেষে, আসুন আমরা এই বিশ্বাস রাখি যে খারাপ সময়ে যখন পৃথিবীর সকল দরজা আমাদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, তখনও মহান আল্লাহ তা'আলার রহমতের দরজা সবসময় খোলা থাকে। একমাত্র তাঁর কাছেই আমরা প্রকৃত আশ্রয় ও সাহায্য লাভ করতে পারি। তাই আসুন, সকল পরিস্থিতিতে আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করি এবং তাঁর অসীম দয়া ও ক্ষমার ছায়াতলে নিজেদের জীবনকে সমর্পণ করি।

আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে কঠিন সময়ে তাঁর উপর ভরসা রাখার এবং তাঁর সাহায্য লাভের তাওফিক দান করুন। আমীন।
2

ভয় পাওয়ার কিছু নেই - আশার আলোয় উদ্ভাসিত জীবন

জীবনের পথে চলতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন সময়ে অজানা আশঙ্কা, অনিশ্চয়তা আর ভয়ের সম্মুখীন হই। ভবিষ্যতের ভাবনা, প্রিয় হারানোর বেদনা, ব্যর্থতার ভয় - কত না দুশ্চিন্তা আমাদের মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে। মনে হয় যেন চারপাশ অন্ধকার, আর সামনে এগোনোর কোনো পথ নেই। কিন্তু এই অস্থির সময়ে একটি শান্ত ও দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের হৃদয়ে সাহস যোগাতে পারে - ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

এই বাক্যটি কেবল কয়েকটি শব্দের সমষ্টি নয়, বরং এটি একটি শক্তিশালী মন্ত্র, যা আমাদের মানসিক শক্তিকে জাগিয়ে তোলে এবং আশার আলো দেখায়। যখন ভয় আমাদের গ্রাস করতে চায়, তখন এই বিশ্বাস আমাদের মনে প্রশান্তি এনে দেয় যে, সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি।

ভয়ের উৎস ও তার মোকাবিলা:

আমাদের ভয়ের প্রধান উৎস হলো অজানা ভবিষ্যৎ এবং আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরের পরিস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা। আমরা সেইসব বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করি যা হয়তো কখনোই ঘটবে না। এই কাল্পনিক ভয় আমাদের বর্তমানের শান্তি কেড়ে নেয় এবং সামনে এগোনোর পথে বাধা সৃষ্টি করে।

ভয়ের মোকাবিলা করতে হলে প্রথমে এর উৎস চিহ্নিত করতে হবে। কোন বিষয়গুলো আমাদের মনে ভীতির সঞ্চার করে? একবার কারণ জানা গেলে, সেই ভয়কে যুক্তি দিয়ে মোকাবিলা করা সম্ভব। মনে রাখতে হবে, অনেক ভয়ই আমাদের মনের projection, বাস্তবের সাথে যার কোনো সম্পর্ক নেই।

ইসলামের আলোকে ভয়ের নিরাময়:

ইসলাম আমাদের ভয় মোকাবিলা করার জন্য শক্তিশালী দিকনির্দেশনা দেয়। একজন মুমিনের সবচেয়ে বড় আশ্রয় হলো আল্লাহ তা'আলার উপর অবিচল বিশ্বাস। কোরআন মাজীদে আল্লাহ তা'আলা বলেন:

أَلَا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللَّهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ

"জেনে রাখো, যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।" (সূরা ইউনুস, আয়াত: ৬২)

যারা আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখে এবং তাঁর পথে জীবন পরিচালনা করে, তাদের কোনো ভয় থাকার কারণ নেই। কারণ আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং তিনি তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদের রক্ষা করেন।

ভয় দূর করার উপায়:

আল্লাহর উপর ভরসা: সকল পরিস্থিতিতে আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। বিশ্বাস করুন, তিনি যা করেন বান্দার ভালোর জন্যই করেন।

ধৈর্য ধারণ: কঠিন সময়ে ধৈর্য ধরুন। মনে রাখবেন, কষ্টের পরেই শান্তি আসে।

দু'আ করা: আল্লাহর কাছে সাহায্য চান। নিজের ভয় ও দুর্বলতার কথা তাঁর কাছে বলুন।

ইতিবাচক চিন্তা: নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করুন।

বর্তমানকে গুরুত্ব দেওয়া: ভবিষ্যতের অজানা ভয় নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে বর্তমানে মনোযোগ দিন এবং নিজের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যান।

জ্ঞান অর্জন: জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে অনেক অজানা ভয়কে জয় করা যায়। পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকলে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

সাহসী পদক্ষেপ: ভয়কে জয় করতে হলে মাঝে মাঝে Comfort Zone থেকে বেরিয়ে এসে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হয়। ছোট ছোট ঝুঁকি নেওয়ার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।

প্রকৃতির সান্নিধ্য: প্রকৃতির কাছাকাছি সময় কাটানো মনকে শান্ত করে এবং ভয় কমাতে সাহায্য করে।

সৎসঙ্গ: ইতিবাচক ও সাহসী মানুষদের সাথে মেলামেশা করুন। তাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা লাভ করুন।

ভয় যখন স্বাভাবিক:

অবশ্য কিছু ভয় স্বাভাবিক এবং প্রয়োজনীয়। যেমন - বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করার ভয়, অন্যায় কাজের পরিণতির ভয়। এই ধরনের ভয় আমাদের সতর্ক করে এবং ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়। কিন্তু যখন অমূলক ভয় আমাদের জীবনকে স্থবির করে দেয়, তখনই তা মোকাবিলা করা জরুরি।

পরিশেষে:

আসুন, আমরা সকলে ভয়কে জয় করার জন্য নিজেদের মনকে প্রস্তুত করি। আল্লাহর উপর অবিচল বিশ্বাস রাখি এবং ইতিবাচক চিন্তাভাবনার মাধ্যমে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করি। মনে রাখবেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কারণ মহান আল্লাহ সবসময় আমাদের সাথে আছেন। তাঁর অসীম দয়া ও করুণা আমাদের সকল ভয়কে জয় করতে সাহায্য করবে।

আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে সাহসী ও প্রশান্ত হৃদয় দান করুন। আমীন।
3

বিশুদ্ধ নিয়তের গুরুত্ব: প্রকাশ্য ও গোপন জীবনের চালিকাশক্তি

আজ আমি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি, যা আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে আলোকিত করতে পারে, আমাদের আমলগুলোকে অর্থবহ করে তুলতে পারে এবং আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্যতা এনে দিতে পারে। আর সেটি হলো - প্রত্যেক কাজ, কথা এবং প্রকাশ্য-গোপনীয় অবস্থায় নিয়তকে বিশুদ্ধ করা।

নিয়ত আরবি শব্দ, যার অর্থ হলো সংকল্প, উদ্দেশ্য, অভিপ্রায় বা আকাঙ্ক্ষা। ইসলামে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের প্রতিটি কাজের বাহ্যিক রূপ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি সেই কাজের পেছনের উদ্দেশ্য বা নিয়তও আল্লাহর কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى

"নিশ্চয়ই সকল কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে।" (সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম)

এই একটি হাদীসই নিয়তের গুরুত্ব অনুধাবন করার জন্য যথেষ্ট। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি কথা এবং এমনকি আমাদের গোপন চিন্তাভাবনারও একটি নিয়ত থাকে। এই নিয়ত যদি বিশুদ্ধ হয়, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হয়, তাহলে সেই কাজ, কথা বা চিন্তাও ইবাদতে পরিণত হতে পারে এবং আল্লাহর কাছে পুরষ্কারের যোগ্য হতে পারে। পক্ষান্তরে, যদি নিয়তে ভেজাল থাকে, লোক দেখানো উদ্দেশ্য থাকে অথবা অন্য কোনো পার্থিব লাভের আকাঙ্ক্ষা থাকে, তাহলে সেই কাজের বাহ্যিক সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও তা আল্লাহর কাছে মূল্যহীন হয়ে যেতে পারে।

প্রকাশ্য জীবনে বিশুদ্ধ নিয়তের গুরুত্ব:

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা যা কিছু করি, যেমন - সালাত আদায় করা, যাকাত দেওয়া, রোজা রাখা, হজ পালন করা, দান-সাদাকা করা, জ্ঞান অর্জন করা, পরিবার ও সমাজের জন্য কাজ করা - এই সমস্ত কাজের নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া অপরিহার্য। যদি আমাদের সালাত লোক দেখানোর জন্য হয়, যাকাত সুনাম অর্জনের জন্য হয়, অথবা দান-সাদাকা পার্থিব কোনো স্বার্থের জন্য হয়, তাহলে সেই আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহ তা'আলা বলেন:

وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ ۚ وَذَٰلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ   

"তাদেরকে কেবল এই আদেশ করা হয়েছিল যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে এবং সালাত কায়েম করবে ও যাকাত দেবে। এটাই সঠিক দ্বীন।" (সূরা আল-বাইয়্যিনাহ, আয়াত: ৫)

অতএব, আমাদের প্রকাশ্য জীবনের প্রতিটি ইবাদত ও সৎকাজের নিয়ত হতে হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কোনো প্রকার খ্যাতি, প্রশংসা বা পার্থিব লাভের উদ্দেশ্য যেন আমাদের আমলকে কলুষিত না করে।

গোপন জীবনে বিশুদ্ধ নিয়তের গুরুত্ব:

আমাদের গোপন জীবনও আমাদের ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা যখন একান্তে থাকি, তখন আমাদের অন্তরে যে চিন্তাগুলো আসে, আমাদের যে গোপন আকাঙ্ক্ষা থাকে, সেগুলোরও একটি নিয়ত থাকে। যদি আমাদের গোপন নিয়ত আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ হয়, যেমন - কুচিন্তা করা, হারাম কাজের পরিকল্পনা করা, কারো ক্ষতি কামনা করা - তাহলে এর খারাপ প্রভাব আমাদের আত্মাকে কলুষিত করে।

অন্যদিকে, যদি আমাদের গোপন নিয়ত বিশুদ্ধ হয়, যেমন - একান্তে আল্লাহর যিকির করা, নিজের ভুলত্রুটির জন্য অনুতপ্ত হওয়া, অন্যের জন্য কল্যাণ কামনা করা - তাহলে এর মাধ্যমে আমাদের ঈমান মজবুত হয় এবং আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়।

কথা বলার ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ নিয়তের গুরুত্ব:

আমাদের প্রতিটি কথারও একটি নিয়ত থাকে। আমরা যখন কারো সাথে কথা বলি, তখন আমাদের উদ্দেশ্য কী? কি উদ্দেশ্যে আমরা সেই কথা বলছি? যদি আমাদের কথা বলার উদ্দেশ্য হয় কাউকে কষ্ট দেওয়া, কারো সম্মানহানি করা, মিথ্যা প্রচার করা অথবা অনর্থক আলোচনা করা, তাহলে সেই কথা আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়।

পক্ষান্তরে, যদি আমাদের কথা বলার উদ্দেশ্য হয় সত্য বলা, ভালো উপদেশ দেওয়া, মানুষের মাঝে মীমাংসা করা অথবা আল্লাহর যিকির করা, তাহলে সেই কথা সদকাহ হিসেবে গণ্য হতে পারে। আল্লাহ তা'আলা বলেন:

لَا خَيْرَ فِي كَثِيرٍ مِنْ نَجْوَاهُمْ إِلَّا مَنْ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوْ مَعْرُوفٍ أَوْ إِصْلَاحٍ بَيْنَ النَّاسِ ۚ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَٰلِكَ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا

"তাদের অধিকাংশ গোপন আলোচনায় কোনো কল্যাণ নেই; তবে কল্যাণের কথা হলো যে দান-খয়রাত, সৎকাজ অথবা মানুষের মধ্যে মীমাংসা করার নির্দেশ দেয়। আর যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তা করে, অচিরেই আমি তাকে মহা পুরস্কার দেব।" (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১৪)

অতএব, আমাদের প্রতিটি কথার নিয়ত হতে হবে কল্যাণকর এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে।

নিয়ত বিশুদ্ধ করার উপায়:

নিয়তকে বিশুদ্ধ করা একটি Continuous process। এর জন্য আমাদের সর্বদা সজাগ থাকতে হবে এবং নিজেদের অন্তরের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কিছু উপায় নিচে উল্লেখ করা হলো:

আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া: নিয়তকে বিশুদ্ধ করার জন্য আল্লাহর কাছে নিয়মিত দু'আ করা।

আত্মপর্যালোচনা করা: প্রতিটি কাজ ও কথার আগে নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করা।

ইখলাসের গুরুত্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা: কোরআন ও হাদীসে ইখলাসের ফজিলত এবং রিয়ার (লোক দেখানো) ভয়াবহতা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা।

সৎসঙ্গ অবলম্বন করা: এমন ব্যক্তিদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা যারা আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ এবং যাদের সংস্পর্শে নিজের নিয়ত বিশুদ্ধ রাখার প্রেরণা পাওয়া যায়।

অহংকার ও আত্মম্ভরিতা পরিহার করা: নিজের আমল ও জ্ঞানের উপর গর্ব করা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা।

গোপনে সৎকাজ করা: লোক দেখানোর প্রবণতা কমানোর জন্য মাঝে মাঝে গোপনে এমন কিছু সৎকাজ করা যা অন্য কেউ জানে না।

পরিশেষে, আসুন আমরা সকলে আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে - প্রকাশ্য ও গোপনে, কথা ও কাজে - নিয়তকে বিশুদ্ধ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করি। একমাত্র বিশুদ্ধ নিয়তই আমাদের আমলগুলোকে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে এবং আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনে শান্তি ও সফলতা এনে দিতে পারে।

আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে ইখলাসের সাথে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
4
16th Batch / Rupa Akter Daughter of Abdul Barek
« Last post by Rubel on April 27, 2025, 11:53:25 PM »
Master's, Islamic History & Culture, Rajsahi University. Permanent Address & Mobile:- Moymonsing, 1814614626
5
16th Batch / Titu Hossain Son of Mizanur Rahman
« Last post by Rubel on April 27, 2025, 11:51:16 PM »
Hon's 3rd year, BBA, DU. Permanent Address & Mobile:- Kustia, 1863465811
6
16th Batch / Saidul Islam Sahin Son of Abdur Kashem Swapon
« Last post by Rubel on April 27, 2025, 11:48:44 PM »
Hon's Admission test Pass, DU. Permanent Address & Mobile:- Chandpur, 1987507528
7
16th Batch / Shariar Nafiz Son of Humayon Kabir Mizi
« Last post by Rubel on April 27, 2025, 11:44:35 PM »
New ten, Science, Sologhor Adarsha High School. Permanent Address & Mobile:- Chandpur, 1831056315, 1838134792
8
16th Batch / Arafath Kamal Ador Son of Md Mostofa Kamal.
« Last post by Rubel on April 27, 2025, 11:42:01 PM »
Inter 1st year, Science, Govt Science College. Permanent Address & Mobile:-  Chandpur, 1620002036
9
16th Batch / Sima Akter Daughter of Sultana Begum
« Last post by Rubel on April 27, 2025, 11:39:46 PM »
Inter 2nd year, Science, Uttora Model Women's College. Permanent Address & Mobile:- Nilfhamary, 1708932814
10
16th Batch / Abrar Jahin Son Of Abul Bashar Palowan
« Last post by Rubel on April 27, 2025, 11:36:48 PM »
Diploma Computer 1st Semister, BSDI Chandpur, Permanent Address & Mobile:-  Chandpur, 01619030279
Pages: [1] 2 3 ... 10