« on: July 12, 2025, 03:54:59 AM »
সুদের অভিশাপ থেকে মুক্তির পথে: একটি নৈতিক ও অর্থনৈতিক জাগরণ
সুদ (riba) — এটি কেবল একটি আর্থিক লেনদেনের পদ্ধতি নয়, বরং সমাজে দারিদ্র্য, বৈষম্য, শোষণ এবং নৈতিক অবক্ষয়ের একটি প্রধান উৎস। ইসলাম ধর্মে সুদকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে এবং কুরআন-হাদীসে এটি একটি ভয়াবহ সামাজিক অভিশাপ হিসেবে চিহ্নিত। বর্তমান সময়েও সুদের বেড়াজালে পড়ে বহু মানুষ চরম দুর্দশায় পড়ছে—ব্যক্তিগত ঋণগ্রস্ততা, কৃষকের জমি হারানো, আত্মহত্যা কিংবা দারিদ্র্যের চক্রে আটকে পড়া তার বাস্তব উদাহরণ।
সুদের বাস্তব ক্ষতিকর প্রভাব
গরিব আরো গরিব হয়, ধনী আরো ধনী হয়—অর্থনৈতিক বৈষম্য বৃদ্ধি পায়।
পরিবারে মানসিক চাপ, দ্বন্দ্ব এবং অবনতির সূচনা হয়।
সমাজে মুনাফাখোর শ্রেণির উত্থান ঘটে, উৎপাদন ও পরিশ্রমের ন্যায্যতা লঙ্ঘিত হয়।
আত্মিক অশান্তি, আল্লাহর অসন্তুষ্টি এবং দোয়ার অগ্রাহ্যতার কারণ হয়।
কীভাবে সহায়তা করা হচ্ছে?
অনেক সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি আজ সুদের বিকল্প পথ—ইসলামি অর্থব্যবস্থা ও যাকাত-সদকা-কার্জে হাসানা (সুদবিহীন ঋণ)—চর্চার মাধ্যমে মানুষকে মুক্তির পথে সহযোগিতা করছে।
সুদবিহীন ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করা হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসা, কৃষি বা আত্মকর্মসংস্থানে।
ফান্ড গঠন করে ঘুর্ণায়মান অর্থভাণ্ডার (revolving fund) পরিচালনার মাধ্যমে বহু পরিবারকে দাননির্ভরতা থেকে মুক্ত করা হচ্ছে।
হালাল রুজির গুরুত্ব ও সুদের ক্ষতির বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও দাওয়াহ কাজ পরিচালিত হচ্ছে।
দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারগুলোকে যাকাত ও সদকার মাধ্যমে অর্থ, প্রশিক্ষণ ও পুঁজি সহায়তা দিয়ে স্বাবলম্বী করা হচ্ছে।
উপসংহার
সুদ শুধু একটি অর্থনৈতিক অবিচার নয়—এটি এক গভীর আত্মিক ক্ষয়। সুদের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ হলো হালাল উপার্জনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং একে অপরকে সহায়তার মাধ্যমে একটি ন্যায্য, শান্তিপূর্ণ সমাজ নির্মাণ করা। ইসলামী অর্থনৈতিক নীতির মাধ্যমে সেই মুক্তির পথ উন্মুক্ত করা সম্ভব—যেখানে মানবতা, ন্যায়বিচার ও আল্লাহর সন্তুষ্টি একসূত্রে মিলে যায়।

Logged
জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের (নারী ও পুরুষ) উপর ফরজ । জ্ঞানের শহর হলেন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) আর সেই শহরের দরজা হলেন হজরত আলী (রাঃ) । জ্ঞান ব্যতীত কর্ম অর্থহীন আবার কর্ম ব্যতীত জ্ঞান অর্থহীন। জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না, ইবাদত কর তবে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে করোনা ।