Author Topic: খারাপ সময়ে যখন সব দরজা বন্ধ, তখনো খোলা আল্ল&  (Read 4 times)

0 Members and 2 Guests are viewing this topic.

ashraful.diss

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 406
  • জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না
    • View Profile
    • Email

খারাপ সময়ে যখন সব দরজা বন্ধ, তখনো খোলা আল্লাহর রহমতের দুয়ার

জীবনের পথ সবসময় মসৃণ থাকে না। ঝড়-ঝঞ্ঝা, দুঃখ-বেদনা, অভাব-অনটন আমাদের জীবনে নেমে আসতে পারে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে, যেন চারপাশ থেকে সব দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। আপনজন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, বন্ধু-বান্ধব দূরে সরে গেছে, সহায়তার সকল পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। হতাশা আর নিরাশার কালো মেঘ আমাদের আকাশ ছেয়ে ফেলে।

কিন্তু এই ঘোর অন্ধকারেও এক ক্ষীণ আলোর রেখা আমাদের অন্তরে আশা জাগাতে পারে। সেটি হলো মহান আল্লাহ তা'আলার দরজা। মানুষের দরজা হয়তো কোনো কারণে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, স্বার্থপরতা, ভয় বা অক্ষমতা তাদের সরিয়ে নিতে পারে। কিন্তু যিনি সর্বশক্তিমান, যিনি দয়াময়, যাঁর রহমতের কোনো সীমা নেই, সেই আল্লাহর দরজা কখনোই তাঁর বান্দাদের জন্য বন্ধ হয় না।

কোরআন মাজীদে আল্লাহ তা'আলা বলেন:

وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ ۖ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
   
"আর যখন আমার বান্দা আমার সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তখন বলো, নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী। আমি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দিই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।" (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

এই আয়াতে আল্লাহ তা'আলা স্পষ্ট ঘোষণা করছেন যে তিনি তাঁর বান্দাদের অতি নিকটে। যখন কোনো বান্দা আন্তরিকভাবে তাঁকে ডাকে, তখন তিনি সেই ডাকে সাড়া দেন। খারাপ সময়ে যখন আর কোনো আশ্রয় থাকে না, তখন আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করাই মুমিনের শান।

কেন আল্লাহর দরজা কখনো বন্ধ হয় না?

অসীম দয়া ও ক্ষমা: আল্লাহ তা'আলার দয়া ও ক্ষমা অসীম। তিনি তাঁর বান্দাদের ভুলত্রুটি ক্ষমা করতে সদা প্রস্তুত। খারাপ সময়ে অনুতপ্ত হয়ে তাঁর কাছে আশ্রয় নিলে তিনি কখনোই ফিরিয়ে দেন না।

সর্বশক্তিমান: তিনি সর্বশক্তিমান। মানুষের সাধ্য সীমিত হলেও আল্লাহর ক্ষমতার কোনো সীমা নেই। কঠিনতম পরিস্থিতিতেও তিনি সাহায্যের হাত বাড়াতে পারেন।

বান্দার প্রতি ভালোবাসা: আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভালোবাসেন। তিনি চান তাঁর বান্দারা কষ্টের সময় তাঁর কাছে সাহায্য চাক এবং তিনি তাদের সেই কষ্ট দূর করবেন।

হতাশ হওয়া নিষেধ: ইসলামে হতাশ হওয়া কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। খারাপ সময়েও আল্লাহর রহমতের উপর ভরসা রাখা মুমিনের কর্তব্য।

খারাপ সময়ে আমাদের করণীয়:

আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া: যখন সব দরজা বন্ধ মনে হয়, তখন একমাত্র আল্লাহর দিকেই আন্তরিকভাবে প্রত্যাবর্তন করুন।

দু'আ ও কান্নাকাটি: নিজের অসহায়তা আল্লাহর কাছে পেশ করুন, চোখের পানি ফেলে সাহায্য চান। আল্লাহ অবশ্যই শুনবেন।

ধৈর্য ধারণ: খারাপ সময়ে ধৈর্য ধারণ করা ঈমানের পরীক্ষা। বিশ্বাস রাখুন, কষ্টের পরেই শান্তি আসবে।

ক্ষমা চাওয়া: নিজের ভুলত্রুটির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। হয়তো আপনার কোনো ভুলের কারণেই এই বিপদ এসেছে।

আশা রাখা: কখনোই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হবেন না। মনে রাখবেন, রাতের পরেই দিন আসে।

পরিশেষে, আসুন আমরা এই বিশ্বাস রাখি যে খারাপ সময়ে যখন পৃথিবীর সকল দরজা আমাদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, তখনও মহান আল্লাহ তা'আলার রহমতের দরজা সবসময় খোলা থাকে। একমাত্র তাঁর কাছেই আমরা প্রকৃত আশ্রয় ও সাহায্য লাভ করতে পারি। তাই আসুন, সকল পরিস্থিতিতে আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করি এবং তাঁর অসীম দয়া ও ক্ষমার ছায়াতলে নিজেদের জীবনকে সমর্পণ করি।

আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে কঠিন সময়ে তাঁর উপর ভরসা রাখার এবং তাঁর সাহায্য লাভের তাওফিক দান করুন। আমীন।
জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের (নারী ও পুরুষ) উপর ফরজ । জ্ঞানের শহর হলেন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) আর সেই শহরের দরজা হলেন হজরত আলী (রাঃ) । জ্ঞান ব্যতীত কর্ম অর্থহীন আবার কর্ম ব্যতীত জ্ঞান অর্থহীন। জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না, ইবাদত কর তবে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে করোনা ।