« on: September 21, 2022, 02:38:16 AM »
শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনে কর্তব্যবোধ ও ইখলাস থাকা গুরুত্বপূর্ণ
দায়িত্ব পালনের গুরুত্ব: আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করা উচিত যে, তিনি আমাদেরকে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের খিদমত করার সুযোগ দিয়েছেন। আমাদের নিজেদের দায়িত্বের প্রতি চিন্তা করা উচিত। গুরুত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করলে কাজের মাঝে বরকত আসে। একটা হচ্ছে চাকুরীর জন্য ডিউটি পালন, অপরটি হচ্ছে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা। এই দু’টির মাঝে পার্থক্য আছে। চাকুরীতে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট রুল মেনে কাজ করা হয়। কিন্তু যখন আপনি এটিকে দায়িত্ব হিসেবে নেবেন, তখন সেটা পালনের ক্ষেত্রে আপনার চেষ্ঠা থাকবে সর্বাত্মক।
নির্ধারিত সময়ের কাজ সময়ে না করলে বা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলে, পরে আর সেই কাজের কোন উদ্দেশ্য থাকে না। আর ‘দায়িত্ব’ সময় দেখে না। কাজের চিন্তা করতে থাকে। যাদের দায়িত্ব পালন করার অনুভূতি থাকে, তারা সর্বদা চেষ্ঠা চালিয়ে যেতে থাকে। তারা অযুহাত দেয় না। তারা সর্বদা তাদের অন্তরকে কাজের মাঝে লাগিয়ে রাখেন।
প্রতিষ্ঠানের কাজ দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে না হওয়ার গুরুত্ব: শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসমূহের (শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দ্বীনি জযবার অবনতি, প্রতিটি কাজে জাগতিক লাভের চিন্তা) অবস্থা দেখে এমন মনে হয় যে, এক যামানা আসবে যে, কোন মানুষকে সালাম দিলেও বলবে টাকা দাও তবে উত্তর দেব। অন্যথায় উত্তর দেব না। (উদ্দেশ্য এই যে, প্রত্যেক বিষয়ে বিনিময়ের প্রতি মানুষের মনোযোগ থাকবে। যা জ্ঞান ও ইলমের শান নয়। এই উদ্দেশ্যও হতে পারে যে, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে সালাম এবং পরস্পর মুহাব্বতের চর্চা হারিয়ে যাবে। তাই এই সমস্ত সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সুদূরপ্রসারী চিন্তা থাকা উচিত। বাকীটা মহান সৃষ্টিকর্তা ভালো জানেন)।
প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার গুরুত্ব: প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি কর্মীর উচিত, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে নিজের স্বার্থের উপর প্রাধান্য দেয়া। নিজের সত্ত্বাকে দেখবে না। নিজের সত্ত্বার কী ভরসা আছে? আজ আছে তো কাল নেই। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান তো একটি স্থায়ী প্রতিষ্ঠান, যা সর্বদা দায়েমী থাকবে। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ অনুযায়ী কাজ করবে তো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান উন্নতি হবে এবং প্রতিষ্ঠানের উত্তর উত্তর সাফলু আসবে। সুনাম হবে।
ইখলাসের গুরুত্ব: আমাদের সকলেরই প্রতিষ্ঠানের জন্যও কিছু কাজ করা উচিত। নিজের জন্য ও দুনিয়ার জন্যই সব কাজ না করা চাই। ইখলাস বিহীন কোনো কিছুই আসমানি দরবারে কবুলযোগ্য নয় বরং কখনো এমন আমল বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পার্থিব মোহ ও সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণের যাবতীয় লোভ থেকে মুক্ত হয়ে একমাত্র আল্লাহ পাকের জন্য সমর্পিত আত্মার সামান্য আমলও ইখলাসের কারণে অনেক বেশি মূল্যবান।
চারিদিকে সৌজন্যের ছড়াছড়ির এমন অস্থির সময়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টির প্রতি সাধারণ উদাসীনতা আমাদের সবার জন্য বড়ই বেমানান। “সারা জীবন তো অভিজ্ঞতা, ধোকা-বাজী ও চাপাবাজী করেই পেট পুষলাম। হায় আফসোস!” আল্লাহ আমাদের এসব কাজকর্ম থেকে হেফাজত করুন।
শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষাবর্ষের শুরুতে করণীয়: বছরের শুরুতেই সকলে একত্রে বসে হিসাব-নিকাশ করে নেবে যে, গত বছর আমাদের কী কী ভুল-ত্রুটি হয়েছে, যেগুলোর প্রতি আমরা লক্ষ্য রাখতে পারিনি। সে ভুলগুলোর প্রতি দৃষ্টি দিয়ে পরস্পরে আলোচনার মাধ্যমে সামনে নিয়ে আসা। এবং বছরের শুরুতেই সেগুলোকে পরিশূদ্ধ করার চেষ্টা করা। ইন্শাআল্লাহ্! প্রতিষ্ঠানের নেযাম ঠিক হয়ে যাবে।
Logged
জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের (নারী ও পুরুষ) উপর ফরজ । জ্ঞানের শহর হলেন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) আর সেই শহরের দরজা হলেন হজরত আলী (রাঃ) । জ্ঞান ব্যতীত কর্ম অর্থহীন আবার কর্ম ব্যতীত জ্ঞান অর্থহীন। জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না, ইবাদত কর তবে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে করোনা ।