Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Farhana Haque

Pages: 1 [2] 3 4
16
বাংলাদেশে করোনায় সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে পথশিশুরা৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বা মাস্ক ব্যবহারের সঙ্গতি তাদের নেই৷ খাদ্য ও কাজের সংকটেও আছে তারা৷

ঢাকায় পথশিশুদের মাত্র দুটি সরকারি শেল্টার হোম আছে৷ তাতে সব মিলিয়ে তিনশ' শিশু থাকতে পারে৷ আর বেসরকারি উদ্যোগে কিছু শেল্টার হোম আছে, যেখানে পথশিশুরা রাতে থাকতে পারে৷ কোনো খাবার দেয়া হয় না৷ এর বাইরে আহসানিয়া মিশনের উদ্যোগে পঞ্চগড়ে ‘আহসানিয়া মিশন শিশু নগরী' পথ শিশুদের জন্য সবচেয়ে বড় আশ্রয় কেন্দ্র৷ সেখানে ২৫০ জন শিশু থাকে৷ তাদের খাবার, শিক্ষা, চিকিৎসা সব কিছুই দেয়া হয় বলে জানায় আহসানিয়া মিশন৷ এটি জার্মানির কিন্ডারনটহিল্ফে'র সহায়তায় পরিচালিত হয়৷

কিন্তু সব মিলিয়ে কয়েকশ' শিশুর জন্য কয়েকটি শেল্টার হোম থাকলেও বাংলাদেশে পথশিশু আছে ১৩ লাখ৷ ঢাকায়ই আছে সাড়ে চার লাখ৷ এই শিশুরা করোনার মধ্যেও পথেই থাকছে৷ দলবদ্ধভাবে থাকছে৷ খোলা রাস্তা, বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন বা খোলা জায়গায় ঘুমাচ্ছে৷ কেউ করোনায় আক্রান্ত হলেও বুঝতে পারছে না৷ চিকিৎসা তো অনেক পরের কথা৷

স্ট্রিট চিলড্রেন অ্যাক্টিভিস্টস নেটওয়ার্ক (স্ক্যান)  করোনার শুরুর দিকে ৪৫২ জন পথশিশুর মধ্যে একটি জরিপ করে৷ ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বেছে নেয়া এই শিশুদের জরিপ থেকে জানা যায়, তাদের কেউই মাস্ক ব্যবহার করে না৷ তারা মনে করে, করোনা ধনীদের রোগ, এটা গরিবদের হয় না৷ করোনা সম্পর্কে অসচেতন এই শিশুরা নিয়মিত খাবারও পায় না৷ অনেকে খাবার বিতরণ করলেও পথ শিশুরা তা সবসময় পায় না৷ তাদের কাজ নেই৷ তাদের কেউ কোভিড আক্রান্ত কিনা তা-ও তারা বুঝতে পারে না৷ তারা মনে করে, সর্দি হয়েছে৷
বাংলাদেশে পথশিশুদের জন্য আলাদা কোনো চিকিৎসার উদ্যোগও নেই৷ তাদের পক্ষে সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নেয়াও ভীষণ কঠিন৷ অন্যদিকে সরকারি বা বেসরকারি কোনো পর্যায়েই পথ শিশুদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য রাখা হয়নি৷ নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোনো পথ শিশু মারা গেছে এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই৷

আহসানিয়া মিশনের সহকারী পরিচালক ও স্ট্রিট চিলড্রেন অ্যাক্টিভিস্টস নেটওয়ার্ক-এর সভাপতি জাহাঙ্গীর নাকির বলেন, ‘‘আমরা সরকারের কাছে করোনার সময় এই পথশিশুদের খাদ্য, চিকিৎসা এবং আশ্রয়ের একটি প্রস্তাব দিয়েছিলাম৷ আমরা বলেছিলাম, সরকার চাইলে আমরা এটা সমন্বয় করতে পারি৷ সরকার খাদ্য দিক৷ আমরা যে শিশুদের পরিবার আছে তাদের পরিবারে ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগের কথাও বলেছিলাম৷ কিন্তু সরকারের এ নিয়ে কোনো প্রজেক্ট না থাকায় সেটা করা যায়নি৷’’

তিনি বলেন, ‘‘এখন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এই করোনায় পথ শিশুদের, কাজ নেই, খাবার নেই, থাকার জায়গা নেই৷ তারা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে৷’’

নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পথ শিশুদের নিয়ে আলাদা একটি প্রকল্প আছে৷ প্রকল্প পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, ‘‘করোনায় সমস্যা হয়েছে, আমরা আমাদের শেল্টার হোমে বাইরের শিশুদের নিতে পারিনি৷ আর ভেতরের শিশুদের বাইরে যেতে দিতে পারিনি৷ তবে এখন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বাইরের শিশুদের নেয়া শুরু হয়েছে৷ শেল্টারে থাকা শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও আছে৷’’

তবে এই সময়ে আরো অনেক শিশু রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে৷ যাদের বাবা-মায়ের এখন কাজ নেই, তারা ঘর থেকে খাবারের জন্য বের হচ্ছে৷ আবার যে শিশুরা আগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করত তাদেরও কাজ নেই৷ তারাও এখন পথশিশু৷ আবুল হোসেন দাবি করেন, সরকার চেষ্টা করছে, অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে যাতে কোনো শিশুই নজরের বাইরে না থাকে৷ করোনায় সময় এসব শিশুর অন্তত এক বেলা খাবার দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও দাবি তার৷

তিনি মনে করেন, ‘‘১০ লাখেরও বেশি পথশিশুর কথা বলা হলেও এখন তাদের সংখ্যা কমছে৷ আর স্কুল খুলে গেলে আরো কমে যাবে৷ কারণ, স্কুলে এখন খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়৷’’

এদিকে করোনায় পথশিশুদের এই খারাপ অবস্থা নিয়ে এই পর্যায়ে ভাবতে শুরু করেছে সরকার৷ নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় পথশিশুদের নিয়ে কাজ করে এরকম সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এই মাসেই একটি বৈঠক করেছে৷
https://www.dw.com/…/%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B…/a-54730381

17
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর ভূমিকা।

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এমডিজি বাস্তবায়ন হয়েছে ২০০০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। এ সময়ে এসডিজির লক্ষ্য ছিল স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ক্ষুধা-দারিদ্র্যের হার অর্ধেক কমিয়ে আনা। বাংলাদেশে দারিদ্র্যদূরীকরণ এবং সামাজিক অগ্রগতি সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে বিস্ময়কর বলে প্রতীয়মান হয়েছে। আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক সফলতা উন্নয়নশীল দেশের মানুষ গভীর আগ্রহ নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে। পর্যবেক্ষকরা অনেকেই অবিশ্বাস্য এ উন্নয়নকে মানতে পারছেন না। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিশেষ করে প্রবৃদ্ধির উচ্চহারের বড় তিনটি কারণ রয়েছে। এক. চার দশক ধরে আমাদের পোশাক শিল্পে লাগাতার সফলতা। পোশাক শিল্পে যুক্ত রয়েছেন ৫০ থেকে লাখ ৬০ লাখ নারী এবং পুরুষ শ্রমিক। দুই. প্রবাসে প্রায় এক কোটি শ্রমিক, যারা কষ্ট করে টাকা-পয়সা রোজগার করে দেশে পাঠান। তিন. কৃষিতে উল্লেখযোগ্য হারে উৎপাদন বৃদ্ধি। প্রায় চার কোটি মানুষ উন্নয়নে অবদান রাখছেন। বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়েছেন। এমডিজি বাস্তবায়নে পোশাক শিল্প, কৃষি এবং প্রবাসী আয় অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অথচ এ তিন খাতকে আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব ও মর্যাদা নিয়ে দেখি না। পোশাক শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকরা স্বল্প বেতনে কঠিন পরিশ্রম করেন। তাদের কর্মক্ষেত্রে আগের চেয়ে নিরাপত্তা বেড়েছে। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও তুলনা মূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পোশাক শ্রমিকদের দিকে তাকালে বোঝা যায়, তারা কতটা ভালো আছেন। তাদের থাকার জায়গা অত্যন্ত নিম্নমানের। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকার কারণে অতি দ্রুত কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। অধিকাংশ পোশাক শ্রমিক সন্তান লালন-পালনে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখতে পারেন না। সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব পালন করেন মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ি। তাদের অনেকেই আবার প্রবীণ। কৃষিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালনকারীদের মধ্যে আমাদের প্রবীণ জনগোষ্ঠী রয়েছে। কৃষিতে অবসর গ্রহণের নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। ফলে একজন মানুষ যতক্ষণ শারীরিকভাবে চলাফেরা করতে সক্ষম, ততক্ষণ তিনি কৃষিতে কাজ করেন। প্রবাসী শ্রমিকদের দেশে স্ত্রী, সন্তান, মা-বাবা থাকেন। অনেকের মা-বাবা প্রবীণ। এ প্রবীণ মা-বাবা সংসারে সন্তান পালনে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করেন। মোট কথা, প্রবীণ জনগোষ্ঠী পোশাক শিল্প, কৃষি এবং প্রবাসী আয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা পালন করছেন। দুর্ভাগ্য এ প্রবীণ জনগোষ্ঠী আমাদের চিন্তক, নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি সীমার বাইরে। বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা এসডিজির যুগে প্রবেশ করেছে। এসডিজির সময়কাল ধরা হয়েছে ২০১৬ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। ১৭টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব লক্ষ্য অর্জনে নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বিশাল এ কর্মযজ্ঞে দেশের প্রবীণ জনগোষ্ঠীকে কীভাবে সম্পৃক্ত করা হয়েছে, সে বিষয়ে আমার পরিষ্কার কোনো ধারণা নেই। এসডিজি অর্জন করা একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এক নম্বর লক্ষ্য হলো, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা। দুই নম্বর লক্ষ্যÑ ক্ষুধা অবসান, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন, পুষ্টি উন্নয়ন, টেকসই কৃষি উন্নয়ন। তিন নম্বর লক্ষ্য হলো, সব বয়সি মানুষের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করা। চার নম্বর লক্ষ্যÑ শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা। সাধারণ পাঠকমাত্রই বুঝতে পারবেন ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রথম চারটি লক্ষ্য বাস্তবায়ন কতটা দুরূহ কাজ। ক্ষুধা-দারিদ্র্য কমিয়ে আনা যায় ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়ে; কিন্তু এটি নির্মূল করার বিষয়টি হবে কঠিন। ক্ষুধা-দারিদ্র্য নির্মূল এটি দৃশ্যমান হতে হবে। কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব কিন্তু বিষমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার উৎপাদন কঠিন চ্যালেঞ্জ। কৃষির টেকসই উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

স্বাস্থ্য খাত বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জনসাধারণের সুস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করতে বড় বড় অনেক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে। শিক্ষার বিস্তার ঘটানো সম্ভব। বাংলাদেশে শিক্ষার বিস্তার ঘটেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা খুবই দুরূহ একটি বিষয়। শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে অবকাঠামোর উন্নয়ন, ভালো শিক্ষক, যুগোপযোগী সিলেবাস, উন্নতমানের পরীক্ষাগার, পর্যাপ্ত বাজেট, জ্ঞান সৃষ্টি এবং বিতরণের মুক্ত পরিবেশসহ আরও অনেক বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এসডিজির ১৭টি লক্ষ্য অর্জনে সংশ্লিষ্ট সব মহলকে সম্পৃক্ত করা খুবই জরুরি বিষয়। এসডিজির ১৬ নম্বর লক্ষ্য হলো, নিশ্চিত করবে সর্বস্তরে সংবেদনশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিনিধিত্বশীল সিদ্ধান্ত গ্রহণ। নির্যাতন, মানবপাচার শিশু নির্যাতন, সহিংসতা বন্ধ করার ঘোষণা দেয়া আছে। আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এসডিজির সব লক্ষ্যের বাস্তবায়নে ১৬ নম্বর লক্ষ্যটি বিশেষ মনোযোগ পাবে।

এসডিজি অর্জন করতে হলে জনসাধারণের প্রয়োজন ও আকাক্সক্ষার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। একই সঙ্গে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশে এসডিজি অর্জন করতে দেশের প্রায় দেড় কোটি প্রবীণের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। প্রায় দেড় কোটি প্রবীণের যোগ্যতা, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার জন্য সক্ষম প্রবীণকে কাজে লাগাতে হবে। সক্ষম প্রবীণকে আয় বৃদ্ধিমূলক কাজে যুক্ত করতে হবে। সহজ শর্তে স্বল্পসুদে ঋণ গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। যেসব প্রবীণ কৃষিকাজে যুক্ত তাদের উৎপাদনের উপকরণগুলোকে সহজলভ্য করা। উৎপাদিত পণ্যের উচিত মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। এসব কাজে প্রবীণের অংশগ্রহণ, মতামত, পরামর্শ, সিদ্ধান্তকে গুরুত্বসহ বিবেচনা করতে হবে। কৃষি খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য প্রবীণদের অভিজ্ঞতা-মতামতকে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা এবং সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে গিয়ে প্রবীণদের বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ প্রবীণরা অসংক্রামক কয়েকটি ব্যাধিতে ভুগতে থাকেন। অধিকাংশ প্রবীণ উচ্চরক্তচাপ ডায়াবেটিস, বাত রোড, হৃদরোগ, কিডনি রোড, ক্যান্সার, হাঁপানি, অ্যালার্জি, হাঁটু-কোমর ব্যথায় ভুগতে থাকেন। আর্থিক সংকটের কারণে প্রবীণদের একটি বড় অংশ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হন। কেউ কেউ সঠিক চিকিৎসা সময়মতো পান না। প্রবীণদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিতে হবে। প্রবীণ কেন্দ্র, ডেকেয়ার সেন্টার, নার্সিং হোম, প্রবীণ ক্লাব গঠন করার মধ্য দিয়ে প্রবীণদের সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে। প্রবীণরা দলবদ্ধভাবে মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করার কাজে অংশ নিতে পারেন। মাদক গ্রহণের কুফল, ব্যায়াম করার সুফল, খেলাধুলার উপকারিতা, পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা যায়। রোগ নিরাময় থেকে রোগপ্রতিরোধের চেষ্টা করা অধিক লাভজনক। প্রবীণদের এসব বিষয়ে ধারণা দিতে হবে। প্রবীণদের তুলনামূলকভাবে আয়-রোজগার কম হলে ব্যয়বহুল চিকিৎসাসেবা গ্রহণ কষ্টদায়ক। প্রবীণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বীমা চালু করা দরকার। যারা নবীন, তারাও স্বাস্থ্য বীমাতে প্রিমিয়াম দেবেন, যখন প্রবীণ হবেন তখন চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। সমাজের সব মানুষকে স্বাস্থ্যসেবার প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। প্রত্যেক মানুষকেই ‘সেবাকর্মীর’ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। যাতে করে তিনি পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় সেবা দিতে সক্ষম হন। পরিবারের সদস্যরা অন্যদের প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা দিতে পারেন, প্রবীণ নিবাস, প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র, প্রবীণ ক্লাবে, প্রবীণ ডে-কেয়ার সেন্টার ইত্যাদিতে পয়সার বিনিময়ে অথবা বিনা পয়সায় প্রবীণ সেবা দেয়া যায়, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় প্রবীণরাই প্রবীণদের সেবা-যতœ, খোঁজখবর বেশি করেন। প্রবীণদের সংগঠিত অবস্থায় প্রবীণদের প্রতি মনোযোগী হতে অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে। দেশে শিক্ষার বিস্তার মোটামুটি হয়েছে বলে আমার ধারণা। শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রবীণদের অনেক বড় ধরনের সুযোগ রয়েছে। নতুন জ্ঞান সৃষ্টি এবং জ্ঞান বিতরণের সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। মানুষে মানুষে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি বিশৃঙ্খলা থেকে মুক্ত করতে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারবে। শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে উন্নত মূল্যবোধের মানুষ তৈরি করা, যারা প্রাণ এবং প্রকৃতি রক্ষায় কাক্সিক্ষত ভূমিকা পালন করতে পারবেন। সমাজে ভিন্ন মত-পথের মানুষের স্বাধীনভাবে নিজেদের মতপ্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। প্রকৃতিকে ধ্বংস না করে কীভাবে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারে সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

সুশিক্ষাই মানুষকে সহনশীল মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করে। সুশাসন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজে বৈষম্য দূর হবে এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। লুটপাট, কাড়াকাড়ি, ক্ষমতার মোহ, নিয়ন্ত্রণকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া অব্যাহত থাকলে সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে, একে অপরকে নির্মূল করার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকবে। শিক্ষার মাধ্যমে পৃথিবীকে বাসযোগ্য, শান্তিময় করে গড়ে তুলতে প্রবীণদের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে, প্রাকৃতিক ও সামাজিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রবীণের অভিজ্ঞতা-দক্ষতা কাজে লাগাতে হবে। এসডিজির লক্ষ্য, সব মানুষের উন্নয়ন। কোনো মানুষই যেন উন্নত-আরামদায়ক জীবন থেকে বঞ্চিত না হন। স্বল্প খরচে উন্নতমানের দুর্নীতিমুক্ত সেবা মানুষের হাতের মুঠোয় থাকবে। এসডিজি অর্জনে অনেক বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সেগুলো হলোÑ রাজনৈতিক অস্থিরতা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দুর্বলতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সহিংসতা, আয়বৈষম্য বৃদ্ধি, যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল, দুর্বৃত্তায়ন, দুর্বল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ইত্যাদি। এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে প্রবীণ জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করলে সুফল পাওয়া যাবে।

লেখক :হাসান আলী ,সভাপতি, এজিং সাপোর্ট ফোরাম
ট্রেজারার, বাংলাদেশ জেরোন্টলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএ)

18
একজন ইশা মিয়ার ঋণমুক্তির গল্প


গত ০৪.০৩.২০২০ইং তারিখে #ড্যাফোডিল_ফাউন্ডেশন এর সহযোগীতায় রিক্সাওয়ালা দ্বীন মোহাম্মদ ইশা'র নেওয়া সকল ঋণ পরিশোধ করা হলো।

গত কয়েকদিন পূর্বে রিক্সা ওয়ালা দ্বীন মোহাম্মদ ইশা'র সাথে পরিচয় হয় আমাদেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র সাজ্জাদের সাথে। কথা প্রসঙ্গে জানা গেলো দৈনিক ২০০ টাকা হারে সুদ দেওয়ার শর্তে রিক্সা ওয়ালা দ্বীন মোহাম্মদ ইশা'র ২০ হাজার টাকা ধার নেবার গল্প ও তার দূর্দশার কথা। ২০১৬ সালে মাহফূজা বেগম (ছদ্মনাম) এর কাছ থেকে উনি ২০ হাজার টাকা ধার করেন ,নিতান্ত নিরুপায় হয়ে। তিনি দৈনিক ২০০ টাকা হারে সুদ দিয়ে আসছিলেন রিক্সা চালিয়ে, কিন্তু মাঝে কিছু দিন অসুস্থ থাকার তিনি রিক্সা চালাতে পারেন নাই যার ফলশ্রুতিতে ঋণের পরিমান বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ হাজার টাকায় এবং হিসাব করে দেখা যায় ২০ হাজার টাকার বিপরীতে লাভই দেওয়া হয়েছে গত ৪২ মাসে প্রায় ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকার উপরে।

বিষয়টি অবগত হবার সাথে সাথেই ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন উদ্যোগ নেয় লোকটিকে সাহায্য করার।  ঘটনার সত্যতা জানতে প্রথমে রায়ের বাজার বস্তি এলাকায় ভিক্টিম ইশা মিয়ার বাড়িতে যাওয়া হয়, তাকে অবগত না করেই। এলাকার লোকজনদের থেকে জানা যায়, ঘটনা সত্যি সহ ইশা মিয়ার করুন দিনাতিপাতের কথা। সম্পূর্ন ঋণ পরিশোধের পর আমরা দ্বীন মোহাম্মদ ইশা'র ছোট মেয়েকে #জ্ঞানের_পাঠশালা'র শিশু শ্রেণীতে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

আল্লাহর অশেষ রহমতে ইশা মিয়া এখন পুরোপুরি সুদ ও ঋণ মুক্ত। এবার হয়তো ঘুরে দাড়াবেন ইশা ও তার পরিবার। আমরা আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় করতে পেরেছি সামান্য এই মহৎ কাজটুকু। একটি পরিবার অন্তত বেঁচে গেছে ঋণ কঠোর ফাঁদ থেকে।

মানুষ মানুষের জন্য। জীবন জীবনের জন্য। ইশা মিয়ার এই ঘটনাটি শুধু ঋণমুক্তির ঘটনা নয়, বরং এটি সচেতনহবার মত একটি ঘটনাও। না পারা শর্তে কেউ এমন সুদের ফাঁদে যেন না পরে। এই শহরেই এমন অনেক মাহফুজা বেগম (ছদ্ম নাম) রয়েছেন, যারা সাম্ন্য কিছু টাকা ধার দেওয়ার শর্তে শত শত মানুষ কে ফাঁদে ফেলছে। হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। গরীব দিনমজুর কিংবা রিক্সাচলকদের কাছ থেকে দৈনিক চড়া সুদ গ্রহন করে ঢাকা শহরে গড়ে তুলছে অট্টালিকা । অন্যদিকে ভিক্টিম সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে সম্পূর্ণ ঋণের সহ সুদের বোঝা টানতে টানতে।

রিক্সার গ্যারেজে পাওনাদারদের টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে ঠিক তখনই ইশা মিয়ার এমন একটি হাসি মাখা মুখ দেখা গেল। ইশা মিয়া ভালো  থাকুক তার পরিবার নিয়ে। আমরা সবাই চাইলেই পারি খুব সামান্য পরিসরে হলেও সমাজের বঞ্চিত মানুষদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে। মানবিকতার জয় হউক।

19
অটিজম ও আমাদের অসাধারণ শিশুরা


‘নয়ন’ নামের একটি ছেলে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠে নির্দিষ্ট বয়সে স্কুলে যেতে শুরু করে। কিন্তু হঠাৎ করে সে কথা বলা কমিয়ে দেয়। একা থাকতে পছন্দ করে। ক্লাসের শিক্ষক বা বন্ধুরা কোনো প্রশ্ন করলে উত্তর দেয় না। ক্লাসে শিক্ষক ছবি আঁকতে বা কোনো কিছু লিখতে দিলে পেনসিল ধরে না। তখন শিক্ষক নয়নের মা-বাবাকে বিষয়টা জানালে মা-বাবা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে তাকে নিয়ে যান। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন, নয়ন অটিজমে আক্রান্ত।

২ এপ্রিল, ২০১৯ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশে এই দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়ে আসছে। ২০১১ সালের ২৫ জুলাই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিশ্বের অটিজম আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে একটি ফলপ্রসূ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দেশে অটিজম আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি বৈশ্বিক অটিজম কর্মসূচিতে নেতৃত্বদানকারী মার্কিন সংস্থা ‘অটিজম স্পিকসে’র সদস্য। মূলত তাঁর প্রচেষ্টায় দেশে অটিজম সচেতনতা ও জাগরণ তৈরি হয়। অটিজম হলো মস্তিষ্কের একটি স্নায়বিক সমস্যা, যা মস্তিষ্কের সাধারণ কর্মক্ষমতাকে ব্যাহত করে। যার লক্ষণ শিশু জন্মের তিন বছরের মধ্যেই প্রকাশ পায়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১৮ মাস এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে জন্মের পর থেকেই শিশুর আচরণ অস্বাভাবিক মনে হতে পারে। যেমন—বড়রা নানাভাবে নানা কথা বলে শিশুর মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু এ ধরনের শিশুরা তাতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। অথবা কোনো একটি বস্তু হাতে নিয়ে সেটার প্রতি মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না। এ ছাড়া জন্মের পর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠছে এমন শিশুর মধ্যেও অটিজমের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। আমেরিকান সাইকিয়াট্রিস্ট লিও ক্যানার (খব িকধহহবৎ) ১৯৪৩ সালে প্রথম অটিজম আবিষ্কার করেন। এক তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রতি ৫০০ জনে একজন অটিস্টিক শিশু হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

দৃশ্যমান বৈশিষ্ট্যাবলি : প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩-এর বর্ণনা অনুযায়ী অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের ১০টি বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করা হয়েছে। যথা—এক. মৌখিক বা অমৌখিক যোগাযোগে সীমাবদ্ধতা, দুই. সামাজিক ও পারস্পরিক আচার-আচরণ, ভাববিনিময় ও কল্পনাযুক্ত কাজকর্মের সীমাবদ্ধতা, তিন. একই ধরনের বা সীমাবদ্ধ কিছু কাজ বা আচরণের পুনরাবৃত্তি, চার. শ্রবণ, দর্শন, গন্ধ, স্বাদ, স্পর্শ, ব্যথা, ভারসাম্য ও চলনে অন্যদের তুলনায় বেশি বা কম সংবেদনশীলতা, পাঁচ. বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা বা অন্য কোনো প্রতিবন্ধিতা বা খিঁচুনি, ছয়. এক বা একাধিক নির্দিষ্ট বিষয়ে অসাধারণ দক্ষতা এবং একই ব্যক্তির মধ্যে বিকাশের অসমতা, সাত. চোখে চোখ না রাখা বা কম রাখা; আট. অতিরিক্ত চঞ্চলতা বা উত্তেজনা, নয়. অসংগতিপূর্ণ হাসি-কান্না, দশ. অস্বাভাবিক শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ও একই রুটিনে চলার প্রচণ্ড প্রবণতা। বর্ণিত প্রথম তিনটি লক্ষণের উপস্থিতি নিশ্চিতভাবে এবং পরবর্তী লক্ষণগুলোর মধ্যে যদি এক বা একাধিক লক্ষণ কোনো শিশুর মধ্যে পরিলক্ষিত হয়, তখন তাকে অটিস্টিক শিশু বা ব্যক্তি হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

অটিস্টিক শিশুর মূল তিন সমস্যা : অটিজমে আক্রান্ত শিশু বা অটিস্টিক শিশু সাধারণত যোগাযোগ ও সামাজিক আচরণে বয়সের তুলনায় অনেক পিছিয়ে থাকে। যে তিনটি প্রধান সমস্যা অটিস্টিক শিশুর ভেতর থাকে, তা হলো যথা—এক. মৌখিক ও অমৌখিক যোগাযোগে সমস্যা, সামাজিক আচরণে সমস্যা এবং পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ সমস্যা। মৌখিক ও অমৌখিক যোগাযোগে সমস্যাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য লক্ষণগুলো হলো—অটিস্টিক শিশুর ভাব প্রকাশের মতো কথা বলা দেরিতে শুরু হয় বা একেবারেই অনুপস্থিত থাকে ও ভাব প্রকাশের বিকল্প উপায় এদের বিকাশ পায় না। অনেকেই কথা গুছিয়ে বলতে পারে না। একই শব্দ বা বাক্য বারবার বলার প্রবণতা থাকতে পারে। এরা কারো চোখের দিকে তাকায় না। সে ক্ষেত্রে অন্যের মুখভঙ্গি বা অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে প্রকাশিত ভাব তারা বুঝতে পারে না। অনেকেই অর্থহীন কথা বলে। নিজেকে প্রকাশের জন্য যথাযথ ভাষার ব্যবহার এরা জানে না বা অন্যের ভাষা বোঝার ক্ষমতাও এদের থাকে না।

অটিজমের কারণ : অটিজমের কারণ কী—এখনো পর্যন্ত এর কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে মস্তিষ্কের কোনোরূপ গঠনগত ক্ষতি। অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক ক্রিয়া। শরীরে নিউরোকেমিক্যাল ক্রিয়ার অসামঞ্জস্যতা। শিশুর জন্মপূর্ব বা জন্মের পরবর্তীকালে কোনো সংক্রমণ, ক্রমোজমগত অস্বাভাবিকতা হতে পারে। শিশুকালীন টিকা, বিশেষ করে এমএমআর টিকা। জন্মের সময় শিশুর অক্সিজেনের অভাব। শিশুর কোনো কারণে খিঁচুনি হলে। প্রসবের সময়ে সিন্টসিনন ড্রিপ ব্যবহার। অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ এবং বংশগত কারণ অন্যতম। নানা কারণ বলা হলেও এখনো পর্যন্ত অটিজমের কোনো নির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত করা হয়নি। তবে কোনো কোনো চিকিৎসাবিজ্ঞানী বয়স্ক মা-বাবাকে অটিজম হওয়ার জন্য দায়ী মনে করেন।

অটিজম শনাক্তকরণ : নিম্নের বিষয়গুলো একটি শিশুর ভেতর দেখা গেলে খুব দ্রুত অটিজম বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া দরকার। যেমন—শিশুর নিজের নাম শুনে না তাকালে, শিশু বাবলিং শব্দগুলো না করলে। এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে কোনো কিছু পয়েন্ট করে না দেখালে। কথা বলার সময় কারো সঙ্গে আই কন্টাক্ট না করলে। কেউ কিছু দিলে সেটা না ধরলে বা ধরলেও সেটা হাত থেকে পড়ে গেলে। নিজের পছন্দের বস্তুটি নিয়ে অন্যের সঙ্গে অংশগ্রহণ না করলে। ১৬ মাসের ভেতর একটি শব্দ কিংবা দুই বছরের ভেতর দুটি শব্দের বাক্য না বললে। অর্জিত যোগাযোগ ও সামাজিক দক্ষতা যদি আস্তে আস্তে হারিয়ে যায়। যত দ্রুত অটিজম শনাক্ত করা যায় এবং যত তাড়াতাড়ি অটিজম আক্রান্ত শিশুকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে সম্পৃক্ত করা যায় তত দ্রুত তার উন্নতি সম্ভব হয়।

অটিজম প্রতিরোধ ও চিকিৎসা :
অটিজম প্রতিরোধে জন্মের আগে প্রত্যেক গর্ভবতী মায়ের অটিজম বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। প্রয়োজন গর্ভাবস্থায় পরিমাণমতো পুষ্টিকর খাবার। কারণ অপুষ্টি আর প্রতিবন্ধিতার মধ্যে যে নিবিড় সম্পর্ক তা আজ গবেষণায় প্রমাণিত। অটিস্টিক আক্রান্ত হয়ে কোনো শিশু জন্ম নিলে তার প্রথম চিকিৎসা হচ্ছে শনাক্তকরণ। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন নিবিড় পরিচর্যা এবং বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা। অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশকে নিবিড় পরিচর্যা, সঠিক চিকিৎসা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের বৃদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ঘটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাদের বেশির ভাগ স্কুলে স্বাভাবিক শিশুদের সঙ্গে পড়ালেখা করতে পারে। কিছুসংখ্যক শিশুর জন্য প্রয়োজন হয় বিশেষায়িত স্কুল। বাদবাকি প্রায় ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ শিশু সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পরও স্বাধীনভাবে বা এককভাবে জীবন অতিবাহিত করতে পারে না—তাদের অন্যের ওপর নির্ভর করে চলতে হয়। তাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে আজীবন ‘অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজ-অর্ডারস’ নামের প্রতিবন্ধিতা।

শেষ কথা : অটিস্টিক সম্ভাবনাময় শিশু—বেশির ভাগ অটিস্টিক শিশু অত্যন্ত সম্ভাবনাময় হয়। প্রতি ১০ জন অটিস্টিক শিশুর মধ্যে একজনের ছবি আঁকায়, গানে, গণিতে বা কম্পিউটারে প্রচণ্ড দক্ষতা থাকে। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে অটিস্টিকরাও কর্মে সৃজনশীলতার স্বাক্ষর রাখতে পারবে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘কর্মসংস্থানে অটিজম সুবিধা’। অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, আইজাক নিউটন অটিস্টিক ছিলেন। যাঁরা স্বকর্মগুণেই বিশ্বখ্যাত। এ জন্য প্রয়োজন অটিস্টিক শিশুর প্রতি সবার সহযোগিতা এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি।

লেখক : প্রতিবন্ধিতা বিশেষজ্ঞ ও চেয়ারপারসন, মৃত্তিকা প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন

 

সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ

20

আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদের ২০ নং অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এ বলা হয়েছে ‌‘পারিবারিক পরিবেশ থেকে যে শিশু সাময়িক বা চিরতরে বঞ্চিত বা স্বার্থ রক্ষায় যে সকল শিশুর পারিবারিক পরিবেশ উপযুক্ত নয় সে সকল শিশু রাষ্ট্র থেকে বিশেষ সুরক্ষা ও সহায়তার অধিকারী।’ সরকারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেসরকারী সংস্থাগুলো সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, তাদের শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক বিকাশ, একাডেমিক শিক্ষার ব্যবস্থা, ভরণ-পোষণ এবং ভবিষ্যত জীবনে স্বাবলম্বী করে মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ।

দেশের মোট জনসংখ্যার ৪০% শিশু। তন্মধ্যে ১৫% হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত শিশু। বাংলাদেশ শিশু আইন ’১৩ এর ৮৯ অনুচ্ছেদে ১৬টি ক্যাটাগরিতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুর কথা বলেছে। বিশ্ব শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০১৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়কে পথশিশু পুনর্বাসনের বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, “আমাদের শিশুরা কেন রাস্তায় ঘুরবে? একটা শিশুও রাস্তায় ঘুরবে না। একটা শিশুও এভাবে মানবেতর জীবন যাপন করবে না।” এ লক্ষ্যে সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ সবাইকে একযোগে পথশিশুদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ করার জন্য পরামর্শ দেন। এই নির্দেশনার উপর ভিত্তি করে মহিলা ও শিশু মন্ত্রনালয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটিতে একটি জরিপের কাজ করে।। পরে ২০১৬ সাল থেকে পথশিশু পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নেয়।

সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের পুনর্বাসনে সরকারী বেসরকারী সমন্বিত কার্যক্রমের মাধমে তাদের দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কতিপয় প্রস্তাবনা:

পথশিশু কারা? তাদের অবস্থা এবং পথশিশুর সংখ্যা:
ইউনিসেফ কর্তৃক পথশিশু বলতে, যে সকল শিশুর জন্য রাস্তা বসবাসের স্থান অথবা জীবিকার উপায় হয়ে গেছে তাদের পথশিশু বলে। ২০০৫ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তরের এক গবেষনায় ৪১% শিশুর ঘুমানোর কোন বিছানা নেই; ৪০% প্রতিদিন গোসল করতে পারে না; ৩৫% খোলা জায়গায় পায়খানা করে; ৮৪% শিশুর কোন শীতবস্ত্র নেই; ৫৪% শিশুর অসুস্থতায় দেখার কেউ নেই; ৭৫% শিশু অসুস্থতায় ডাক্তার দেখাতে পারে না; মাদকাসক্তির চিত্র ভয়াবহ, শিশু অধিকার ফোরামের এক প্রতিবেদনে দেখা যায় ৮৫ ভাগ পথশিশু মাদকাসক্ত। ১৯% হেরোইন, ৪৪% শিশু ধূমপানে ২৮% টেবলেট, ৮% ইঞ্জেকশনে আসক্ত,; ৮০% শিশু কাজ করে জীবন টিকিয়ে রাখতে; ২০% শারিরীকভাবে নির্যাতিত হয়; ৪৬% মেয়ে শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়; ১৪.৫% শিশু সার্বিকভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ।

পথশিশুর সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে মতদ্বৈততা দেখা যায়। ২০০৪ সালে বিআইডিএস জরীপ বলছে ২০২৪ সালে গিয়ে দাড়াবে ১৬ লাখ। বর্তমানে এইসংখ্যা প্রায় ১৩ বলে অনেকে মনে করছেন। প্রকৃতপক্ষে কারা পথশিশু? যারা সার্বক্ষণিকভাবে পথে থাকে, খেলে, ঘুমায়, জীবিকা নির্বাহ করে তারা যদি পথশিশু হয় তাদের সংখ্যা কত হবে? এ নিয়ে একটি বাস্তবসম্মত জরীপ হওয়া সর্বাগ্রে জরুরী। অবস্থাদৃষ্টে এই স্টাডি অনেক পুরাতন হয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে এবং নতুন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই পথশিশুদের প্রকৃত সংখ্যা বর্তমানে কত এটা না জানলে পথশিশু কার্যক্রমের জন্য বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা তৈরি করা দূরূহ হবে

পথশিশু সংশ্লিষ্ট তথ্য সহায়ক পুস্তিকা:
পথশিশুদের জন্য সরকারী বেসরকারী কার্যক্রমগুলো কি আছে? কারা কি কাজ করছে সেটা সবার জানা থাকা দরকার। কে কি করছে এবং কিভাবে করছে? এ বিষয়ে একটি সহায়ক তথ্যপুস্তিকা থাকা আবশ্যক। সরকার এবিষয়ে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে সারা দেশব্যাপী যেসব কাজ হচ্ছে তার একটি তথ্যপুস্তিকা তৈরি করতে পারেন। ষ্ট্রীট চিলড্রেন এক্টিভিস্টস্নেটওয়ার্ক সম্প্রতি ২০১৭ সালের জন্য একটি ডিরেক্টরী প্রকাশ করেছে। কিন্তু এই তথ্য যথেষ্ট নয়। পথশিশু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো যখন তার নিজস্ব সেবা সম্পন্ন করছে তখন শিশুটি পরবর্তী প্রয়োজনীয় সেবা কোথায় পাবে এসম্পর্কে কোন পূর্বধারণা না থাকায় ফলে আংশিক সেবা নিয়ে শিশুটি আবার পূর্বের জীবনে ফিরে যাচ্ছে। তাই এমন একটি তথ্যপুস্তিকা থাকা আবশ্যক যেখানে সারা দেশে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কোথায় কি হচ্ছে, যোগাযোগ ঠিকানা, ক্যাপাসিটি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত বিবরন দেয়া থাকবে যাতে এই তথ্যের সহায়তা নিয়ে শিশুদের সহায়তা দিতে সবাই সক্ষম হবে।

শেল্টারহোম ব্যবস্থাপনায় স্ট্যান্ডার্ড কমন গাইডলাইন এবং মনিটরিং ও সমন্বয়:
বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের নিয়ে বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী শেল্টার হোম রয়েছে। কিন্তু এদের অনেকেই কোন নিয়ম মেনে চলে না। শিশু অধিকার বা শিশু সুরক্ষার বিধান মেনে এসব হোম পরিচালিত হওয়া বাঞ্চনীয়। এ সংক্রান্ত একটি মানসম্মত নির্দেশিকা তৈরি করতে পারে। সমাজকল্যান মন্ত্রনালয় সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও বেসরকারী সংস্থাগুলোকে নিয়ে সবার উপযোগী শিশু হোম পরিচালনার জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড কমন নির্দেশিকা প্রণয়ন করা আবশ্যক। পাশাপাশি নির্দেশিকা অনুসরন করে শেল্টার হোম পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা একটি মনিটরিং সেলের মাধ্যমে যাচাই করে দেখার জন্য সমাজসেবা এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের নেতৃত্বে নেটওয়ার্ক প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠন করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে একটি সুষ্পষ্ট নীতিমালা থাকবে। প্রতিটি সংস্থা যথায়থভাবে শিশু সুরক্ষা নীতি অনুসরণ করে শিশু যত্ন নিশ্চিত করছে কিনা এটা মনিটরিং সেল কর্তৃক খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা থাকবে। মনিটরিং সেল প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিকট সুপারিশ করবে।

পথশিশু উৎসমূখ  বন্ধে ক্যাম্পেইন/ জনসচেতনতা:

পথশিশুর উৎসস্থল সমুহে ব্যাপক প্রচারনা চালানো হবে। জাতীয়ভাবে সচেতনতামূলক সাইকেল র‌্যালীর আয়োজন করে স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারকে অর্ন্তভূক্ত করে ব্যাপক কার্যক্রম নিতে পারে। প্রতিটি শিশু স্কুল সময়ে রাস্তায় থাকতে পারবে না এ বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতাসহ বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা নিতে হবে। রেল ষ্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাটে বিশেষ প্রহরার ব্যবস্থা থাকবে। অভিভাবকবিহীন কোন শিশুকে পাওয়া গেলে ওখান থেকেই শিশুটিকে উদ্ধার করে কোন শেল্টারে পাঠাতে হবে। পরে কাউন্সিলিং সেবা দিয়ে পরিবারে যোগাযোগ করা হবে। শিশুটি ঝুকিপূর্ণ হলে কোন শেল্টারে পুনর্বাসনের জন্য প্রেরণ করা হবে।

প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী ও কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি:
প্রয়োজনের তুলনায় এখন অনেক বেশী সংস্থা কাজ করছে। কিন্তু ঘাটতি হচ্ছে তাদের অদক্ষতা ও অসচেতনতা। শিশুদের সাথে কিভাবে কাজ করবে, কাজ করার জন্য বিশেষ দক্ষতা, শিশু হোম পরিচালনার জন্য আবশ্যকীয় বিষয়সহ শিশু অধিকার ও সুরক্ষা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠণগুলো এসব না বুঝে কাজ শুরু করে আর জড়িয়ে পড়ে নানান জটিলতায়। সংগঠনগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রকল্প প্রস্তাবনাসহ বাজেট প্রনয়ন, শিশু বান্ধব কাজের পরিবেশ তৈরি, কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম উন্নয়ন, পিয়ার এডুকেটর প্রশিক্ষণ, শিশু ডাটাবেইজ তৈরি, কাউন্সেলিং ও শিশু যত্ন প্রশিক্ষণ সহায়তা দিতে পারে।

মনোসামাজিক সেবা:

সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিুরা নানা প্রতিকূলতার মাঝে বেড়ে উঠে। সাধারনত: পথশিশুদের আচরন- অসত্য বলা, অতিমাত্রা আবেগপ্রবণ, নিজ প্রয়োজনে অন্যকে প্রভাবিত করা, অপরাধ করতে কুন্ঠাবোধ না করা, কাউকে সহজে বিশ^াস করে না, ধ্বংসাত্মক কাজে আগ্রহ, নেতিবাচক আচরন, খোলামেলা স্বাধীন জীবনে অভ্যস্ত, সহজে কাউকে মান্য করে না। এদের মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তনে মনোসামাজিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরী। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করে তাদের কাউন্সেলিং বিচক্ষণতার সাথে সম্পন্ন করা দরকার। মনোসামাজিক বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে একটি মনোসামাজিক সহায়ক সেল গঠণ করে সেবা নিশ্চিত করা যায়। একইভাবে হোমে অবস্থানরত জটিল শিশু রেফারাল কেস নিয়ে কাজ করবে।

প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান:
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিশেষ আনন্দময় শিক্ষাদান পদ্ধতি নিশ্চিত করা আবশ্যক। বড় শিশুদের জন্য অনানুষ্ঠানিক স্বল্পমেয়াদী শিক্ষা চালু করে এই শিশুদের জন্য সময়োপযোগী বাস্তবমূখী বৃত্তিমূলক কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণের পর তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। কিংবা স্বল্প সূদে ব্যাংক ঋনের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে তাদেরকে গড়ে উঠতে সহায়তা করতে পারে। শিশুদের কে শেল্টার হোম ভিত্তিক হাতে কলমে কৃষিকাজ, মৎসচাষ, পশুপালন বিষয়ে প্রশিক্ষন দিয়ে বাস্তব জীবনের জন্য প্রস্তুত করা যেতে পারে।

মাদকাসক্ত চিকিৎসা:

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকাংশ কোন না কোনভাবে মাদকের সাথে পরিচিত হয়ে পড়ে। এইসকল শিশুরা মাদকাসক্তির কারণে সুন্দর ভবিষ্যৎ বিসর্জন দেয়। তাই এই শিশুদের মাদকাসক্তি চিকিৎসার জন্য প্রতিটি সেবা কেন্দ্রে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকবে। শিশু হোমে প্রেরণের পূর্বেই তাদের মাদকাসক্তি চিকিৎসা নিশ্চিত করা আবশ্যক।

পরিচয়/ ঠিকানা/জন্ম নিবন্ধন:
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পরিচয় ও ঠিকানা অনেক ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। অনেক সময় শিশুদের পিতামাতার নাম বলতে পারে না। সেক্ষেত্রে প্রতিটি শিশুর জন্ম নিবন্ধন জটিলতার কারণে সম্ভব হয় না। ফলে এইসব শিশু ভবিষ্যৎ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। ছোট পরিত্যক্ত শিশুদেরকে কোন পরিবারের তত্ত¡াবধানে দেয়াটা আইনী জটিলতার মধ্যে পড়ে। তাই জন্মনিবন্ধন, শিশুর অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে আইনী বাধাগুলো অপসারন করা খুবই অত্যাবশ্যক।

শিশুপ্রতি (টাকা) ব্যয়:

শিশুপ্রতি ব্যয় সংস্থাগুলো তার নিজস্ব নিয়মে এই ব্যয় নির্ধারিত হয়। সার্বিক বাজার ব্যবস্থা বিবেচনা করে শিশুপ্রতি ব্যয় মানসম্মত, সময়োপযোগী ও অভিন্ন হওয়া জরুরী। শিশুদের পূনর্বাসনে একই ব্যয় নীতি অনুসরন করা দরকার। খাবারের মেন্যু, শিক্ষার উপকরন, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য সেবা, পোশাকপরিচ্ছেদ, আবাসন ফ্যাসিলিটিজ, বিছানাপত্র, টয়লেট সুবিধাদি একই মানদন্ড বজায় রেখে ব্যয় নীতিমালা করা দরকার।

শিশুরা হচ্ছে জাতির ভবিষ্যৎ। দেশের মোট জনসংখ্যার ২৫ ভাগ হচ্ছে শিশু। এদের বড় অংশ আবার সুবিধাবঞ্চিত। পরিপূর্ণ শিশু বিকাশ ও শিশু উন্নয়ন ব্যাহত হলে জাতি মেধাশূন্য নেতৃত্ব পাবে। থেমে যাবে জাতির অগ্রগতি। তাই সকল বিষয়ে শিশুর স্বার্থ হবে সর্বোত্তম। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা একটি পৃথক শিশু অধিদপ্তর। যারা শিশুদের স্বার্থে দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ণ ও সমন্বয় করে থাকবে।

পরিশেষে বলতে চাই, সকল সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুর কল্যাণে প্রয়োজন সরকারীবেসরকারী সম্মিলিত উদ্যোগ, সক্রিয় অংশগ্রহণ ও বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা। তবেই বাংলাদেশ একদিন পথশিশু মুক্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী রোল মডেল হিসেবে সুখ্যাতি অর্জনে সফল হবে।

21

অনেকেই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়েই চলেছেন দিনের পর দিন। দিনে দুই তিনবার গ্রহণ করেন এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। পেট একটু ফেঁপে গেলে, বুকে অস্বস্তি হলে, পেট ভারি হলে, ঢেকুর উঠলে, পায়খানায় একটু সমস্যা হলে আলসারের ওষুধ খেয়ে নেন এমন মানুষ অগণিত।

বিভিন্ন আলসারের ওষুধ আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়, অ্যান্টাসিড এবং পিপিআই। পিপিআই এর মধ্যে আছে ওমেপ্রাজল, র‍্যাবিপ্রাজল, প্যান্টপ্রাজল এবং ইসোমেপ্রাজল ইত্যাদি।

এই দুই ধরণের ওষুধ গ্রহণের ফলে নানা শারীরিক সমস্যা হয়। সাধারণ আলসারের ওষুধ ওমিপ্রাজল বেশিদিন একটানা খাওয়ার ফলে অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে বলে বর্তমানে প্রমাণিত হয়েছে৷

ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। কমে যেতে পারে রক্তে ক্যালসিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম। হতে পারে বিভিন্ন সংক্রমণ।

পেটের সমস্যায় অনেকে অ্যান্টাসিড-জাতীয় বড়ি বা সিরাপ খেয়ে থাকেন৷ অ্যান্টাসিডের বিভিন্ন উপাদান ভেদে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে৷ হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা ডায়রিয়া।

অন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ অনেক উপাদানের শোষণ কমে যেতে পারে। অ্যান্টাসিড নিয়মিত খেলে কিডনি পাথরের ঝুঁকি বাড়ে। বয়স্ক ও হৃদরোগীদের জন্য বেশি ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ অ্যান্টাসিড ভালো নয়৷যেকোনো অ্যান্টাসিডই অন্য ওষুধের কার্যক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে।

Source:http://www.bd24times.com.bd/bangla/2424?fbclid=IwAR3u-5IbS2fb__1P6GckuUTm4r0cwYu3K_0y-8o5Mp8lYrXvX8ObvmgAIcY

22
বীন বাজালে সিনেমায় সাপ নাচে। বাস্তবে নাচে না। সাপের কান নাই। শোনার জন্য ঘনঘন জিহ্বা বের করতে হয়।

সাপ আপনাকে আক্রমণ করবে না। আপনি যদি শব্দ করে হাঁটেন, সে বুঝতে পারে। সাপের বুকের তলায় খোলসের রঙ আলাদা। সেখানে বিশেষ স্নায়ুতন্তু থাকে। মাটির কম্পন বুঝতে পারে। আপনি কতদুরে আছেন, আপনি সাইজে কতবড়, সে বুঝতে পারে। পালিয়ে যায়।

বেলি, হাস্নাহেনার গন্ধে কখনো সাপ আসে না। কেউকেউ জীবদ্দশায় বেলি, হাস্নাহেনা গন্ধরাজের তলায় সাপ দেখেছেন হয়তো। মনে রাখবেন, সাপের ঘ্রাণশক্তি খুবই দূর্বল। সে গন্ধ পায় না।
সুগন্ধি ফুলে পোকামাকড় আকৃষ্ট হয় বেশি। পোকা খেতে ব্যাঙ আসে। ব্যাঙ খেতে মাঝেমাঝে সাপ আসতে পারে। খাবার পর মানুষের মত সাপও ক্লান্ত হয়। মানুষ খাবারের পর যেমন আয়েশ করে ঘুমায় তেমনই সাপও বেলি-হাস্নাহেনার তলায় ঘুমুতে পারে। তবে এসব গাছ যদি বাড়ির ভেতর থাকে তবে সাপ কম আসে। কারণ মানুষের উপস্থিতি তারা ভয় পায়। তবে বাড়ির সাইডে, ঝোপঝাড়ে এমন গাছ থাকলে সাপ আসা স্বাভাবিক।

একটা সাপকে মারলে তার জোড়া সঙ্গী কখনোই আপনাকে খুঁজে দংশন করতে আসবে না। সাপের স্মৃতিশক্তি খুবই দূর্বল। সাপ বাংলা সিনেমার স্বর্পরাজ শাকিব খান কিংবা নাগিন মুনমুন নয়
যে সঙ্গীহারার প্রতিশোধ নিতে ছুটে আসবে। সাপ নিম্নজাতের প্রাণি। এদেরমধ্যে রিভেঞ্জ ব্লে কিছু নাই।
কিন্তু একটা সাপ মারার পর আরেকটা সাপ প্রায়ই একই স্থানে দেখা যায়, কারণ কী?
সিম্পল। মেটিং এর সময় তাদের পার্টনার আশেপাশে থাকতেই পারে কিংবা আশেপাশে গর্ত থাকলে তার বাচ্চাকাচ্চা কিংবা আরো সাপ উঠে আসতেই পারে। সে প্রতিশোধ নিতে আসেনি বরং ভুল করে গর্ত থেকে চলে এসেছে।

ছোট সাপের বিষ নাই। কথাটা ভুল। সাপের বাচ্চাও সাপ। কেঁচোর সমান একটা কেউটের কামড়ে এক রোগীকে টানা ২৪ ঘণ্টা জীবনের সাথে ফাইট করতে হয়েছে। আইসিইউতে তিন ডাক্তার তার পাশে ২৪ ঘন্টা লড়েছিলাম। আর্টিফিশিয়াল ভেন্টিলেশন থেকে শুরু করে একাধিকবার অ্যান্টি-ভেনম দিয়েছে। সে সুস্থ হয়ে বাড়িতে গেছে। যাবার আগে ডাক্তারদের গালিগালাজ করে গেছে। ত্যাকে নাকি অনেক দামী ঔষুধ দেওয়া হয়েছে। সে জানে না, একডোজ অ্যান্টিভেনমের দাম ১০ হাজার টাকা। লজিক্যালি লোকটার দোষ নেই। সে ছিল জেলে। দিনে হয়তো এক দেড়শ টাকা তার ইনকাম।
রাতে যারা বাজার থেকে অন্ধকারে ঘরে ফেরে তাদের এবং জেলেদের সাপ বেশি কাটে।
জেলেরা বর্ষায় রাতে আইল বরশি ফেলে, জাল ফেলে মাছ ধরে। নদী বা নালায় মাঝ ধরে। সাপ শুকনো ভেবে সেখানে থাকে। কামড় দেয়।

সিনেমা বলে, সাপ দুধ খায়। গরুর দুধ খেতে গোলাঘরে হানা দেয়। ভুল কথা। এসব সাপ পোকামাকড় খায়। কালো রঙ্গের দাড়াশ সাপ দেখি, এরা আমাদের উপকার করে। ফসল বাঁচায়। এদের না মারা উত্তম।

সাপে কাটলে ব্লেড দিয়ে কেটে দিলে বিষ বের হয়ে যায়। কথাটা ভুল। ভুলেও এই কাজ করবেন না। ব্লেড দিয়ে কাটলেন তো বিষকে রক্তের সাথে নিজহাতে মিশিয়ে দিলেন।

দশন করা সাপকে উল্টোকামড় দিলে বিষ ফেরত চলে যায় সাপের ভেতরে। কথাটা ভুল। পায়ে কাটলে বিষ সেখানে। আপনার মুখের দাঁতে তো বিষ নাই। কীভাবে ফেরত দিবেন?
সাপের বিষ তার দাঁতে থাকে না। সে যখন কামড় দেয় তার মুখের পেশিগুলো টানটান হয়ে যায়। দাঁতের কাছেই ঠাকে বিষধর। সেখান থেকে বিষ দাঁত বেয়ে আপনার শরীরে প্রবেশ করে।

শক্ত করে বাঁধলে বিষ ছড়াতে পারে না এমন ধারনা ভুলে যান। আপনি নিজেও নিশ্চিত না সাপটা বিষধর ছিল কি না, তাহলে শক্ত করে বাঁধবেন কেন?
অনেক ডাক্তার সাপে কাটার পর বাঁধতে নিষেধও করেন। কারণ এতে হিতে বিপরীত হয়।
ফুটবলের অ্যাংলেট পায়ে দিলে যেমন আটসাট হয়ে থাকে এমন ভাবে গামছা বা শার্ট বা শাড়ি দিয়ে দংশনের কিছু উপরে পেঁচিয়ে নিতে পারেন। বাঁধন অবশ্যই ঢিলা রাখবেন। দুট আঙ্গুল ঢোকে এমনভাবে ঢিলা করবেন। আবার খুব ঢিলাও না। ২০ মিনিট পরপর খুলে আবার লাগাতে পারেন। ভুলেও লোহার তার, সুতলি, কারেন্টের তার বা অন্য সরু জিনিস দিয়ে বাঁধবেন না। বাঁধলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে হাতে-পায়ে পঁচন শুরু হবে। চিরতরে হাত বা পা খোয়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। হয়তো আপনাকে বিষধর সাপ কাটেই নি অথচ আপনি ভয়ে গিট্টু দিয়ে হাত পা পঁচিয়ে পঙ্গু হয়ে গেলেন। কেমন হবে?

সাপ কাটলে কিন্তু আংটি, চুড়ি, ব্রেসলেট খুলে ফেলবেন। কিছু সাপের বিষে আপনার আঙ্গুল, হাত বা পা ফুলে যেতে পারে। আংটি বা চুড়ি থাকলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে পঁচন ঘটতে পারে।

সাপ কখন দংশন করে?

১। যদি ভুলে আপনার মুখোমুখি হয় সে পালাতে চেষ্টা করে। কিন্তু সে নিজে ভয় পেলে হিংস্র হয়। সব প্রাণিই এমন। মুরগীরও মাঝেমাঝে মানুষকে ঠোকর দেয়। সামনে সাপ পড়লে তাকে চলে যেতে দিন।

২। বর্ষাকাল মানেই হাসপাতালে সাপে কাটা রোগী। বর্ষায় গর্তে পানি উঠে যায়। ফলে সাপ ডাঙ্গায়, শুকনো জায়গায় উঠে আসে। সেটা ক্ষেতের আইল, রাস্তা কিংবা আপনার ঘরের তোশকের তলা, বালিশের তলা, আলনার ভেতর, কাঠের স্তুপ যেকোন জায়গাতেই আসতে পারে।

৩। অন্ধকারে সাপের শরীরে পা পড়লে। জঙ্গলায় ভুলে তার শরীরে পা পড়লে কামড় দেয়।

৪। ইদুরের গর্তে সাপ থাকলে সেখানে পা রাখলে বা বসে থাকলে কামড় দিতে পারে। বাচ্চা ছেলেরা মাঝেমাঝে বসে গর্তের মুখে প্রস্রাব করে। সন্তানকে শিক্ষা দিন। এই কাজ যেন না করে।

সব সাপ বিষাক্ত?

বাংলাদেশে ৮০ ধরণের সাপ আছে। মাত্র ২৭ তা বিষাক্ত।
আপনার চোখের সামনে নিয়মিত যাদের ঘোরাফেরা দেখেন, তারা বিষাক্ত নয়। পানির সাপ অধিকাংশই বিষাক্ত নয়। তবে সামুদ্রিক সাপ সবাই বিষাক্ত।

যদি চেনেন তবে বলি গোখরা, কালকেউটে, শঙ্খচূড়, চন্দ্রবোড়া বিষাক্ত।

সাপে কাটলে বুঝবেন কীভাবে?


দংশন করেছে এমন মনে হবার পর যদি সরাসরি সাপ দেখেন, তাহলে ভাবতে পারেন সে আপনাকে দংশন করেছে।

একবার এক ছেলে হাসপাতালে আসল। মাটির ঘরে অন্ধকারে হেলান দিয়ে ছিল। পীঠে সাপ কেটেছে। সারাদিন হাসপাতালে আমাদের অবজারভেশনে ছিল। রাতে রিলিজের আগে খবর আসল, যেখানে হেলান দিয়ে ছিল, সেখানে কে যেন তারকাটা পুতে রেখেছিল। পীঠে লেগে তারকাটা দেয়ালে ঢুকে যায়। খোচা লাগাকে সাপে কাটা ভেবে সে হাসপাতালে আসে। ২৪ ঘণ্টা ভয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ঘরে ফেরে সুস্থ অবস্থায়।

বিষাক্ত সাপে কাটলে বোঝা বেশ সহজ।


১। শিকারি পশুর মত সাপের দুটো দাঁত বড় থাকে। বাঁকানো। দংশন করলে গভীর ক্ষত হয়। দুঁটো দাঁতের অস্তিত্ব থাকলে ধরে নিতে পারেন, আপনাকে বিষাক্ত সাপ দংশন করেছে।
২। যদি অনেকগুলো দাঁত থাকে, সেখানে মাংস তুলে নিলেও ভেবে নিতে পারেন এটা ছাগলের মত। অনেক দাঁত কিন্তু বিষদাঁত নাই। আপনার কিছু হবে না।

৩। সাপের বিষ কয়েক ধরণের। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে নিউরোটক্সিন রিলিজ করা সাপের কামড়ে। এক্ষেত্রে ঝিমঝিম লাগবে। চোখে ঝাঁপসা দেখবে। চোখের উপরের পাতা নেমে চোখ অংশিক বন্ধ হয়ে যাবে। মাথা ঝুলে যাবে। জিহ্বা ও শ্বাসনালী ফুলে যাবে। শ্বাস নিতে পারবে না। মুখে লালা ঝরবে। দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। বমি করতে পারে।

আরো নানাবিধ লক্ষণ আছে।
চন্দ্রবোড়া কামড় দিলে লোহিত রক্তকনিকা ভেঙ্গে যায়। ফলে রক্তবমি, রক্তপায়খানা হতে পারে। কামরের জায়গায় রক্ত ঝরতে পারে। ফুলে যেতে পারে, লাল হতে পারে। ফোস্কা পড়তে পারে। কালোও হতে পারে।
কিছু সাপের কামরে হার্ট অ্যাটাক হয়ে মারাও যেতে পারে।

সাপে কামড়ে সিনেমায় গড়াগড়ি দেখেন, বিষের কারণে চেঁচামেচি দেখেন। এগুলো অভিনয়। সাপ্র বিষ নিয়ে একটা প্রবাদ আছে, কেমন ব্যাথা বুঝিবে সে কীসে কভু আশীবিষে দংশেনি যারে... এইসব ভুলে যান। সাপে কাটা মানুষ খুব স্বাভাবিক থাকে শুরুতে। কোন ব্যাথা নাও থাকতে পারে। এমনকী মৃত্যু ঘতার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত কোন ব্যাথা নাও বুঝতে পারে।

চিকিৎসা?
একদম ঘাবড়াবেন না। বেশি ঘাবড়ালেই বিষ বেশি ছড়াবে।
সাপেকাটা জায়গা ধুয়ে ফেলুন সাবান দিয়ে।
কাটবেন না ব্লেডে।
চুষে রক্ত বের করবেন, এমন চিন্তা ভুলে যান।
যেখানে কামড়াবে সেখানকার নাড়াচাড়া বন্ধ। হাতে কামড়ালে হাত নাড়ালে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে যায়। হাত একদম নাড়াবেন না। পায়ে কামড়ালে হাঁটবেন না।
সাপেকাটা স্থানে ভুলেও অ্যাসিড ঢালবেন না। মরিচের গুড়ো দিবেন না। কার্বলিক অ্যাসিডে ঝলসাবেন না। কোন ফলের বীজ, সর্পরাজ তেল, গুটি, আটি, বড়ি, তাবিজ কিছুই লাগাবেন না।

সাপটাকে পারলে চিনে রাখুন। ডাক্তারকে বললে চিকিৎসা পেতে সুবিধা হবে। তবে ধরে যাবেন না। পারলে মেরে ফেলুন। জীবিত ধরে ওঝার কাছে যাবেন, এমন চিন্তা থাকলেও ঝেড়ে ফেলুন। ওঝা সাপের বিষ নামাতে পারে না। ওঝারা অনেক রোগী ভালো করে। যেগুলো আসলেই বিষাক্ত সাপের কামড় ছিল না। বিষ্কাত হলে এরা রোগী রেফার করে। হাসপাতালে অনেক পাওয়া যায়, যারা একেভবারে শেষ মুহুর্তে আসে। ওঝার কাছে গিয়ে জীবন খুইয়ে ফেলার পরিস্থিতি তৈরি করে আসে।

বিষাক্ত সাপে কাটলে আপনি বাঁচতে পারেন একটামাত্র পথন অনুসরণ করলে। সেটা হল- দুনিয়ার কারো মতামত নিবেন না। সরাসরি হাসপাতাল যাবেন।

সাপে কাটলে এক সেকেন্ড সময় নষ্ট না করে সরকারি বড় হাসপাতালে যান। শঙ্খচূড় বাদে সব সাপেরই বিষের অ্যান্টিভেনম আছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই চিকিৎসা শেষে ফিরে আসবেন।

যদি বুঝে ফেলেন, সাপতা বিষধর নয়, তাহলে কী করবেন?

তবুও হাসপাতালে যাবেন। ভর্তি হয়ে প্রয়োজনে বিছানায় ২৪ ঘন্টা বসে থাকবেন। তবুও হাসপাতালে যাবেন।

কার্বলিক অ্যাসিডে সাপ পালায়?

সাপের ঘ্রাণ শক্তিই এত দূর্বল যে ফুলের গন্ধেও আসে না, তাহলে কার্বলিকে সাপ পালাবে কে বলল আপনাকে?
এসব সেইফটি এককালে প্রচলিত ছিল। এখন ব্যর্থ টোটকা।

বাড়িতে খড়ের গাদা, লাকড়ির স্তুপ থাকলে আপনার মা বা স্ত্রীকে সতর্ক করে দিন। খড় বা লাকড়ি নেবার আগে সেখানে লাঠি দিয়ে কিছুক্ষণ শব্দ করুন। সাপ থাকলে চলে যাবে।
রাতে বিছানা এমনকী বালিশের তলাও চেক করবেন। আলনার ভেতরে থাকতে পারে। শব্দ করে কাপড় নিতে যাবেন।

বাড়ির আশেপাশে ঝোপঝাড় থাকলে কেটে ফেলুন। ঈদুরের গর্ত থাকলে ভরাট করে ফেলুন।
অনেকেই বলেন, মরিচপড়া দিয়ে ইদুরের গর্তের মুখে ধরলে সাপ চলে যায়। এ ব্যাপারে আমার জানা নাই। অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিতে পারেন।

বর্ষাকাল এসেছে। এখন সাপ আপনার বাড়িতে-ঘরে আশ্রয় নিতে আসতেই পারে। সাবধান থাকুন। অন্যদের সতর্ক করে রাখুন। গ্রামের আপন মানুষদের (বাবা-মা, বউ-বাচ্চা-বন্ধু) সাপের ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়ে রাখুন।
সতর্ক থাকবেন-ভয় পাবেন না-অবহেলা করবেন না।

Source: https://www.facebook.com/esobagan/photos/a.2136517466566832/2397841747101068/?type=3&theater
Modify message

23
The true Art in Giving is to give from the heart without any expectation


True giving comes from the same place inside you as your deepest happiness. They are inexplicably intertwined. A gift is something that is enjoyed twice. First by the giver who revels in the pleasure of giving something special and then also enjoyed by the person who receives the gift. A very special form of giving takes the form of small, personal acts of kindness. Very often it is not money or belongings that people need, it's the things that can't be seen, such as advice reassurance, a kind word, compliments or a smile.

The act of giving doesn’t have to be limited to an exchange of presents at Christmas time or Birthdays. You can treat every person you come into contact with as someone who you can give a gift to. You may be a bit skeptical, wondering what exactly do you have to give? Everybody has something of value for another person. It could be a kind word, a simple smile, some appreciation, the sharing of some special knowledge, even a helping hand or a bit of support during a difficult emotional time.
                             
   
Since May 2013, ‘Art of Giving’ has been constantly. Spreading happiness amongst the underprivileged. The new initiative Bag of Happiness gives the experience of “Learning - a lifelong process”. Keeping up with the values of education this years. Theme for the International Day of Art of Giving is #Bag Of Happiness knowledge and an individual acquisition of knowledge. Bags carry books and books carry knowledge to unlock happiness. Giving is happiness, isn’t it? This one-day initiative helps creates the much needed awareness to establish the fact that learning indeed is a lifelong constant process. “Bag of happiness” will be the enabler to such acause.
This 17 May, International Day of Art of Giving, AOG community all over Odisha, India, Bangladesh and the world shall give a bag of happiness to those who can’t afford it or those who can afford it but are not buying it. The people inspired by AOG and the philosophy of Dr. Achyuta Samanta, its Founder and promoter, shall join hands to spread happiness by distributing “Bag of happiness” to their capacities and mobilizing contributions from the like-minded people.

You have something to give everyone. The act of true giving is something wonderful and amazing. With most things in this world, there is only a limited amount of what you can give away. Fortunately, generosity and kindness are not bound to these same material limitations. One of life’s most basic laws is "every single act of love, kindness and generosity will multiply and return to you many times over ". The more you give the happier you will feel. Many thousands of years ago a great sage in Babylon said "The reward of charity depends entirely upon the extent of the kindness in it."

It is one of life's wonderful paradoxes that you limit the power of your giving by having an expectation of getting something in return. When you give without any thought or desire for something back, your returns will be truly limitless. Your life is like a river of energy, continually flowing. What happens when a river stops moving? It get very muddy, and stagnant. A fast flowing river is full of life and clear water. Where would you rather drink? The acts of giving and receiving are a continuous process of circulation that continues the flow of your life’s energies. For one person to receive someone else has to give. It’s a cycle of energy that flows continually on wards. Pause for as moment as you read this, and take a big, deep breath. Hold it for as long as you possibly can. As you hold it inside, notice how uncomfortable you begin to feel when you are holding on to something that is meant to be released.

Now, breath out, completely and hold your breath with your lungs fully emptied. Feel how uncomfortable you feel when you are resisting taking in something that you need.

24

If we want to know that How much Meena Cartoon was Popular? then we have to say yes! Undoubtedly Meena Cartoon was popular. It was popular not only for the children but also for people of all ages. Meena Cartoon was is a tool for Development Communication Initiative for the society. Since contemporary issues have been highlighted in this cartoon very easy and creative way, so this cartoon has gained more popularity. Earlier, in other cartoons, things were not presented as well.

When this question will come that Whether the subject matter was correct or not. then we should say that, Basically Meena is used as a tool to impart almost all important messages on gender, child rights, education, protection, menstrual hygiene, mental health, environmentalism, body positivity or even the drawbacks of the education system and development etc. Beside this,  the Meena stories presented many positive images of a girl succeeding against odds to gain equal treatment, love, care and respect in this society. Since every single subject is related to the progress or awareness and this cartoon is also a tool for developing the Communication system, so, we can say that the subject matter of the Meena cartoon was absolutely correct.

In the future, which characters are we want to see inside her once again then we can say that, Earlier Meena Cartoon  was very related contemporary worries and social prejudices but having passed time, we have encountered some serious problems. So, we wanna see Meena to fight against social prejudice, media rumors, false propaganda, violence against womanhood, comments towards girls costume, addiction towards social network, moreover attitude towards girls in public places.

We are facing a lot of problems even in this century of modern Information Technology and there has a general lack of awareness about social discrimination and other problems. Not just in villages but also in the cities we can see the same problems. Among contemporary problems, some are Significance like Disaster management, Road Accident, Fire caught etc Another serious problem is the Eve-teasing. We still can not ensure the safety of the girl child. So in the near future we want to see Meena such a character so that she will be able to unfold the path of the solution on these problems in a very positive way.

25


২০১৮ সালের ২ এপ্রিল “বিশ্ব অটিজম দিবসে’’ বাংলাদেশের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল এটিএন বাংলায়, মুন্নি সাহার উপস্থাপনায় প্রচারিত হয়েছিল “অটিজমঃ তোমার না আমার” শীর্ষক অনুষ্ঠানটি । অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফারজানা নাজনীন ঝর্ণা বয়স ৩৭, একজন সাহসী মা, যার তিনজন বাচ্চাই অটিজমে আক্রান্ত। তীব্র মনোবলসমন্ন এই মা নিজের যোগ্যতা এবং দক্ষতার দিক দিয়ে অন্য কোন মায়ের চেয়ে কোন অংশেই কম তো নয় ই বরং অনেকাংশেই অসাধারন।
সেদিন তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন তার জীবনের করুন এবং কঠিন পরিস্থিতি সবার সাথে শেয়ার করার জন্য। পারিবারিক এবং সামজিক প্রতিকূলতা পেরিয়েও উনি জীবনে যে চ্যালেঞ্জ গ্রহন করেছিলেন, সেটা অন্য দশের পক্ষে বলতে গেলে অসম্ভব। তিনি সেদিন অসীম সাহসে দেখিয়ে দিতে পেরেছিলেন, সমাজের প্রতিটি মায়ের অসামান্য অবদানকে, এবং আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধকে। সেদিনের সেই অনুষ্ঠানে তিনি শুনিয়েছিলেন তার জীবনের করুন গাঁথা। তিনি চেয়েছিলেন সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এগিয়ে আসুক। যাতে করে তার তিনজন বিশেষ শিশুসহ সমাজের অন্যান্য ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে পারেন। তারা যেন  তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, আর দশটি সাধারন শিশুর মত তারাও যেন সমাজে সকলের সহযোগিতা পায়। একটি বাচ্চাও যেন অবহেলিত না হয়।
 
সেই একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল গ্রুপের সম্মানিত চ্যেয়ারম্যান ডঃ মোঃ সবুর খান। একজন সফল উদ্যোক্তা এবং আইটি প্রফেশনাল হিসেবে যিনি সমাজে প্রতিষ্ঠিত। দেশে, তথ্য প্রযুক্তি ও শিক্ষার পাশাপাশি যিনি চিকিৎসা সেবা বিস্তারেও নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। সমাজে উদ্যোক্তা উন্নয়নের ক্ষেত্রে যার অবদান অসামান্য।  ফারজানা নাজনিন ঝর্নার আর্তিতে স্বপ্রনোদিত ভাবে এগিয়ে আসেন তিনি। বাড়িয়ে দেন সযোগিতার হাত। ফারজানা নাজনীনের করুন এবং কঠিন জীবনের মাঝেই খুঁজে পান, উদ্যম এবং সাহস। নিজ হাতে তুলে নেন বিরাট এক দায়িত্ব।
সেখান থেকেই শুরু হয় নাজনীনের উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্প। নাজনীনের বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ন ব্যক্তিগত অর্থায়ন এবং সহযোগিতায় গড়ে দেওয়া হয় “ট্রিপল স্টার স্পেশাল স্কুল” নামে একটি বিশেষ শিশুদের স্কুল। যেখানে নাজনীনের তিনজন বিশেষ শিশু সহ এ মুহূর্তে আরো প্রায় ১০ জন বিশেষ শিশু রয়েছে। তারা সেখানে সম্পূর্ণ পারিবারিক পরিবেশে লেখাপড়ার পাশাপাশি, খেলাধূলা, সঙ্গীত এবং অন্যান্য সহশিক্ষা কার্যক্রম উপর এর প্রশিক্ষন নিতে পারছে। এতে করে সমাজের অন্যান্য সাধারন শিশুর মত তাদেরও মানসিক এবং শারীরিক বিকাশ ঘটছে।

২০১৮ সালের ২ এপ্রিল নাজনীন ছিলেন কিছুটা হতাশ। তিনি তার সন্তানদের সুন্দর আগামী নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। ঠিক একবছর পরে এসে উনি নিজের অসামান্য মনোবল, কঠিন প্রত্যয় এবং দৃঢ় উদ্যমের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। নিজেকে পরিচিত করেছেন একজন উদ্যোক্তা হিসেবে। আগামী ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল বিশ্ব অটিজম দিবসে, সমাজ তাকে একজন সফল মা এবং একই সাথে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে চিনে নেবেন। যিনি বর্তমানে “ট্রিপল স্টার স্পেশাল স্কুল’’ এর কর্ণধার ।

এই স্কুলের সার্বিক সহায়তায় রয়েছে ড্যাফোডিল গ্রুপ। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে সমাজে একজন সাহসী মা হিসেবে ফারজানা নাজনীনের মুখে হাসি ফোঁটাতে পেরে এবং তাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পেরে আমারা ড্যাফোডিল গ্রুপ সত্যিই আনন্দিত। আমরা কথা দিয়েছিলাম, কথা রাখতে পেরে আমরা মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট  আমরা কৃতজ্ঞ।

https://www.facebook.com/Triple-Star-Special-School-773937419629035/

26

আমরা জানি, বাংলাদেশ হলো একটি মধ্যম আয়ের দেশ। দেশের বড় বড় শহরগুলোর বস্তি, পার্ক, ফুটপাত, লঞ্চঘাট সমূহে রয়েছে ছিন্নমূল মানুষের বসবাস, যেখানে তারা মৌলিক চাহিদা বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ লোকের বয়স ১৮ বছরের নিচে।  আবার এদেরই একটি বিরাট অংশ সুবিধাবঞ্চিত শিশু। যারা কিনা বেড়ে উঠছে অবহেলা আর ঘৃনা নিয়ে, যাদের নেই কোন সামাজিক নিরাপত্তা এবং যারা একই সাথে বঞ্চিত হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়, সুশিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা থেকে।
অভিভাবকহীন এইসব শিশু সমাজের বিভিন্ন বৈষম্য এবং অবিচারের শিকার। এক ধরণের ভারসাম্যহীনতা ও অসঙ্গত জীবনবোধ নিয়ে বেড়ে উঠা এই শিশুরা তাদের নিজেদের পরিবারে, কর্মস্থলে, পথে কিংবা রাত্রিযাপনে বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।  একশ্রেনীর মানুষ তাদের এই দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে ব্যবহার করছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে।  ফলে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে এইসব শিশুদের সাধারণ বিকাশ, লঙ্ঘিত হচ্ছে শিশু অধিকার, এবং এরা ক্রমাগত ধাবিত হচ্ছে অন্ধকার ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনে।  এইসব শিশুদের প্রায় ৮৫ শতাংশ যুক্ত হয়ে পড়ছে মাদকাসক্তে। অন্ধকার বিভীষিকাময় জীবন তাদের হাতছানি দিচ্ছে।
তাই এই সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য একটি বিরাট সামাজিক সমস্যা ও হুমকী।  আর এই সমস্যার উৎপত্তির মূল কারণ হলো ক্ষুধা, দারিদ্রতা, জনসংখ্যার আধিক্য, বেকারত্ব আর শিক্ষার অভাব।  বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা “একটি শিশুও রাস্তায় থাকবে না”।  জাতীয় শিশুনীতি  ২০১১ এর ৬.২.৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে “পথশিশু সহ স্কল দরিদ্র্য শিশুর পুনর্বাসন ও যথাযথ বিকাশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা বলয় সম্প্রসারিত করতে হবে”। আন্তর্জাতিক শুশু অধিকার সনদের ২০ নং অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এ বলা হয়েছে “পারিবারিক পরিবেশ থেকে যে শিশডিসাময়িক বা চিরতরে বঞ্চিত বা স্বার্থ রক্ষায় যে সকল শিশুর পারিবারিক পরিবেশ উন্মুক্ত নয় সে সকল শিশু রাষ্ট্র থেকে বিশেষ সুরক্ষা ও সহায়তার অধিকারী”। জাতীয় শিশুনীতি ও শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়নে সরকারে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ড্যাফোডিল পরিবার এই সকল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, তাদের শারীরিক , মানসিক ও নৈতিক বিকাশ, আনুষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা, ভরণ-পোষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে গড়ে তুলছে “ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অব সোশ্যাল সাইন্সেস-ডিআইএসএস”

ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় ৪০০০ হাজার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ডিআইএসএস। এখানে ছেলেমেয়ে উভয়েই সমান সুবিধা ভোগ করবে। সমন্বিত সেবার আওতায় এইসব শিশুদের পারিবারিক স্নেহে, আদর্শ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে। যেখানে থাকছে বিনামূল্যে খাদ্য, আবাসন, শিক্ষা, ও চিকিৎসা সুবিধা। যাদেরকে সহযোগিতা করার কেউ নেই, তাদের জন্য রয়েছে ডিআইএসএস শিশু হোম। আপনাদের সকলের সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য। সকলের মিলিত প্রেচেষ্ঠাই পারে সেই সকল শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করতে এবং সমাজ থেকে ক্ষুধা ও দরিদ্রতা দূর করতে। তাই আপনার সামান্য সহযোগিতায় বদলে যেতে পারে একজন সুবিধাবঞ্চিত শিশুর আগামী।

27
Children with autism were able to improve their social skills by using a smartphone app paired with Google Glass to help them understand the emotions conveyed in people's facial expressions, according to a pilot study by researchers at the Stanford University School of Medicine.

Prior to participating in the study, Alex, 9, found it overwhelming to look people in the eye. Gentle encouragement from his mother, Donji Cullenbine, hadn't helped. "I would smile and say things like, 'You looked at me three times today!' But it didn't really move the bar," she said. Using Google Glass transformed how Alex felt about looking at faces, Cullenbine said. "It was a game environment in which he wanted to win -- he wanted to guess right -- and he got an instant reward when he did."

The therapy, described in findings to be published online Aug. 2 in npj Digital Medicine, uses a Stanford-designed app that provides real-time cues about other people's facial expressions to a child wearing Google Glass. The device, which was linked with a smartphone through a local wireless network, consists of a glasses-like frame equipped with a camera to record the wearer's field of view, as well as a small screen and a speaker to give the wearer visual and audio information. As the child interacts with others, the app identifies and names their emotions through the Google Glass speaker or screen. After one to three months of regular use, parents reported that children with autism made more eye contact and related better to others.

The treatment could help fill a major gap in autism care: Right now, because of a shortage of trained therapists, children may wait as long as 18 months after an autism diagnosis to begin receiving treatment.

'Really important unmet need'

"We have too few autism practitioners," said the study's senior author, Dennis Wall, PhD, associate professor of pediatrics and of biomedical data science. Early autism therapy has been shown to be particularly effective, but many children aren't treated quickly enough to get the maximum benefit, he said. "The only way to break through the problem is to create reliable, home-based treatment systems. It's a really important unmet need."

Autism is a developmental disorder that affects 1 in 59 children in the United States, with a higher prevalence in boys. It is characterized by social and communication deficits and repetitive behaviors.

The researchers named the new therapy "Superpower Glass" to help make it appealing to children. The therapy is based on applied behavior analysis, a well-studied autism treatment in which a clinician teaches emotion recognition using structured exercises such as flash cards depicting faces with different emotions. Although traditional applied behavior analysis helps children with autism, it has limitations: It must be delivered one-on-one by trained therapists, flash cards can't always capture the full range of human emotion and children may struggle to transfer what they learn to their daily lives.

Eight core facial expressions

Wall's team decided to try using applied behavior analysis principles in a way that would bring parents and everyday situations into the treatment process. They built a smartphone app that uses machine learning to recognize eight core facial expressions: happiness, sadness, anger, disgust, surprise, fear, neutral and contempt. The app was trained with hundreds of thousands of photos of faces showing the eight expressions, and also had a mechanism to allow people involved in the study to calibrate it to their own "neutral" faces if necessary.

Typically developing children learn to recognize emotions by engaging with people around them. For children with autism, it's different. "They don't pick those things up without focused treatment," Wall said.

In the study, 14 families tested the Superpower Glass setup at home for an average of 10 weeks each. Each family had a child between the ages of 3 and 17 with a clinically confirmed autism diagnosis.

The families used the therapy for at least three 20-minute sessions per week. At the start and end of the study, parents completed questionnaires to provide detailed information about their child's social skills. In interviews, parents and children also gave feedback about how the program worked for their families.

The researchers designed three ways to use the face-recognizing program: In "free play," children wear Google Glass while interacting or playing with their families, and the software provides the wearer with a visual or auditory cue each time it recognizes an emotion on the face of someone in the field of view. There are also two game modes. In "guess my emotion," a parent acts out a facial expression corresponding to one of the eight core emotions, and the child tries to identify it. The game helps families and researchers track children's improvement at identifying emotions. In "capture the smile," children give another person clues about the emotion they want to elicit, until the other person acts it out, which helps the researchers gauge the children's understanding of different emotions.

Good reviews from families

Families told the researchers that the system was engaging, useful and fun. Kids were willing to wear the Google Glass, and the devices withstood the wear and tear of being used by children.

Twelve of the 14 families, including Alex's, said their children made more eye contact after receiving the treatment. A few weeks into the trial, Alex began to realize that people's faces hold clues to their feelings.

"He told me, 'Mommy, I can read minds!'" Cullenbine said. "My heart sang. I'd like other parents to have the same experience."

Families whose children had more severe autism were more likely to choose the game modes rather than free play, the researchers reported.

The children's mean score on the SRS-2, a questionnaire completed by parents to evaluate children's social skills, decreased by 7.38 points during the study, indicating less severe symptoms of autism. None of the participants' SRS-2 scores increased during the study, meaning nobody's autism symptoms worsened. Six of the 14 participants had large enough declines in their scores to move down one step in the severity of their autism classification: four from "severe" to "moderate," one from "moderate" to "mild" and one from "mild" to "normal."

The results should be interpreted with caution since the study did not have a control arm, Wall said. However, the findings are promising, he added.

Parents' comments in interviews helped illustrate the improvements, he said. "Parents said things like 'A switch has been flipped; my child is looking at me.' Or 'Suddenly the teacher is telling me that my child is engaging in the classroom.' It was really heartwarming and super-encouraging for us to hear," Wall said.

His team is currently completing a larger, randomized trial of the therapy. In addition, they also plan to test the therapy in children who have just been diagnosed with autism and are on a waiting list for treatment. Stanford University has filed a patent application for the technology.
[/font][/size][/size]
Source:
https://www.sciencedaily.com/releases/2018/08/180802102417.htm=
[/size][/font][/size]

28
Events organised by DISS / Souhardo Children Festival - 2018
« on: November 21, 2018, 10:00:55 PM »
Maybe we never think that how much lucky we are in this world that we have loving parents, we always get all kinds of facilities to live a comfortable life but the distressed children of our society don't get the same opportunity for their bad luck. Though they also have the right to lead a beautiful life on this earth.

DISS always try to give them these opportunities. Its continuation like previous year, SOUHARDO has also organized the nice program named "World Children's Day- 2018 cooperated by Daffodil Institute of Social Sciences (DISS) in this year also. Total 70 distressed children and 50 Volunteers have participated in this program. Professor Dr. Yousuf Mahbubul Islam; Honorable Vice-Chancellor, Daffodil International University was also present in this program.

Today the children have spent their time according to their own way. They have played, have sung and danced in this program. It seems that today was their dream day. DISS wants to make special their every single day of their life not only one day in a year. DISS will work with these disadvantaged children in near future InshahAllah! Cause only children can enlighten society as well.

Thanks to Mr. Md. Sabur khan Sir, Honorable Chairman of Daffodil Family for giving the heartiest support to make this program meaningful.


https://www.linkedin.com/feed/update/urn:li:activity:6470725191944273920

29
        
সফল মানুষ বলতে শুধু আর্থিক বা পেশাগত দিক থেকে সফল কোন ব্যক্তিকে বোঝায় না। একজন মানুষ তখনই প্রকৃতভাবে সফল হতে পারে যখন শিক্ষায়, ধ্যানে, জ্ঞানে এবং সমাজের বিপন্ন মানুষের বিপদে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেবার মহত্ব অর্জন করতে পারে। এমন একজন সফল মানুষ হলেন আমাদের ড্যাফোডিল ফ্যামিলির সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মোঃ সবুর খান। এর আগেও স্যারের সফলতা নিয়ে সংবাদ মাধ্যম সহ অন্যান্য মাধ্যমগুলোতে লেখালেখি হয়েছে। কোথাও উনি একজন সফল উদ্যোক্তা, কোথাও ব্যবসায়ী, কখনো শিক্ষাভাজন হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন তিনি।
আজ সে বিষয়ে যাচ্ছি না। আজ বলবো অন্যরকম স্যারের গল্প। যিনি শুধু পেশাগতই নন, পারিবারিক এবং সামজিক জীবনেও অত্যন্ত সফল একজন মানুষ। অনেক সফল মানুষই যেখানে সর্বক্ষেত্রে সফল হতে পারেন না এমনকি পেশাগত সাফল্যের পেছনে দৌড়ে কখনো কখনো পরিবার থেকেও বিচ্ছিন্ন সময় কাটান, আমাদের স্যার সেখানে সমানতালে নিজের পরিবারের দিকেও যত্নবান। উনি একজন ভালো বাবা, একজন ভালো অভিভাবক, একজন ভালো নেতৃত্বদানকারী, সর্বোপরি একজন সজ্জন ব্যক্তি। না বললে কখনোই যা জানা হবে না অথচ সেটা জানা আমাদের জন্য, সমাজে একজন ভালো মানুষ হবার জন্য অসম্ভব জরুরি। হয়তো আরো অনেকেরই দর্শন এইবিষয়গুলোতে একই, কিন্তু আজ এ নিয়ে লিখতেই হচ্ছে। এতো অসম্ভব ব্যস্ততার মাঝেও উনি ভুলে যান না যে উনি একজন বাবা। লেখকের লেখার মত পৃথিবীর অন্যসকল ভালো বাবাদের মত উনিও সন্তানদের কাছে শ্রেষ্ঠ একজন বাবা।



এ প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগদেবার পর প্রথম একটি রাউন্ডটেবিল ডিস্কাশনে যেদিন অংশ নিয়েছিলাম, সেই মিটিং এর বিষয়বস্তু ছিলো " এক্সপার্ট রিটায়ার্ড পিপল এসোসিয়েশন " সেখানে নিজের বাবার কথা শ্রদ্ধা ভরে বলতে গিয়ে এই মানুষটি কেঁদে ফেলেছিলেন। সবার মত আমার চোখ এড়ায়নি সেই বিষয়। মা-বাবার প্রতি ঠিক কতখানি শ্রদ্ধাশীল হলে কারো চোখে সর্বসমক্ষে কান্না চলে আসে তা আমার জানা নেই। তবে উনার মত একজন মানুষ যখন তার বাবার কথা বলতে গিয়ে ছোট্ট শিশুর মত কেঁদে ফেলেন, তখন এই মানুষটির আত্মার মহত্ব বিচার করার ক্ষমতা আমাদের মত সাধারনের সাধ্যে থাকে না।
 
এই কিছুদিন আগে উনি হঠাৎ করে উনি উনার অফিসের সবাইকে ডাকলেন, কোন কারনে উনার মন বিক্ষিপ্ত ছিলো। সবাই যখন উনার রুমে উপস্থিত হলো উনি তখন গম্ভীর। চলে যেতে বললেন সবাইকে। কারো সাথেই কথা বলেন নি।
শুধু বলেছিলেন, "যাও সবাই! কারো সাথে কথা বলতে চাচ্ছিনা এখন”। সবাই যার যার মত চলে আসলো রুমে। খানিক পরেই আবার যখন ডেকে নিলেন, তখন তিনি চুপচাপ, শান্ত। স্বভাবসুলভ বলতে শুরু করলেন। "তোমরা তো জানো আমাকে কত রকম কাজের দায়িত্ব নিতে হয়" তোমাদের সাথে রাগ হয়ে কথা বললে তো মন খারাপ হয় তোমাদের। কিন্তু তোমরা নিশ্চয়ই বোঝ, যাই বলি না কেন সেটা তোমাদের ভালোর জন্যই বলা" অর্থাৎ একটু আগের রাগের জন্য কনফেশন। উনি বকা দেবেন, সামান্য রাগও হবেন, শাসন করবেন সেটাই স্বাভাবিক কারন সেটা উনার অধিকার। কিন্তু উনার এম্পলয়িদের উপর কোন কারনে সামান্য রাগ হলে উনি নিজেই বেশি দুঃখ পান সেটা আমাদের অজানা নয়। 'আত্মা' কত বড় মাপের হলে এমন হয় জানা নেই স্যার। আমার দুর্ভাগ্য যে আমি সেদিন ছিলাম না। আমার প্রজেক্ট এর কাজে আমি সদরঘাট গিয়েছিলাম। ফিরে এসে যখন শুনলাম তখন নিজেকে শাসন এবং স্নেহ বঞ্চিত লেগেছে। মনে হচ্ছিলো, আহা কেন যে ছিলাম না তখন। কেন যে বকা খেলাম না। আর শেষে স্নেহের কথা, অভিব্যক্তি শুনতে পেলাম না।



আমি কখনো দেখিনি। কেউ উনার কাছে কিছু চেয়ে শূন্য হাতে ফিরে গেছেন। অত্যন্ত সংগত কারনেই আমরা অনেক সময় অনেক কিছু বুঝি। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করার সুবাদে অনেক রকম লোকের সাথেই কথা বলতে হয়। কখনো কখনো এমন কিছু বিষয় আসে, যেটা বুঝতে পারি হয়তো ভালো হবে না। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। কিন্তু স্যার পজিটিভ। উনি খুব সুন্দর করে বলেন, “সব বিষয়েই পজিটিভ কিছু আছে। ফারহানা দেখো তো বিষয় টা” কিংবা বলে দেন, ফারহানা আপনাকে এ ব্যপারে সহযোগিতা করবে। স্যার এই যে আপনি আমাদের উপর এতোটা ভরসা  করেন, সেটার মূল্য দিতে আমাদের বিন্দু মাত্র কার্পন্য করা উচিত নয়।
কখনো কখনো সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে প্রোগ্রাম করতে হয়। তখন যে সাপোর্ট টা দরকার তার পুরোপুরি স্যারের কাছ থেকে পাই। স্যার এ বিষয়গুলোতে অত্যন্ত আন্তরিক। সেক্ষেত্রে অন্য সকল সহকর্মীদের আন্তরিক সহযোগীতায় বাচ্চাদের মুখে হাসি ফোটাতে পারি। অল্প সময়ের জন্য হলেও তাদের গা থেকে “সুবিধাবঞ্চিত” শব্দটি মুছে দিতে পারি।


 
অতিসম্প্রতি ভারতের ”কালিঙ্গা ইন্সটিটিউট অব ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল টেকনোলোজি” ইউনিভার্সিটি উনাকে সম্মানসূচক ডিলিট উপাধিতে ভূষিত করেছেন যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। সেখানে ২৭০০০ ট্রাইবাল শিশু নিয়ে যে প্রতিষ্ঠান, সেটি সপরিবারে ভিজিট করে এসছেন। উনাকে নিয়ে লিখতে গেলে সম্ভবত বই লিখা যাবে। কিন্তু, যে বিষয়টির জন্য লিখতে শুরু করেছিলাম, কিংবা যে মেসেজটি দিতে চাচ্ছি, সেটা হলো, জীবনে সফল হতে হলে আগে প্রতিটা মানুষকে একজন ভালো মানুষ হতে হবে। পিতামাতাকে সর্বোচ্চ সম্মান কিংবা শ্রদ্ধা করতে হবে। তাদের প্রার্থনাতেই আমাদের মঙ্গল। বিচক্ষনতার পরিচয় দিতে হবে সঠিক কাজের জন্য নিজের বুদ্ধিমত্তায়। মানুষের ভালোগুনসমূহ আয়ত্ত্ব করার জন্য অর্থব্যয় করে সুনির্দিষ্ট কোন কোর্সের যতখানি প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন স্যারের মত মহৎপ্রাণকে অনুসরণ করা। মানুষ দেখেই শেখে। আমরা যেহেতু ড্যফোডিল পরিবারের সদস্য বলে নিজেদের দাবী করি, সেহেতু এই পরিবারের প্রধান ব্যক্তিটির আদর্শের দিকে আমদের তাকানো উচিত। সবার আগে আমরা যেন একজন ভালো মানুষ হতে পারি।

30



আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি বাবা-মা'র সংস্পর্শে থেকে আমরা কতোটা ভাগ্যবান? হয়তো সেইভাবে কেউ কখনো ভাবি নি! একবার ভেবে দেখে অনুধাবন করতে পারেন আসলেই কতোটা ভাগ্যবান আমরা। ফ্রেমে যাদের দেখছেন তাদের অধিকাংশই এইদিক দিয়ে আমাদের মতো ভাগ্যবান না! কোন না কোন কারণে তারা তাদের বাবা-মা থেকে বেশ দূরে। তাদের স্থান আজ দেশের কোন না কোন শেল্টার হোমে। তাদের মাথার উপর বাবা-মা'র আদর, ভালবাসা, সোহাগ এক কথায় বাবা-মা নামক ছাদটা নেই। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! তাই না? তারপরও সবাই নিজের চেষ্টায় পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে, নিজে কিছু করার চেষ্টা করছে। Daffodil Institute of Social Sciences (DISS) তাদের পথ চলাকে কিছুটা মসৃণ করতে তাদের পাশে থেকে কিছু করতে চায়। সেই লক্ষ্যে তাদের জন্য বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রফেশনাল ট্রেইনিং এবং কর্মশালার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে। শুধু ট্রেইনিং এবং কর্মশালাই নয় সমাজে একজন ভাল মানুষ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে গেলে যা যা দরকার তার সবকিছু করবে Daffodil Institute of Social Sciences (DISS). যাতে করে তারা প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজেকে আলোকিত করার পাশাপাশি সমাজটাকে আলোকিত করে।

ধন্যবাদ Sabur স্যার! Daffodil Institute of Social Sciences (DISS) এর মতো যুগপোযুগী উদ্যোগ নেয়ার জন্য।



Pages: 1 [2] 3 4