Author Topic: রিজিকের মালিক আল্লাহ  (Read 4455 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

ashraful.diss

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 387
  • জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না
    • View Profile
    • Email
রিজিকের মালিক আল্লাহ
« on: April 05, 2023, 12:45:38 AM »

রিজিকের মালিক আল্লাহ
 
রিজিকের মালিক কে? পীর-মাশায়েখ নাকি অফিসের বস? মা-বাবা নাকি অন্য কেউ? কখনও কি ভেবে দেখেছেন? আপনি এক বছরে কত টাকা আয় করবেন, কোন খাবার কতটুকু খাবেন- সবকিছুই কিন্তু আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। কেবল আপনি নন, পৃথিবীর সব প্রাণীর রিজিকের মালিক তিনিই। রিজিক কমানো-বাড়ানোও তাঁর ইচ্ছাধীন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ অসংখ্য জায়গায় স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন- কেবল তিনিই রিজিকের মালিক।

ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা তার রিজিক বর্ধিত করেন এবং যার জন্য ইচ্ছা তা সীমিত করেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক অবহিত।’ (সুরা আনকাবুত : ৬২)। তবে এই রিজিক আপনার-আমার হাতে আসে নানা মাধ্যম হয়ে। কখনও মা-বাবা, কখনও বস, কখনও সরকারের মাধ্যমে আমাদের হাতে পৌঁছে।

 
হঠাৎ করে চাকরি চলে যেতে পারে। ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে। কিছুদিন পর আবার ব্যবসায় ব্যাপক উন্নতি হতে পারে, চাকরিতে হতে পারে পদোন্নতি। এই উন্নতি-অবনতিও আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। তাঁর নির্দেশেই এমনটা হয়। আর এটাও মানুষের জন্য শিক্ষণীয় বিষয়। সুরা রুমের ৩৭নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তারা কি লক্ষ করে না যে, আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা তার রিজিক প্রশস্ত করেন অথবা তা সীমিত করেন? এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মোমিন সম্প্রদায়ের জন্য।’

প্রকৃতিতে কিছু প্রাণী আছে যারা খাদ্য মজুদ করে না। প্রতিদিনই খাবার সংগ্রহ করে খায়। এসব প্রাণীর রিজিকের দায়িত্বও আল্লাহর। তিনি এদেরকে না খাইয়ে রাখেন না। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে ‘এমন কত জীবজন্তু আছে যারা নিজেদের খাদ্য মজুদ রাখে না, আল্লাহই রিজিক দান করেন তাদেরকে ও তোমাদেরকে এবং তিনি সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞ।’ (সুরা আনকাবুত : ৬০)। আল্লাহ যদি কারও রিজিক বন্ধ করে দেন, তবে তা চালু করার শক্তি কারও নেই। আল্লাহ বলেন, ‘এমন কে আছে যে তোমাদের রিজিক দান করবে, যদি তিনি রিজিক বন্ধ করে দেন? বস্তুত তারা অবাধ্যতা ও সত্যবিমুখতায় অবিচল রয়েছে।’ (সুরা মুলক : ২১)


পাখির কথাই ধরা যাক। তার খাবার মজুদের গুদাম নেই। সকালে ক্ষুধাপেটে বের হয়। বিকালবেলা কিন্তু ভরাপেটেই ঘরে ফিরে। হাদিসে এসেছে, ‘যদি তোমরা আল্লাহর ওপর সঠিক ও যথাযথভাবে ভরসা করো, তাহলে তিনি তোমাদের পাখির মতো জীবিকা দান করবেন, ক্ষুধার্ত অবস্থায় সবাই বের হয়ে পেট ভরে বাসায় ফিরবে।’ (আহমদ, তিরমিজি)।

মানুষ মানুষের কাছে সামান্য কারণে মাথা নত করে, রিজিক প্রার্থনা করে, হয়তো বেতন বা বোনাস বৃদ্ধির জন্য, যা সম্পূর্ণ নাজায়েজ। বস যত ক্ষমতাবানই হোক, তার কাছে মাথা নত করা যাবে না। অবশ্য বসকে সম্মান করতে বা তার সামনে বিনয় প্রকাশে বাধা নেই। কেবল মাথা নত করা যাবে না বা তাকে রিজিকদাতা মনে করা যাবে না। সৎ থেকে কাজ করতে হবে। ভরসা করতে হবে আল্লাহর ওপর। রিজিক আল্লাহই বাড়িয়ে দেবেন। অন্যদিকে কাজ না করে হাত গুটিয়ে থাকলেও হবে না। রিজিক তো আর এমনি এমনি বৃদ্ধি পেতে পারে না। হজরত ওমর (রা.) বলেন, তোমাদের কেউ যেন জীবিকার সন্ধান না করে বসে বসে এ কথা না বলে, হে আল্লাহ আমাকে রিজিক দাও, কারণ তোমরা জান আকাশ কখনও স্বর্ণ বর্ষণ করে না। বান্দার প্রচেষ্টা অনুযায়ী আল্লাহ তার তাকদির নির্ধারণ করেন। তাই বস ততটুকুই বেতন বৃদ্ধি করতে পারবেন। যতটুকুু আপনার জন্য আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন। তাই বসের অতিরিক্ত মোসাহেবি করা অনুচিত।

 
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, (কৃত পাপের জন্য) তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল। (তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলে) তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, আর তোমাদেরকে ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগবাগিচা দেবেন আর দেবেন নদীনালা। (সুরা নুহ : ১০-১২)। আর তাকে তার ধারণাতীত উৎস হতে দান করবেন রিজিক, যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর নির্ভর করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ করবেনই, আল্লাহ সব কিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা। (সুরা তালাক : ৩)। হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে ইসতেগফার পড়বে আল্লাহ তায়ালা তাকে সব দুশ্চিন্তা ও সঙ্কটাপন্ন অবস্থা থেকে মুক্ত করে দেবেন এবং ধারণাতীতভাবে তাকে জীবিকা দান করবেন। (আবু দাউদ)। তাই দুনিয়ায় সে যত বড়ই হোক না কেন, তার কাছে নয় বরং রিজিক আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। বিশ্বাস যেন এমন হয়, রিজিক বৃদ্ধির ক্ষমতা কেবল আল্লাহর। আল্লাহর কাছেই করতে হবে গুনাহ মাফের আর্জি ও রিজিক বৃদ্ধির আকুতি।

জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের (নারী ও পুরুষ) উপর ফরজ । জ্ঞানের শহর হলেন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) আর সেই শহরের দরজা হলেন হজরত আলী (রাঃ) । জ্ঞান ব্যতীত কর্ম অর্থহীন আবার কর্ম ব্যতীত জ্ঞান অর্থহীন। জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না, ইবাদত কর তবে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে করোনা ।