Author Topic: "জীবিকা" চাঁদপুর: একটি অনুসরণযোগ্য উন্নয়  (Read 24 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

ashraful.diss

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 431
  • জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না
    • View Profile
    • Email
"জীবিকা" চাঁদপুর: একটি অনুসরণযোগ্য উন্নয়ন মডেল

ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন পরিচালিত “জীবিকা” চাঁদপুর প্রকল্পটি কেবল একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের উন্নয়নেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি কার্যকর এবং অনুসরণযোগ্য উন্নয়ন মডেল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। এর কর্মপদ্ধতি, লক্ষ্য এবং অর্জিত সাফল্য অন্যান্য ব্যক্তি, সংস্থা এবং অঞ্চলের জন্য একটি মূল্যবান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

“জীবিকা” চাঁদপুর এমন একটি সমন্বিত উন্নয়ন কৌশল অনুসরণ করে যা দারিদ্র্য বিমোচন, দক্ষতা উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং স্থানীয় সম্পদ ও সেবার সুষ্ঠু ব্যবহারের উপর জোর দেয়। এই বহুমুখী approaches যেকোনো অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

"জীবিকা" মডেলের অনুসরণযোগ্য দিকসমূহ:

অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি (Participatory Approach): “জীবিকা” স্থানীয় জনগণের চাহিদা ও প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেয় এবং তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে। যেকোনো উন্নয়ন উদ্যোগের সাফল্যের জন্য এই অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য সংস্থাও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে সরাসরি আলোচনা করে এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম পরিকল্পনা করতে পারে।

দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি: প্রকল্পটি বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ প্রদান করে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে। এই মডেল অনুসরণ করে অন্যান্য অঞ্চলও তাদের স্থানীয় অর্থনীতির চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করতে পারে, যা বেকারত্ব কমাতে সহায়ক হবে।

নারীর ক্ষমতায়নের উপর জোর: “জীবিকা” নারীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। অন্যান্য উন্নয়ন উদ্যোগেও নারীদের স্বাবলম্বী করার জন্য প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্র ঋণ এবং নেতৃত্ব বিকাশের মতো কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য: “জীবিকা” পরিবেশ সচেতনতা এবং স্থানীয় সম্পদের টেকসই ব্যবহারের উপর জোর দেয়। অন্যান্য অঞ্চলও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন কৌশল অনুসরণ করে দীর্ঘমেয়াদী সুফল অর্জন করতে পারে।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: “জীবিকা” তার কার্যক্রম পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখে। যেকোনো উন্নয়ন মডেলের সাফল্যের জন্য এই দুটি নীতি অপরিহার্য।

স্থানীয় অংশীদারিত্ব: প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং অন্যান্য stakeholders-দের সাথে সহযোগিতা করে কাজ করে। এই সমন্বিত উদ্যোগ অন্যান্য অঞ্চলের উন্নয়নেও অনুকরণীয় হতে পারে।

ফলাফল-ভিত্তিক পদ্ধতি (Result-Oriented Approach): “জীবিকা” তার কার্যক্রমের প্রভাব নিয়মিত মূল্যায়ন করে এবং প্রয়োজনে পরিবর্তন আনে। এই ফলাফল-ভিত্তিক পদ্ধতি অন্যান্য উদ্যোগকেও তাদের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারে।

রোল মডেল সৃষ্টি: “জীবিকা” এমন ব্যক্তিদের উত্থানে সহায়তা করে যারা তাদের সাফল্যের মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করে। অন্যান্য উন্নয়ন উদ্যোগেও সফল ব্যক্তিদের উদাহরণ তুলে ধরে অন্যদের উৎসাহিত করা যেতে পারে।

কেন "জীবিকা" একটি অনুসরণযোগ্য মডেল:

প্রমাণিত সাফল্য: “জীবিকা” চাঁদপুর অঞ্চলে দারিদ্র্য হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। এর বাস্তব প্রমাণ অন্যান্যদের এই মডেলের কার্যকারিতা সম্পর্কে আশ্বস্ত করতে পারে।

নমনীয়তা: “জীবিকা”র মূলনীতি এবং কৌশলগুলো নমনীয়, যা বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় প্রেক্ষাপট ও চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে প্রয়োগ করা যেতে পারে।

সাশ্রয়ী ও কার্যকর: “জীবিকা” সীমিত সম্পদের মধ্যেও কার্যকরভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে। এটি অন্যান্য সংস্থাকেও কম খরচে টেকসই উন্নয়নের পথ দেখাতে পারে।

পরিশেষে বলা যায়, “জীবিকা” চাঁদপুর একটি অনুসরণযোগ্য উন্নয়ন মডেল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। এর কর্মপদ্ধতি, অর্জিত সাফল্য এবং স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণের উপর গুরুত্ব প্রদান অন্যান্য ব্যক্তি, সংস্থা এবং অঞ্চলের জন্য একটি মূল্যবান দিকনির্দেশনা হতে পারে। এই মডেল অনুসরণ করে অন্যান্য পিছিয়ে পড়া অঞ্চলও তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে এবং একটি উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে সক্ষম হবে। প্রয়োজন শুধু আন্তরিক প্রচেষ্টা, সঠিক পরিকল্পনা এবং “জীবিকা”র মতো একটি কার্যকর মডেলের অনুসরণ।

জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের (নারী ও পুরুষ) উপর ফরজ । জ্ঞানের শহর হলেন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) আর সেই শহরের দরজা হলেন হজরত আলী (রাঃ) । জ্ঞান ব্যতীত কর্ম অর্থহীন আবার কর্ম ব্যতীত জ্ঞান অর্থহীন। জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না, ইবাদত কর তবে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে করোনা ।