Author Topic: একজন ইশা মিয়ার ঋণমুক্তির গল্প  (Read 5568 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Farhana Haque

  • Administrator
  • Newbie
  • *****
  • Posts: 48
  • Gender: Female
  • You will never have this day again! Make it count!
    • View Profile
    • Email
একজন ইশা মিয়ার ঋণমুক্তির গল্প


গত ০৪.০৩.২০২০ইং তারিখে #ড্যাফোডিল_ফাউন্ডেশন এর সহযোগীতায় রিক্সাওয়ালা দ্বীন মোহাম্মদ ইশা'র নেওয়া সকল ঋণ পরিশোধ করা হলো।

গত কয়েকদিন পূর্বে রিক্সা ওয়ালা দ্বীন মোহাম্মদ ইশা'র সাথে পরিচয় হয় আমাদেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র সাজ্জাদের সাথে। কথা প্রসঙ্গে জানা গেলো দৈনিক ২০০ টাকা হারে সুদ দেওয়ার শর্তে রিক্সা ওয়ালা দ্বীন মোহাম্মদ ইশা'র ২০ হাজার টাকা ধার নেবার গল্প ও তার দূর্দশার কথা। ২০১৬ সালে মাহফূজা বেগম (ছদ্মনাম) এর কাছ থেকে উনি ২০ হাজার টাকা ধার করেন ,নিতান্ত নিরুপায় হয়ে। তিনি দৈনিক ২০০ টাকা হারে সুদ দিয়ে আসছিলেন রিক্সা চালিয়ে, কিন্তু মাঝে কিছু দিন অসুস্থ থাকার তিনি রিক্সা চালাতে পারেন নাই যার ফলশ্রুতিতে ঋণের পরিমান বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ হাজার টাকায় এবং হিসাব করে দেখা যায় ২০ হাজার টাকার বিপরীতে লাভই দেওয়া হয়েছে গত ৪২ মাসে প্রায় ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকার উপরে।

বিষয়টি অবগত হবার সাথে সাথেই ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন উদ্যোগ নেয় লোকটিকে সাহায্য করার।  ঘটনার সত্যতা জানতে প্রথমে রায়ের বাজার বস্তি এলাকায় ভিক্টিম ইশা মিয়ার বাড়িতে যাওয়া হয়, তাকে অবগত না করেই। এলাকার লোকজনদের থেকে জানা যায়, ঘটনা সত্যি সহ ইশা মিয়ার করুন দিনাতিপাতের কথা। সম্পূর্ন ঋণ পরিশোধের পর আমরা দ্বীন মোহাম্মদ ইশা'র ছোট মেয়েকে #জ্ঞানের_পাঠশালা'র শিশু শ্রেণীতে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

আল্লাহর অশেষ রহমতে ইশা মিয়া এখন পুরোপুরি সুদ ও ঋণ মুক্ত। এবার হয়তো ঘুরে দাড়াবেন ইশা ও তার পরিবার। আমরা আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় করতে পেরেছি সামান্য এই মহৎ কাজটুকু। একটি পরিবার অন্তত বেঁচে গেছে ঋণ কঠোর ফাঁদ থেকে।

মানুষ মানুষের জন্য। জীবন জীবনের জন্য। ইশা মিয়ার এই ঘটনাটি শুধু ঋণমুক্তির ঘটনা নয়, বরং এটি সচেতনহবার মত একটি ঘটনাও। না পারা শর্তে কেউ এমন সুদের ফাঁদে যেন না পরে। এই শহরেই এমন অনেক মাহফুজা বেগম (ছদ্ম নাম) রয়েছেন, যারা সাম্ন্য কিছু টাকা ধার দেওয়ার শর্তে শত শত মানুষ কে ফাঁদে ফেলছে। হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। গরীব দিনমজুর কিংবা রিক্সাচলকদের কাছ থেকে দৈনিক চড়া সুদ গ্রহন করে ঢাকা শহরে গড়ে তুলছে অট্টালিকা । অন্যদিকে ভিক্টিম সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে সম্পূর্ণ ঋণের সহ সুদের বোঝা টানতে টানতে।

রিক্সার গ্যারেজে পাওনাদারদের টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে ঠিক তখনই ইশা মিয়ার এমন একটি হাসি মাখা মুখ দেখা গেল। ইশা মিয়া ভালো  থাকুক তার পরিবার নিয়ে। আমরা সবাই চাইলেই পারি খুব সামান্য পরিসরে হলেও সমাজের বঞ্চিত মানুষদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে। মানবিকতার জয় হউক।
কারো মত নয় আমরা হবো যার যার মত। প্রতিজন "আমি" হবো এক একটি আদর্শ। জীবন একটিই। সময় অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। নিজেকে প্রমান করার এবং ভালো কাজ করার এখনই সময়।