• Welcome to Daffodil Foundation Forum.
 

News:

Daffodil Foundation is a non-profit organization in Bangladesh that aims to improve the quality of life for current and future generations.

Main Menu

কন্যা শিশু: যেভাবে তাদের আত্মবিশ্বাসী হতে 

Started by Farhana Haque, October 13, 2020, 11:06:28 AM

Previous topic - Next topic

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Farhana Haque




বছর দুয়েক আগে সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে পৃথিবী ও পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষায় বড়দের আরও অনেক বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালনের দাবিতে নিজের স্কুলের সামনে একা প্ল্যাকার্ড হাতে ধর্মঘটে বসেছিলেন।

মাত্র দুই বছরে এই কিশোরী জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্দোলনে সারা বিশ্বের দূত হয়ে উঠেছেন। তার ডাকে জড়ো হয় লক্ষ লক্ষ মানুষ।

একজন কন্যা শিশু যেন নিজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, বাবা, ভাই, স্বামী এবং শেষ জীবনে ছেলে তার দায়িত্ব নেবে - এমনটা না ভেবে "আমিও পারি" এই মনোভাব নিয়ে সামনে এগোতে পারে, সেই আত্মবিশ্বাস কীভাবে অর্জন করা সম্ভব?

কন্যা শিশুকে নিজের ব্যাপারে এই আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে কিভাবে শেখানো যায়?

আজ জাতিসংঘের বিশ্ব কন্যা শিশু দিবসে মা-বাবার জন্য মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও শিশুদের বিকাশ বিষয়ক চিকিৎসকের পরামর্শ।

সিদ্ধান্ত ও দায়িত্ব

আত্মবিশ্বাস একদম ছোটবেলা থেকেই তৈরি করতে হয়, বলছেন মনোবিজ্ঞানী ডা. ইশরাত শারমিন রহমান।

তিনি বলছেন, বাবা-মা শিশুর তার সাথে ছোটবেলা থেকে যে আচরণ করবে তার উপর নির্ভর করে শিশু আত্মবিশ্বাসী হবে কি হবে না।

ছোট বেলা থেকেই কন্যা শিশুর মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা তৈরি করতে হবে।

তাকে কথা বলতে দিতে হবে। সেজন্য ছোট বেলা থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে দেবার কথা বলছেন তিনি।

"তুমি মেয়ে, তুমি কি বোঝ, এসব কথা না বলে ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নিতে দেয়া। যেমন তাকে জিজ্ঞেস করা সকালের নাস্তায় সে কি খেতে চায়? ডিমটা সেদ্ধ হবে নাকি পোচ? কন্যা শিশুকে তার উপযোগী কোন দায়িত্ব দেয়া। সেটি পেরে উঠলে তার মনে হবে আমিও পারি।"

তিনি বলছেন, ছোট বেলায় বাবা ও মায়ের মধ্যে যে সম্পর্কে শিশু দেখে তার উপর ভিত্তি করে নিজের অবস্থান ঠিক করে নেয় শিশু, বলছেন ডা. ইশরাত শারমিন। সে যদি দেখে পরিবারে বাবাই সব সিদ্ধান্ত নেয়, মায়ের কোন বক্তব্য থাকে না - তাহলে মেয়ে শিশুরা সেটাই শিখবে। এমন পারিবারিক পরিবেশ মেয়ে শিশুদের আত্মবিশ্বাস তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে।

সমালোচনা ও অন্যদের সাথে তুলনা না করা

বিশ্বব্যাপী সৌন্দর্য নিয়ে কন্যা শিশুকে অনেক বার্তা দেয়া হয়। বিভিন্ন দেশে তার নানা ধরন।

সেন্টার ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজ-এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ইশরাত শামিম বলছেন, "বাংলাদেশে মেয়েদের হয়ত তার পাশের বাড়ির মেয়েটি, বা চাচাতো-খালাতো বোনদের সাথে গায়ের রঙ, চুল নিয়ে তুলনা করা হয়। খুব সরাসরি বলা হয় দেখো ও কত সুন্দর, পরিপাটি, পড়াশুনায় তোমার চেয়ে তোমার কত ভাল। এরকম তুলনা করার কারণে আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়। মেয়েরা নিজেরাও অন্যদের সাথে তুলনা করে।''

তিনি বলছেন, টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকেও মেয়েরা নিজেরা অন্যদের সাথে নিজেদের তুলনা করতে শেখে। তাদের শেখাতে হবে সৌন্দর্যের ধারণা ও মেয়েদের জীবন সম্পর্কে এসব জায়গায় সে যা দেখছে সেটাই বাস্তব দুনিয়া নয়।

শিশুদের বিকাশ বিষয়ক চিকিৎসক ডা. রিয়াজ মোবারক বলছেন, "আমার কাছে অনেক অভিভাবক আসেন যারা মেয়ে বাচ্চার হয়ত কোথাও দাগ রয়েছে তারা সেটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন যে 'মেয়ে বড় হলে কেমন লাগবে'। তারা চিন্তা করেন যে বড় হলে মেয়ের বিয়ে হবে না। বাবা-মায়েদের বুঝতে হবে হবে যে কন্যা শিশু হলে মুখে দাগ বাড়তি ইস্যু নয়।"


ওটা তোমার কাজ নয়, তুমি পারবে না

পৃথিবীর অনেক কিছু আজকাল বদলে গেছে। একসময় মেয়েদের বাইসাইকেল চালানো কটু চোখে দেখা হতো। আর এখন মেয়েরা বিমান চালাচ্ছে।

ডা. ইশরাত শারমিন বলছেন, "বাংলাদেশে বাবা-মায়েরা মেয়ে শিশুদের সব কাজ করে দেন। এটা অতি-ভালবাসার কারণে হতে পারে, অথবা সে পারবে না -এই চিন্তা থেকেও হতে পারে। আগ বাড়িয়ে সব কিছু করে না দেয়া, এতে ভবিষ্যতে নিজে বুদ্ধি করে কিছু করার ক্ষমতা নষ্ট হয়। এই কারণেই হয়ত আমরা দেখি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও অনেক কাজে তার সাথে একজন পুরুষ থাকে।"

পরিবারে ছেলে ও মেয়েকে সমান সুযোগ দেয়ার কথা বলছেন ডা. শারমিন।

"মেয়েটিকে একটা পর্যায় পর্যন্ত পড়িয়ে বিয়ে দিতে হবে, এটাই তার একমাত্র গন্তব্য, শুধুমাত্র এমন চিন্তা হয়ত অনেকেই আজকাল আর করেন না। কিন্তু ছেলের শিক্ষার জন্য বাড়তি কোচিং, তার ক্যারিয়ার তৈরিতে বাড়তি আশা এবং সেটি নিয়ে প্রকাশ্যে মেয়েদের সামনে আলাপ করা, এটিও মেয়ে শিশুদের মন ছোট করে এবং আত্মবিশ্বাস কমায়।"

ভাল কাজের প্রশংসা আর ইতিবাচক চিন্তা করতে শেখানোর কথা বলছেন, ডা. শারমিন।

"তুমি পারবে না, এসব না বলে বরং তার কোন সফলতাকে প্রশংসা করা ও পুরস্কৃত করা উচিৎ। তার সফলতাকে প্রশংসা করা উচিত। কোন কিছুতে ভাল না করলেও সেজন্য বকা না দিয়ে সে যে চেষ্টা করছে তার জন্যেও তাকে প্রশংসা করা উচিৎ।"

কন্যা শিশুকে ইতিবাচক চিন্তা করতে শেখানোর কথা বলছেন তিনি।

খাবার ও খেলার সাথে আত্মবিশ্বাসের সম্পর্ক

ডা. রিয়াজ মোবারক বলছেন, "আমার কাছে সব শ্রেণীর বাবা-মায়েরা আসেন। ছেলে ও মেয়ে শিশুদের খাবারে পার্থক্য আজকাল আর আছে বলে আমার মনে হয় না। তবে কৈশোরে পিরিয়ডের জন্য মেয়েদের খাবার বেশি প্রয়োজন হয়। কারণ তখন অনেক সময় রক্ত স্বল্পতা হতে পারে। খাদ্য দিয়ে সেটা পূরণ করতে হয়।"

পুষ্টিবিজ্ঞানী সৈয়দা শারমিন আক্তার বলছেন, খাবার কম খেলে চিন্তা করার ক্ষমতা কমে যায়।

ডা. মোবারক আরও বলছেন, অনেক সময় মেয়েদের ভিটামিন ডি'র ঘাটতি হয় কারণ ছেলেরা বাইরে খেলা করে, তাদের বাইরে কাজে পাঠানো হয়, তারা রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে। ভিটামিন ডি হাড়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও আরও অনেক কিছুর জন্য দরকার।

ডা. ইশরাত শারমিন বলছেন, বাইরে যেতে না দেয়ার কারণ হিসেবে অনেকেই বলেন গায়ের রঙ কালো হয়ে যাবে।

সব ধরনের খেলনা ও খেলতে দেয়া

বাংলাদেশে অনেক বাবা-মা মেয়ে শিশু ও ছেলে শিশুর জন্য যে খেলনা কেনেন, আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা যে খেলনা উপহার দেন - তাতেও নিজের সম্পর্কে শিশুর মনোভাব তৈরি হয়।

"মেয়ে শিশুকে সব ধরনের খেলনা কিনে দিন। ক্রিকেট ব্যাট, সাইকেল, শুধু পুতুল আর রান্নার খেলনা নয়।" বলছেন ডা. ইশরাত শারমিন।

একটা বয়সের পর বাংলাদেশে মেয়েদের খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ডা. রিয়াজ মোবারক মনে করেন মেয়ে শিশুদের সব ধরনের খেলা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে উৎসাহিত করতে দেয়া উচিত।

"জিমে যাওয়া, সাতার কাটা এসব করতে দিলে সেটিও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে। খেলাধুলা, শরীর চর্চা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ আত্মবিশ্বাস ও নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা তৈরি করে।"

সূত্রঃ
https://www.bbc.com/bengali/news-54497528[/size][/color]
কারো মত নয় আমরা হবো যার যার মত। প্রতিজন "আমি" হবো এক একটি আদর্শ। জীবন একটিই। সময় অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। নিজেকে প্রমান করার এবং ভালো কাজ করার এখনই সময়।