Author Topic: “অটিজমঃ তোমার না আমার”  (Read 3584 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Farhana Haque

  • Administrator
  • Newbie
  • *****
  • Posts: 48
  • Gender: Female
  • You will never have this day again! Make it count!
    • View Profile
    • Email
“অটিজমঃ তোমার না আমার”
« on: April 01, 2019, 04:01:34 AM »


২০১৮ সালের ২ এপ্রিল “বিশ্ব অটিজম দিবসে’’ বাংলাদেশের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল এটিএন বাংলায়, মুন্নি সাহার উপস্থাপনায় প্রচারিত হয়েছিল “অটিজমঃ তোমার না আমার” শীর্ষক অনুষ্ঠানটি । অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফারজানা নাজনীন ঝর্ণা বয়স ৩৭, একজন সাহসী মা, যার তিনজন বাচ্চাই অটিজমে আক্রান্ত। তীব্র মনোবলসমন্ন এই মা নিজের যোগ্যতা এবং দক্ষতার দিক দিয়ে অন্য কোন মায়ের চেয়ে কোন অংশেই কম তো নয় ই বরং অনেকাংশেই অসাধারন।
সেদিন তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন তার জীবনের করুন এবং কঠিন পরিস্থিতি সবার সাথে শেয়ার করার জন্য। পারিবারিক এবং সামজিক প্রতিকূলতা পেরিয়েও উনি জীবনে যে চ্যালেঞ্জ গ্রহন করেছিলেন, সেটা অন্য দশের পক্ষে বলতে গেলে অসম্ভব। তিনি সেদিন অসীম সাহসে দেখিয়ে দিতে পেরেছিলেন, সমাজের প্রতিটি মায়ের অসামান্য অবদানকে, এবং আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধকে। সেদিনের সেই অনুষ্ঠানে তিনি শুনিয়েছিলেন তার জীবনের করুন গাঁথা। তিনি চেয়েছিলেন সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এগিয়ে আসুক। যাতে করে তার তিনজন বিশেষ শিশুসহ সমাজের অন্যান্য ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে পারেন। তারা যেন  তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, আর দশটি সাধারন শিশুর মত তারাও যেন সমাজে সকলের সহযোগিতা পায়। একটি বাচ্চাও যেন অবহেলিত না হয়।
 
সেই একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল গ্রুপের সম্মানিত চ্যেয়ারম্যান ডঃ মোঃ সবুর খান। একজন সফল উদ্যোক্তা এবং আইটি প্রফেশনাল হিসেবে যিনি সমাজে প্রতিষ্ঠিত। দেশে, তথ্য প্রযুক্তি ও শিক্ষার পাশাপাশি যিনি চিকিৎসা সেবা বিস্তারেও নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। সমাজে উদ্যোক্তা উন্নয়নের ক্ষেত্রে যার অবদান অসামান্য।  ফারজানা নাজনিন ঝর্নার আর্তিতে স্বপ্রনোদিত ভাবে এগিয়ে আসেন তিনি। বাড়িয়ে দেন সযোগিতার হাত। ফারজানা নাজনীনের করুন এবং কঠিন জীবনের মাঝেই খুঁজে পান, উদ্যম এবং সাহস। নিজ হাতে তুলে নেন বিরাট এক দায়িত্ব।
সেখান থেকেই শুরু হয় নাজনীনের উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্প। নাজনীনের বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ন ব্যক্তিগত অর্থায়ন এবং সহযোগিতায় গড়ে দেওয়া হয় “ট্রিপল স্টার স্পেশাল স্কুল” নামে একটি বিশেষ শিশুদের স্কুল। যেখানে নাজনীনের তিনজন বিশেষ শিশু সহ এ মুহূর্তে আরো প্রায় ১০ জন বিশেষ শিশু রয়েছে। তারা সেখানে সম্পূর্ণ পারিবারিক পরিবেশে লেখাপড়ার পাশাপাশি, খেলাধূলা, সঙ্গীত এবং অন্যান্য সহশিক্ষা কার্যক্রম উপর এর প্রশিক্ষন নিতে পারছে। এতে করে সমাজের অন্যান্য সাধারন শিশুর মত তাদেরও মানসিক এবং শারীরিক বিকাশ ঘটছে।

২০১৮ সালের ২ এপ্রিল নাজনীন ছিলেন কিছুটা হতাশ। তিনি তার সন্তানদের সুন্দর আগামী নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। ঠিক একবছর পরে এসে উনি নিজের অসামান্য মনোবল, কঠিন প্রত্যয় এবং দৃঢ় উদ্যমের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। নিজেকে পরিচিত করেছেন একজন উদ্যোক্তা হিসেবে। আগামী ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল বিশ্ব অটিজম দিবসে, সমাজ তাকে একজন সফল মা এবং একই সাথে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে চিনে নেবেন। যিনি বর্তমানে “ট্রিপল স্টার স্পেশাল স্কুল’’ এর কর্ণধার ।

এই স্কুলের সার্বিক সহায়তায় রয়েছে ড্যাফোডিল গ্রুপ। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে সমাজে একজন সাহসী মা হিসেবে ফারজানা নাজনীনের মুখে হাসি ফোঁটাতে পেরে এবং তাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পেরে আমারা ড্যাফোডিল গ্রুপ সত্যিই আনন্দিত। আমরা কথা দিয়েছিলাম, কথা রাখতে পেরে আমরা মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট  আমরা কৃতজ্ঞ।

https://www.facebook.com/Triple-Star-Special-School-773937419629035/
কারো মত নয় আমরা হবো যার যার মত। প্রতিজন "আমি" হবো এক একটি আদর্শ। জীবন একটিই। সময় অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। নিজেকে প্রমান করার এবং ভালো কাজ করার এখনই সময়।