« on: July 03, 2024, 12:36:15 AM »
রুপচর্চায় অপচয়
সাজ-সজ্জা করার ব্যাপারে ইসলামের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই কিন্তু এর মধ্যে শরয়ী সীমা অতিক্রম করা এবং নিজের সামর্থের প্রতি লক্ষ্য না রাখা ঠিক নয়। পিতা বা স্বামীর মাথার ঘাম পায়ে ফেলা কষ্টার্জিত পয়সাকে এমন নির্দয়তার সাথে অপচয় করা এবং নতুন নতুন ফ্যাশনের কাপড় ও দামী দামী অলংকার জমানোর পিছনে খরচ করা উচিত নয়। অন্ততঃ এ গুলোর ব্যবহার সে সময় না করা যখন পাশাপাশি অন্যান্য মুসলিম বোনেরা এক মুঠো ভাতের জন্য অধীর আগ্রহে প্রহর গুনতে থাকে।
বর্তমানে মহিলারা বিশেষ করে তরুণীরা বিজাতী সংস্কৃতির অনুঃকরণে এমন সব অযথা খরচ বাড়িয়েছে যা জরুরী নয়। আর জীবন যাপন করাও এর উপর নির্ভরশীল নয়। ফ্যাশনের বাহ্যিক চাকচিক্য এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে আয়-উপার্জন যত বেশিই হোক না কেন তাতে প্রয়োজন আর মিটছেনা। তা চরিথার্ত করতে গিয়ে কখনো ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে, ঘৃণিত এই ফ্যাশন ইউরোপিয়ানদের মস্তিস্ক প্রসূত। মুসলিম মহিলাদের কোন মতেই এদের খপ্পরে পড়া ঠিক নয়। এদের অন্ধ অনুসারীদের বাহ্যিক অবস্থা দেখে মনে হবে সুখের বন্যায় ভেসে বেড়াচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার তা নয়। এক দুঃখের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে, শান্তি ও স্নেহের নাম গন্ধও নেই। অনেকে স্নেহ-মমতার আতিশয্যে মেয়েদেরকে ছোটবেলা থেকেই অতিরিক্ত খরচে অভ্যস্ত করে তোলে। ফলে একটু বড় হয়ে তারা হয়ে যায় ফ্যাশন বিলাসী। বিয়ের পর স্বামীর জন্য হয়ে দাঁড়ায় মস্ত বড় বোঝা। স্বামীর সমস্ত আয়-ইনকাম ফ্যাশন বাজেটে পরিণত হয়। পরিণামে পরস্পারিক মতানৈক্য, অসন্তুষ্টি ও ঝগড়া-বিবাদের সূচনা হয়।
আজকাল মহিলারা সারা দিন-ক্ষণ সাজ-সজ্জার পিছনে লেগে থাকায় তাদের কোরআন তেলাওয়াত করার সুযোগ থাকে না। সময় নেই যিকির-আযকার, দুরুদ ও ইস্তেগফারের। দ্বীনি জ্ঞান চর্চার অবকাশ থাকেনা। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। যেখানে আলো নেই সেখানে অন্ধকার স্থান করে নেয়। অনাবাদী জমি আগাছায় ছেয়ে যায়। তদ্রুপ ধর্মীয় জ্ঞান না থাকায় মন-মস্তিস্ক বিদআত ও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তাই ভালমন্দ কিছুই দেখা যাচ্ছে না, দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না মানবিক দোষ-ত্রুটি, মনে হচ্ছে সবই বরাবর। এ কারণে প্রকৃত সৌন্দর্য্য কোনটি তাও নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। মানুষের প্রকৃত সৌন্দর্য্য অন্তকরণের সুচিন্তা ও পবিত্রতা। যাদের মন ও আত্মার সৌন্দর্য্য ব্যাতিরেকে শুধু পোষাক-আশাক, বেশ-ভূষায় সুসজ্জিত হয় তাদের এ চেষ্টা বৃথা, অর্থহীন।
এখানে প্রয়োজন বা দরকারের দোহাই দেয়া হতে পারে কিন্তু এখানে প্রয়োজনের সংজ্ঞা কি? প্রয়োজন হলো “যার উপর জীবন যাপন নির্ভরশীল এবং যা ছাড়া জীবন চলা কষ্টসাধ্য” অযথা খরচকে প্রয়োজনের তালিকায় গণ্য করা বিচক্ষণতার পরিচয় নয়। সম্মানিতা মা ও বোনেরা! আপনারা যে প্রচলিত ফ্যাশনের পথে পা রেখেছেন এটা কিন্তু সম্ভ্রান্ত মুসলিম মহিলাদের পথ নয় বিজাতীয়দের ফ্যাশনের স্রোতে নিজেদের গা এলিয়ে দেয়া এবং তাদের তালে মত্ত হয়ে নৃত্য করা মুসলিম মহিলাদের আদর্শ হতে পারেনা। মুসলিম মা-বোনদের চাল-চলন আচার-আচরণ ও সাজ-সজ্জা হবে ইসলামী বিধানের অনুকূলে, আল্লাহ তায়ালা ও তার প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশিত আওতার ভিতরে।
সুতরাং মহিলাদের জন্য জ্ঞাতব্য যে, কোন প্রকার সাজ-সজ্জা শরীয়ত পরিপন্থী আর কোনগুলো শরীয়ত অনুমোদিত, যেন শরীয়ত বহির্ভূত সাজ-সজ্জা পরিত্যাগ করে শরীয়ত সম্মত যাবতীয় সাজ-সজ্জায় সজ্জিত হয়ে নিজেদের স্বভাব সুলভ চাহিদা পূরণ করা যায়।
এ সকল পদ্ধতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভের উদ্দেশ্য নিম্নে কিছুটা বিস্তারিত ভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। আশা করি বিষয়গুলো অত্যন্ত মনযোগের সাথে অধ্যয়ন করবেন। এবং সে অনুযায়ী আমলে ব্রতী হবেন।
চলবে.................................................................................
Logged
জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের (নারী ও পুরুষ) উপর ফরজ । জ্ঞানের শহর হলেন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) আর সেই শহরের দরজা হলেন হজরত আলী (রাঃ) । জ্ঞান ব্যতীত কর্ম অর্থহীন আবার কর্ম ব্যতীত জ্ঞান অর্থহীন। জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না, ইবাদত কর তবে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে করোনা ।