« on: September 26, 2022, 12:37:00 AM »
যবানের হেফাযতের গুরুত্ব
যবান অনেক দামী নিআমত, আল্লাহ তাআলার মহা দান। তাই এর নিয়ন্ত্রণ ও যথাযথ ব্যবহার কাম্য। কথায় আছে, দামী জিনিসের হেফাযত কঠিন। স্বর্ণ-রৌপ্য তো মানুষ যত্রতত্র ফেলে রাখে না। সাধ্যের সবটুকু দিয়ে হেফাযতের চেষ্টা করে। আল্লাহ তাআলা যবান হেফাযতের তাকীদ করেছেন এভাবে-
مَا یَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ اِلَّا لَدَیْهِ رَقِیْبٌ عَتِیْدٌ
মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে, তার জন্য একজন প্রহরী নিযুক্ত আছে, যে (লেখার জন্য) সদা প্রস্তুত। -সূরা ক্বফ (৫০) : ১৮
যবানে উচ্চারিত সবকিছুই ফেরেশতারা সংরক্ষণ করে রাখেন। ভালো-মন্দ, ছোট-বড় সবকিছুই তাঁরা লিপিবদ্ধ করেন। কিয়ামতের দিন এগুলোর হিসাব দিতে হবে। সেইদিন জিহ্বা, হাত-পাসহ সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও সাক্ষী দিবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
یَّوْمَ تَشْهَدُ عَلَیْهِمْ اَلْسِنَتُهُمْ وَ اَیْدِیْهِمْ وَ اَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ
যেদিন তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে তাদের বিরুদ্ধে তাদের জিহ্বা, তাদের হাত ও পা সাক্ষ্য দেবে। -সূরা নূর (২৪) : ২৪
আল্লাহ তাআলা বিভিন্নভাবে বান্দাকে সতর্ক করেছেন-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَ قُوْلُوْا قَوْلًا سَدِیْدًا، یُّصْلِحْ لَكُمْ اَعْمَالَكُمْ وَ یَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَ مَنْ یُّطِعِ اللهَ وَ رَسُوْلَهٗ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِیْمًا.
হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্য-সঠিক কথা বল। তাহলে আল্লাহ তোমাদের কার্যাবলী শুধরে দেবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করল সে মহা সাফল্য অর্জন করল। -সূরা আহযাব (৩৩) : ৭০
আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে তাকওয়া অবলম্বন তথা সব ধরনের নাফরমানী ছেড়ে দিতে বলেছেন। এর সাথে সাথেই যবানের সদ্ব্যবহার তথা সত্য-সঠিক কথা বলতে বলেছেন। কেননা, যবান হল নাফরমানীর বড় হাতিয়ার। তাই তাকওয়ার সাথেই যবানে সত্য-সঠিক কথা বলতে বলেছেন। যবান ঠিক হয়ে গেলে অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও সংশোধন হয়ে যাবে। তাই এরপরেই সব আমল সংশোধন ও গুনাহ মাফের ঘোষণা দিয়েছেন।
আর অভিজ্ঞতায় প্রমাণিত, যারা যবানের হেফাযত করতে পারে, তারা অন্যান্য গুনাহ থেকে সহজেই বাঁচতে পারে। যবানের ব্যাপারে শিথিলতা অনেক বড় বড় বিপদ ডেকে আনে। দেখা যায়, দু-একটি কথার সূত্র ধরে বউ-শ্বাশুড়ি কিংবা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বড় ধরনের ঝগড়া-বিবাদ হয়ে যায়।
যবান হেফাযতের ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন-
مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ
যে আল্লাহ ও শেষ দিবসে বিশ্বাস রাখে সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০১৮)
একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রিয় সাহাবী ওকবা ইবনে আমের রা.-কে তিনটি ওসিয়ত করলেন। এর প্রথমটি ছিল-
امْلِكْ عَلَيْكَ لِسَانَكَ
তুমি তোমার জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণে রাখ। (জামে তিরমিযী, হাদীস ২৪০৬)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন-
وَالّذِي لَا إِلَهَ غَيْرُهُ مَا عَلَى الْأَرْضِ شَيْءٌ أَحْوَجُ إِلَى طُولِ سَجْنٍ مِنْ لِسَانٍ
অর্থাৎ, সেই সত্তার কসম, যিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। ভূপৃষ্ঠে সবকিছুর চেয়ে জিহ্বাই সবচেয়ে বেশি বন্দিত্ব ও নিয়ন্ত্রণের মুখাপেক্ষী। (আলমুজামুল কাবীর, তবারানী, বর্ণনা ৮৭৪৪; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, বর্ণনা ১৮১৮৪)
নবীজী বাচালকে অপছন্দ করেন
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাচালকে অপছন্দ করেন। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
وَإِنّ أَبْغَضَكُمْ إِلَيّ وَأَبْعَدَكُمْ مِنِّي مَجْلِسًا يَوْمَ القِيَامَةِ الثّرْثَارُونَ وَالمُتَشَدِّقُونَ وَالمُتَفَيْهِقُونَ
তোমাদের মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে অপছন্দনীয় এবং কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে দূরে থাকবে সে, যে অযথা বেশি কথা বলে এবং যে অহংকার প্রদর্শনের জন্য, দাপট দেখানোর জন্য মুখ ভরে কথা বলে। (জামে তিরমিযী, হাদীস ২০১৮)
যবানের অপব্যবহারে কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হওয়া
হাদীস শরীফে এসেছে-
خَرَجْتُ وَأَنَا أُرِيدُ أَنْ أُخْبِرَكُمْ بِلَيْلَةِ الْقَدْرِ فَتَلَاحَى رَجُلَانِ فَاخْتُلِجَتْ مِنِّي فَاطْلُبُوهَا فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ فِي سَابِعَةٍ تَبْقَى أَوْ تَاسِعَةٍ تَبْقَى أَوْ خَامِسَةٍ تَبْقَى
আমি তোমাদেরকে কদরের রাত সম্পর্কে সংবাদ দিতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু দুই ব্যক্তির বিতর্কের কারণে আমি তা ভুলে গেছি। তাই তোমরা শেষ দশকে তা অন্বেষণ কর। তেইশ, একুশ, পঁচিশের রাতে।
শবে কদর একটি মহিমান্বিত রজনী। বরকতময় রাত। এ রাতের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে এসেছে-
لَیْلَةُ الْقَدْرِ خَیْرٌ مِّنْ اَلْفِ شَهْرٍ
কদরের রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।
যদি একটু বাগবিতণ্ডার কারণে এত বড় সৌভাগ্য লাভ থেকে বঞ্চিত হতে হয় তাহলে আমরা যেভাবে যবানের অপব্যবহার করি যেমন গীবত, পরনিন্দা অপবাদ, মিথ্যা, কটুকথা, গালি ইত্যাদির কারণে আমরা কত কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি!
চুপ থাকতে উৎসাহিত করা
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
مَنْ صَمَتَ نَجَا
যে চুপ থাকে সে বেঁচে যায়। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৫০১
অন্যত্র তিনি বলেন-
إِنّكَ لَمْ تَزَلْ سَالِمًا مَا سَكَتّ، فَإِذَا تَكَلّمتَ كُتِبَ لَكَ أَوْ عَلَيْكَ
তুমি যখন চুপ থাকবে তখন নিরাপদেই থাকবে। আর যখন কথা বলবে তখন তা তোমার পক্ষে কিংবা বিপক্ষে যাবে। -আলমুজামুল কাবীর, তবারানী, হাদীস ১৩৭
এক দার্শনিকের অভিব্যক্তি-
ما إن ندمت على سكوتي مرة ولقد ندمت على الكلام مرارا
আমি কখনো আমার নীরবতার উপর অনুতপ্ত হইনি। তবে বহুবার কথার কারণে লজ্জিত হয়েছি। তাই আমাদের উচিত চুপ থাকার অভ্যাস গড়ে তোলা।
যবানের হেফাযতে বেহেশতের যামানত
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যবান হেফাযতের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন-
مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الجَنّةَ
যে তার যবান ও লজ্জাস্থান হেফাযতের যামানত দিতে পারবে, আমি তার জান্নাতের যামিন হব। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪৭৪
নবীজীর যবানের হেফাযত
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের জন্য আদর্শ। কথা-বার্তা, চাল-চলন, কাজ-কর্ম সব বিষয়ে তিনি কখনও অযথা অনর্থক কথা বলতেন না, এমনকি বলা পছন্দও করতেন না। শুধু উপকারী ও প্রয়োজনীয় কথা বলতেন। তিনি দীর্ঘসময় নীরব থাকতেন। হাদীসে এসেছে-
كَانَ طَوِيلَ الصّمْتِ قَلِيلَ الضِّحْكِ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘসময় চুপ থাকতেন এবং কম হাসতেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২০৮১০
অসচেতনতায় যবানের অপব্যবহার
সরাসরি মিথ্যা, গালমন্দ, অশ্লীল কথা এগুলো থেকে আমরা অনেকেই বিরত থাকতে চেষ্টা করি। কিন্তু অনেক সময় বেখেয়ালে মিথ্যা বলে ফেলি। যেমন কিছু দেওয়ার বাহানা করে ছোট বাচ্চাকে ডাকা হল অথচ আহ্বানকারীর কাছে দেওয়ার মত কিছুই নেই। এটি মিথ্যার শামিল।
উম্মে আবদুল্লাহ ইবনে আমের রা. ছোট বাচ্চাকে কিছু দেওয়ার কথা বলে ডাকছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়টি লক্ষ করলেন। বললেন, তুমি কি তাকে কিছু দেওয়ার জন্য ডাকছ (নাকি কিছু দেওয়ার বাহানা করে তাকে কাছে ডাকছ?)। তিনি বললেন, হাঁ, আমি তাকে খেজুর দেওয়ার জন্য ডাকছি। তখন নবীজী বললেন-
أَمَا إِنّكِ لَوْ لَمْ تُعْطِيهِ شَيْئًا كُتِبَتْ عَلَيْكِ كِذْبَة
জেনে রাখ, তুমি যদি তাকে কিছু না দিতে, তাহলে তোমার গুনাহের খাতায় একটি মিথ্যা লেখা হত। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৯১
গল্প-গুজব, হাসি-তামাশা ও রসিকতার ছলে অনেক সময় আমরা অলীক, অবাস্তব ও উদ্ভট কথা বলে ফেলি। এমনকি কখনো কখনো মিথ্যাও হয়ে যায়। এ সমস্যাটি ছোট-বড়, পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সর্বশ্রেণীর মানুষের মাঝে মহামারির আকার ধারণ করেছে। কারণ রসিকতায় শ্রোতাদের হাসানোই থাকে মুখ্য বিষয়। তাই মিথ্যা, অলীক, অদ্ভুত ও আশ্চর্যজনক কথা বলার প্রবণতা থাকে। এমনকি এসব নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়। অথচ মিথ্যাকে আনন্দ-উল্লাসের মাধ্যম বানানো মারাত্মক গুনাহ। এর পরিণাম অনেক ভয়াবহ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
وَيْلٌ لِلّذِي يُحَدِّثُ الْقَوْمَ، ثُمّ يَكْذِبُ لِيُضْحِكَهُمْ وَيْلٌ لَهُ. وَوَيْلٌ لَهُ
ধ্বংস ওর! যে মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে। ধ্বংস ওর! ধ্বংস ওর জন্য!! -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২০০২১
কারো কারো মাঝে কথায় কথায় লানত-বদদোয়া দেওয়ার অভ্যাস থাকে। বিশেষভাবে নারীদের মাঝে। অনেক সময় তারা আপনজন এমনকি নিজ সন্তানকেও বদদোয়া দিয়ে চলে। হতে পারে তখন দুআ কবুলের মুহূর্ত ছিল। ফলে খাল কেটে কুমির আনার মত অবস্থা হয়। বদদোয়াটা লেগে যায়। এটা খুবই গর্হিত কাজ। যবানের মারাত্মক অপব্যবহার।
তাই এ ব্যাপারে আমাদের হুঁশিয়ার থাকা উচিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لاَ تَلاَعَنُوا بِلَعْنَةِ اللهِ، وَلاَ بِغَضَبِهِ، وَلاَ بِالنّارِ
তোমরা একে অপরকে লানত করো না; বলো না- তোমার উপর আল্লাহর লানত হোক, তোমার উপর আল্লাহর গযব পড়ুক, তুমি জাহান্নামে যাও। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৭৬
যবানের অপব্যবহারের আরেকটি ক্ষেত্র হল, ঠাট্টা-বিদ্রূপ, গীবত-অপবাদ ইত্যাদি। আমাদের কারো কারো কথাবার্তার বড় একটা অংশ থাকে তৃতীয় ব্যক্তিকে নিয়ে। হয়ত কারো দোষ চর্চা করা, না হয় কাউকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা অথবা কারো ব্যাপারে মন্দ বলা বা অপবাদ আরোপ করা। অথচ কুরআন-হাদীস এগুলো থেকে শক্তভাবে বারণ করেছে। এগুলো প্রত্যেকটাই কবীরা গুনাহ। পাশাপাশি যবানের অপব্যবহারেরও শামিল।
যবানের অপব্যবহারের পরিণাম
যবানের অপব্যবহার মানুষকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। দীর্ঘ এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, হযরত মুআয রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন-
وَهَلْ نُؤَاخَذُ بِمَا تَكَلّمَتْ بِهِ أَلْسِنَتُنَا؟
কথার কারণেও কি আমাদের পাকড়াও করা হবে? (মুখের কথার কারণেও কি জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে?)
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুআজ রা.-এর উরুতে মৃদু আঘাত করে বললেন-
يَا مُعَاذُ ثَكِلَتْكَ أُمّكَ - أَوْ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَقُولَ لَهُ مِنْ ذَلِكَ - وَهَلْ يكَب النّاس عَلَى مَنَاخِرِهِمْ فِي جَهَنّمَ إِلّا مَا نَطَقَتْ بِهِ أَلْسِنَتُهُمْ. فَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَسْكُتْ عَنْ شَرٍّ، قُولُوا خَيْرًا تَغْنَمُوا وَاسْكُتُوا عَنْ شَرٍّ تَسْلَمُوا.
হে মুআয! তুমি এ বিষয়টি বুঝ না! আরে, মানুষকে তো তার যবানের কথাই উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে।
যে আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী সে যেন ভালো কথা বলে বা অন্তত মন্দ কথা থেকে বিরত থাকে। তোমরা ভালো কথা বল, লাভবান হবে। মন্দকাজ থেকে বিরত থাক, নিরাপদ থাকবে। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৭৭৪)
যবানের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যবানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। কত পুত-পবিত্র তাঁর যবান! যে যবান আল্লাহর তরফ থেকে বান্দার কাছে ওহী পৌঁছায় এবং আল্লাহর কালামের ব্যাখ্যা দান করে। এ যবানের পবিত্রতা স্বয়ং আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন-
وَ مَا یَنْطِقُ عَنِ الْهَوٰی، اِنْ هُوَ اِلَّا وَحْیٌ یُّوْحٰی
[সে তার নিজ খেয়াল-খুশি থেকে কিছু বলে না। এ তো ওহী, যা তার কাছে পাঠানো হয়। -সূরা আননায্ম (৫৩) : ৩-৪]
তা সত্তে¡ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিনয়কাতর হয়ে আল্লাহ্র কাছে যবানের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন-
اللّهُمّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ سَمْعِي، وَمِنْ شَرِّ بَصَرِي، وَمِنْ شَرِّ لِسَانِي، وَمِنْ شَرِّ قَلْبِي، وَمِنْ شَرِّ مَنِيِّي
হে আল্লাহ! আমি আমার কান, চোখ, যবান, হৃদয় এবং লজ্জাস্থানের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় চাই। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৫৫১; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৯২)
আমাদের উচিত যবানের সঠিক ব্যবহারের প্রতি সচেতন ও যত্নবান হওয়া এবং এর অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করা
Logged
জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের (নারী ও পুরুষ) উপর ফরজ । জ্ঞানের শহর হলেন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) আর সেই শহরের দরজা হলেন হজরত আলী (রাঃ) । জ্ঞান ব্যতীত কর্ম অর্থহীন আবার কর্ম ব্যতীত জ্ঞান অর্থহীন। জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না, ইবাদত কর তবে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে করোনা ।