Author Topic: ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন পরিচালিত “জীবিকা” চাঁ  (Read 132 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

ashraful.diss

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 431
  • জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না
    • View Profile
    • Email
ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন পরিচালিত “জীবিকা” চাঁদপুর: একটি অলাভজনক সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প

ভূমিকা:

ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন একটি সুপরিচিত অলাভজনক সংস্থা যা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্নমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ হলো “জীবিকা” চাঁদপুর প্রকল্প। চাঁদপুর জেলার সুবিধাবঞ্চিত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে। “জীবিকা” শুধুমাত্র একটি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম নয়, বরং এটি একটি সমন্বিত সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প যার মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের দীর্ঘমেয়াদী স্বনির্ভরতা অর্জনের উপর জোর দেওয়া হয়।

প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:

“জীবিকা” চাঁদপুর প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য হলো চাঁদপুর জেলার দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচন এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রকল্পটি নিম্নলিখিত উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়নের চেষ্টা করে:

১। দরিদ্র পরিবারগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সহায়তা প্রদান।

২। স্থানীয় জনগণের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করা।

৩। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়তা করা।

৪। নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করা।

৫। স্থানীয় সম্প্রদায়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা।

প্রকল্পের কার্যক্রম:

“জীবিকা” চাঁদপুর প্রকল্পটি বহুমুখী কার্যক্রমের মাধ্যমে তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা করে। এর কিছু উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম হলো:

ক্ষুদ্রঋণ ও অনুদান: দরিদ্র পরিবারগুলোকে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার জন্য সহজ শর্তে ঋণ এবং ক্ষেত্রবিশেষে অনুদান প্রদান করা হয়। এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন আয়-উৎপাদনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারে।

দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ: স্থানীয় যুবসমাজ ও নারীদের বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। যেমন - সেলাই, হস্তশিল্প, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, কৃষিভিত্তিক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে বা নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে সক্ষম হয়।

স্বাস্থ্যসেবা ও সচেতনতা: প্রকল্পের আওতায় নিয়মিত স্বাস্থ্য ক্যাম্প আয়োজন করা হয় এবং স্থানীয়দের স্বাস্থ্যবিধি ও পুষ্টি সম্পর্কে সচেতন করা হয়। দরিদ্রদের মাঝে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ঔষধ সরবরাহ করা হয়।

শিক্ষা সহায়তা: দরিদ্র পরিবারের শিশুদের শিক্ষাগ্রহণে উৎসাহিত করা হয় এবং তাদের শিক্ষা উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। বয়স্কদের জন্য সাক্ষরতা কার্যক্রমও পরিচালনা করা হয়।

পরিবেশ সচেতনতা: পরিবেশ সুরক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে স্থানীয়দের সচেতন করা হয় এবং পরিবেশবান্ধব জীবিকা নির্বাহের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

নারী ও শিশু অধিকার: নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

প্রকল্পের প্রভাব ও সাফল্য:

“জীবিকা” চাঁদপুর প্রকল্প ইতোমধ্যে চাঁদপুর জেলার বহু দরিদ্র পরিবারের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত পরিবারগুলো অর্থনৈতিকভাবে আগের চেয়ে স্থিতিশীল হয়েছে, তাদের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে অনেকেই নতুন কাজের সুযোগ পেয়েছে অথবা সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা সহায়তার মাধ্যমে স্থানীয়দের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।

টেকসই উন্নয়নে অবদান:

“জীবিকা” চাঁদপুর প্রকল্পটি শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে। স্থানীয় জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মৌলিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে প্রকল্পটি একটি স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

সারকথা:

ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন পরিচালিত “জীবিকা” চাঁদপুর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প। চাঁদপুর জেলার দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নে এই প্রকল্পের অবদান অনস্বীকার্য। সমাজের সকল স্তরের মানুষের সমর্থন ও সহযোগিতার মাধ্যমে এই প্রকল্পটি আরও বৃহত্তর পরিসরে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে চাঁদপুর জেলার উন্নয়নে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে।

জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের (নারী ও পুরুষ) উপর ফরজ । জ্ঞানের শহর হলেন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) আর সেই শহরের দরজা হলেন হজরত আলী (রাঃ) । জ্ঞান ব্যতীত কর্ম অর্থহীন আবার কর্ম ব্যতীত জ্ঞান অর্থহীন। জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না, ইবাদত কর তবে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে করোনা ।