ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন)আইন২০১১
ভবঘুরে জীবনের হোক অবসান
মুহাম্মদ ওমর ফারুক ফাহিম
ফার্মগেট ওভারব্রীজ এলাকায় থাকে শিউলীদের পরিবার।ভোলা থেকে এসেছে এক বছর আগে।রাত কাটে এখানেই।কখনো এখান থেকে পুলিশ সরিয়ে দিলে মিরপুর-১০ এ চলে যায়।আবার চলে আসে।এখানে নাকি রোজগার ভালো।নিউমার্কেট ও গুলিস্তান এলাকায় গিয়ে তোরাব আলী ও সালেহার পরিবারের একই দশা দেখা গেলো।তোরাব আলীর বসতভিটাও নদীতে তলিয়ে গেছে আর সালেহা ঘর ভাড়ার টাকা দিতে পারেনি বলে মালিক তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে,তাই রাস্তার পাশের ফুটপাতেই আশ্রয় নিতে হয়েছে পরিবারসমেত।তাদের প্রশ্ন করা হলো,সরকার যদি তাদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যায় তবে তারা যাবে কীনা।উত্তরে তারা বললো,তাদের পরিবারের সবাইকে নেওয়া হবে কীনা,তারা একসাথে থাকতে পারবে কীনা !একটু বাড়িয়ে তারা বললো তাদের যদি আশ্রয়কেন্দ্রে না নিয়ে কিছু টাকা দেওয়া হয় তাহলে তারা ক্ষুদ্র-ব্যবসা শুরু করবে,গায়ে খেটে একটা আশ্রয়ের জোগাড় করে নেবে।
ঢাকাসহ দেশের সর্বত্র রাস্তাঘাটে,ফুটপাতে,পার্কে,ওভারব্রীজে পরিচিত দৃশ্য হিসেবে বিচরণ করতে দেখা যায় অর্ধনগ্ন ভবঘুরে ভাসমান মানুষ আর ভিক্ষুকদের।আশ্রয়হীন এসব মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বেঁচে থাকে।উন্মুক্ত জায়গায় এদের অবস্থানের ফলে পরিবেশেরও মারাত্মক দূষণ হচ্ছে। নিম্নমানের জীবনযাপনে মাদকের বিষাক্ত ছোবলে এরা পর্যুদস্ত কিন্তু এদের কোথায়ও আশ্রয় নেই বলেই কেবল এরা এসব স্থানে অবস্থান নেয়,সেটিও একটি বিবেচনার ব্যাপার।বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষেও ঢাকার রাস্তা থেকে ভবঘুরেদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিলো।বিভিন্ন সময়েই তা করা হয় কিন্তু এরা আবারো ফিরে আসে।১৯৪৩ সালে ব্রিটিশদের প্রণীত ভ্যাগারেন্সি এক্ট অনুযায়ী এদেরকে কখনো পুনর্বাসনের ব্যাবস্থা নেওয়া হলেও দীর্ঘমেয়াদে “ভবঘুরে-অবস্থা” থেকে উত্তরণের জন্য পদক্ষেপও খুব একটা নেওয়া হয়নি।এই দায় সরকারও এড়াতে পারেনা।সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্র সকল নাগরিকের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য সচেষ্ট থাকার কথা।অবশ্য বর্তমান সরকার ভবঘুরেদের পুনর্বাসনের জন্য ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি(পুনর্বাসন) আইন ২০১১ প্রণয়ন করে পুরনো ভবঘুরে সংক্রান্ত আইনকে রহিত করে পুনঃপ্রণয়ণ ও সংহত করেছে কিন্তু এই আইনের সাদা কালো অক্ষরে উল্লেখিত অনেক উদ্যোগই বাস্তবায়নযোগ্য কীনা এবং হলেও তা কতোদূর তা নিয়ে একটি বিতর্ক রয়েছে অধিকন্তু এ আইনকে অপব্যবহার করার অভিযোগও উঠছে।
২০১১ সালের ২৪ আগস্ট এ নতুন আইনটি পাশ হবার আগেই খসড়া বিলটি নিয়েই বিভিন্ন এনজিও,মানবাধিকারকর্মীরা বিরোধীতা করে আসছিলো।ব্র্যাক,আইন ও শালিস কেন্দ্র,বাংলাদেশ লিগাল এইড সার্ভিস ট্রাস্টসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এ আইনের ভবঘুরে সংগায়ন থেকে শুরু করে কিছু ধারার সমালোচনা করে এই আইনটিকে দরিদ্র জনগণের প্রতি অপমানজনক ও বিদ্বেষমূলক মানসিকতার প্রকাশ এবং এতে সুবিধাবঞ্ছিত শ্রেণীর মৌলিক অধিকার লংঘন এবং নারী,পথশিশু,ভিক্ষুক ও নিরাশ্রয় ব্যক্তিদের জীবনধারনের স্বাধীনতা ব্যাহত হবে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।আর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সামগ্রিক জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তিদেরকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত ও ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করতেই এ আইন।
ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি(পুনর্বাসন) আইন ২০১১ তে ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তির সংজ্ঞা দিয়ে কীভাবে ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তিকে পুনর্বাসিত করা যাবে সে ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে,সৃষ্টি করা হয়েছে নির্দিষ্ট কতৃপক্ষ।রাস্তা থেকে আটকের পর আদালত কতৃক ভবঘুরে ঘোষিত হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া এবং সেখানে অবস্থানসহ নানা দিক ব্যাখ্যা করা হয়েছে এ আইনে।ভবঘুরে বলতে বুঝানো হয়েছে-“এমন কোন ব্যক্তি যাহার বসবাসের বা রাত্রি যাপন করিবার মত সুনির্দিষ্ট কোন স্থান বা জায়গা নাই অথবা যিনি কোন উদ্দেশ্য ব্যতীত অযথা রাস্তায় ঘোরাফিরা করিয়া জনসাধারণকে বিরক্ত করেন অথবা যিনি নিজে বা কাহারো প্ররোচনায় ভিক্ষাবৃত্তিতে লিপ্ত হন”; তবে কোন ব্যক্তি দাতব্য, ধর্মীয় বা জনহিতকর কোন কাজের উদ্দেশ্যে অর্থ, খাদ্য বা অন্য কোন প্রকার দান সংগ্রহ করলে এবং উক্ত উদ্দেশ্যে বা কাজে তা ব্যবহার করলে তিনি এর অন্তর্ভুক্ত হবেন না। আর "নিরাশ্রয় ব্যক্তি" অর্থ এমন কোন ব্যক্তি যাহার বসবাসের বা রাত্রি যাপন করিবার মত সুনির্দিষ্ট স্থান বা জায়গা এবং ভরণ-পোষণের জন্য নিজস্ব কোন সংস্থান নাই এবং যিনি অসহায়ভাবে শহর বা গ্রামে ভাসমান অবস্থায় জীবন-যাপন করেন এবং সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত বিভিন্ন ভাতা, সাহায্য, ইত্যাদি লাভ করেন না”
ভ্যাগারেন্সী এক্টে ভবঘুরের সংজ্ঞার সমালোচনা হলেও এর সাথে এতে কেবল নতুন করে “যিনি কোনো উদ্দেশ্য ব্যাতীত অযথা রাস্তায় ঘোরাফেরা করিয়া জনসাধারণকে বিরক্ত করেন” শব্দগুলো যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।এতে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার নতুন হাতিয়ার তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করা হয় এবং জনসাধারণকে ঠিক কী কাজ করে বিরক্ত করা হলে তা আমলে আসবে সে ব্যাপারেও স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই।তাই ব্যাপারটি পুলিশই নির্ধারণ করবে।এজন্য মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানসমূহ ব্যাপক দুর্নীতিগ্রস্থ পুলিশ কতৃক জনগণ ব্যাপক হয়রানির শিকার হতে পারে বলে আশংকা করছে।কিন্তু আইনে বলা হয়েছে সরকার নির্ধারিত এলাকায় প্রয়োজনীয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করবেন।ম্যাজিস্ট্রেটগণ মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ অনুযায়ী বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে গণ্য হবেন।এ আইন অনুযায়ী একজন ন্যুনতম পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর যেকোনো ব্যক্তিকে যেকোনো স্থান থেকে প্রয়োজনমত আটক করতে পারবেন এবং অবশ্যই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির করবেন।ম্যাজিস্ট্রেটগণ ভবঘুরে সনাক্ত করার জন্য আটককৃত ব্যক্তিকে আটক করার কারণ,তারিখ,সময়,ঘটনার বিবরণ,বয়স,শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যাবলী নথিবদ্ধ করে সংশ্লিষ্ট রেজিস্টারে এ তথ্যাদি সংরক্ষণ করে(যদি প্রয়োজন আরো অনুসন্ধান করে ৭ দিনে)তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যদি সন্তোষজনকভাবে মনে হয় আটক ব্যক্তি ভবঘুরে তবে তিনি কারণ লিপিবদ্ধ করে সে ব্যক্তিকে কোন আশ্রয়কেন্দ্রে অনধিক ২ বছরের জন্য আটক রাখার জন্য অভ্যর্থনা কেন্দ্রে প্রেরণের নির্দেশ দিবেন।তাই পুলিশের চেয়ে এখানে অবশ্যই ম্যাজিস্ট্রেটের হাতেই ক্ষমতাটি বেশি দেওয়া হয়েছে।তবে দু’এক দিনের জন্য কাউকে হয়রানিমূলক আটক অবশ্য হওয়ার সুযোগ রয়েছে কারণ এই আইনেই বলা হয়েছে ভুলবশত আটকের জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যাবেনা।
আইনের তৃতীয় ধারায় এসব ভবঘুরে,নিরাশ্রয় ব্যক্তিকে আশ্রয়দানের জন্য সরকারি অভ্যর্থনা কেন্দ্র এবং সরকারি বা বেসরকারি আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে এবং ঢাকা ও ঢাকার বাইরের জেলায় এক বা একাধিক সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন ও সরকার কতৃক বেসরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ,তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা করার নীতিও গৃহীত হয়েছে।বর্তমানে দেশে এ ধরনের ৬ টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে যার প্রধানটি রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত।এছাড়া নারায়নগঞ্জের গোদনাইল,গাজীপুরের কাসিমপুর ও পূবাইল,ময়মনসিংহের ধলা এবং মানিকগঞ্জের বেতি এলাকায় এসব পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে।বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদে ২০০০ ভিক্ষুককে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় এজন্য সমাজকল্যান মন্ত্রণালয় ২০১১ সালে ঢাকা শহরজুড়ে ৪০০ টি স্পটে দশ হাজার ভিক্ষুককে সনাক্ত করেছে ১০ টি এনজিওর মাধ্যমে।কিন্তু ময়মনসিংহ,বরিশাল,ঢাকা ও জামালপুরে পুনর্বাসন করার এসব পাইলট কার্যক্রম বিভিন্ন কারণে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।কোথায়ও ঘর নির্মাণ কিংবা ভাড়া করা হয়নি,কোথায়ও থাকার মতো পরিবেশ নেই যার ফলে দায়িত্ব পাওয়া এনজিওগুলোর মাত্র চারটি তাদের প্রতিবেদন দেয় এবং তা অনুযায়ী একটি এনজিও ৪৪ জনের মধ্যে মাত্র ৭ জনকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিতে পেরেছে বলে জানায়।আইনের ১৬ ধারা অনুযায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা এসব ভবঘুরের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে যাতে সে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজেই আশ্রয় খুঁজে নিতে পারেক কিন্তু বাস্তবে ময়মনসিংহে মহিলাদের সেলাই মেশিন দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি,পরবর্তীতে ভ্যান দেওয়ার সিদ্ধান্তও বাস্তবায়ন হয়নি।
আইনে কোনো শিশু-সন্তানসহ আটককৃত নারীকে সন্তানের সাথে থাকার অনুমতি দেওয়া ছাড়াও গর্ভবতী নারীদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।সেই সাথে কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে তবে ব্যক্তি নিজে বা তার পক্ষে জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট বরাবরে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
ভবঘুরেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কেও দেওয়া হয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা।অভ্যর্থনাকেন্দ্রে আসার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও তার প্রতিবেদন তৈরির করে ভবঘুরে ব্যক্তি কুষ্ঠ,এইডস বা কোনো ছোঁয়াছে রোগে আক্রান্ত কীনা পরীক্ষা করে প্রয়োজনমতে সরকারী হাসপাতাল বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করার কথা এ বলা আছে
আইনে ভবঘুরেকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে কীভাবে মুক্তি দেওয়া হবে সে নির্দেশনা রয়েছে।সেমতে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বা সন্তোষজনক চাকুরির ব্যবস্থার পর অথবা কোনো ব্যক্তি তার দায়িত্ব নিলে বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে তিনি মুক্তি পাবেন।যদি কোনো ভবঘুরে উক্ত মেয়াদের মধ্যে অনুমতি ব্যতীত পালিয়ে যায় তবে সে ৩ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে।আর যেসব ভবঘুরেকে কেউ ভিক্ষাবৃত্তিতে প্ররোচণা দিয়ে থাকে,তবে প্ররোচনাকারী দণ্ডবিধি ১৮৬০, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬সহ এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী শাস্তি ভোগ করবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড মিজানুর রহমান এ আইনের উদ্দেশ্যকে মহৎ বলে এর বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন এবং চলাচলের স্বাধীনতার মতো কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকার লংঘনের আশংকা করেছেন।
দেশে কেবল ভিক্ষুকদের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখের মতো অথচ আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে মাত্র ছয়টি যেগুলোতে মোট ১ হাজার ৯০০ এর মতো আসন রয়েছে।এছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তরের ৩ টি দুঃস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্রায় ৭৫০টি আসন রয়েছে।এই বিশাল ভিক্ষুক জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসিত করতে প্রতিটি জেলায় নির্দিষ্ট সংখ্যক কেন্দ্রস্থাপন জরুরী।সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়ের “ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন” শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে আশি ভাগ ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্য নিজ জেলায় যেতে চায় এবং ৯৩ শতাংশ ভিক্ষুক সরকারী সাহায্য পেলে এ পেশা ছাড়তে চায়। তাই ভবঘুরে লোকদের নিজ নিজ জেলায় স্বল্পমেয়াদে পুনর্বাসিত করাই যৌক্তিক হবে।
প্রণীত এ আইনে গঠিত হওয়া ভবঘুরে বোর্ডের গঠন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অগ্রগতি খুবই সামান্য।অথচ সরকারের সদিচ্ছা,কর্মকর্তাদের নৈতিক ইচ্ছা ও আন্তরিকতা থাকলে এ আইনের মাধ্যমে একদমই সহায়সম্বলহীন কিংবা ইচ্ছা করে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িত থাকে এমন একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর ভবঘুরেদের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে,অন্যান্য শ্রেনীর ভিক্ষুক ও প্রায়-ভবঘুরেদের সরকারি সাহায্য প্রদান করে ক্ষুদ্র ব্যবসার ব্যবস্থা করলে ভবঘুরে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়ের ভিক্ষুক বিষয়ক সেলের হিসেব অনুযায়ী ৬১ শতাংশ ভিক্ষুক সেটাই চায়।এভাবে শিউলী সালেহা আর তোরাব আলীদের ঠাঁই নেওয়ার মতো একটু জায়গা দিতে পারলে খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টির সাথে এদের কান্নাও হয়তো আর মিলিয়ে যাবেনা হতাশার গভীর কুয়াশায়।
লেখকঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী