« on: March 27, 2019, 10:59:35 PM »
আমরা জানি, বাংলাদেশ হলো একটি মধ্যম আয়ের দেশ। দেশের বড় বড় শহরগুলোর বস্তি, পার্ক, ফুটপাত, লঞ্চঘাট সমূহে রয়েছে ছিন্নমূল মানুষের বসবাস, যেখানে তারা মৌলিক চাহিদা বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ লোকের বয়স ১৮ বছরের নিচে। আবার এদেরই একটি বিরাট অংশ সুবিধাবঞ্চিত শিশু। যারা কিনা বেড়ে উঠছে অবহেলা আর ঘৃনা নিয়ে, যাদের নেই কোন সামাজিক নিরাপত্তা এবং যারা একই সাথে বঞ্চিত হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়, সুশিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা থেকে।
অভিভাবকহীন এইসব শিশু সমাজের বিভিন্ন বৈষম্য এবং অবিচারের শিকার। এক ধরণের ভারসাম্যহীনতা ও অসঙ্গত জীবনবোধ নিয়ে বেড়ে উঠা এই শিশুরা তাদের নিজেদের পরিবারে, কর্মস্থলে, পথে কিংবা রাত্রিযাপনে বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। একশ্রেনীর মানুষ তাদের এই দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে ব্যবহার করছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে। ফলে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে এইসব শিশুদের সাধারণ বিকাশ, লঙ্ঘিত হচ্ছে শিশু অধিকার, এবং এরা ক্রমাগত ধাবিত হচ্ছে অন্ধকার ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনে। এইসব শিশুদের প্রায় ৮৫ শতাংশ যুক্ত হয়ে পড়ছে মাদকাসক্তে। অন্ধকার বিভীষিকাময় জীবন তাদের হাতছানি দিচ্ছে।
তাই এই সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য একটি বিরাট সামাজিক সমস্যা ও হুমকী। আর এই সমস্যার উৎপত্তির মূল কারণ হলো ক্ষুধা, দারিদ্রতা, জনসংখ্যার আধিক্য, বেকারত্ব আর শিক্ষার অভাব। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা “একটি শিশুও রাস্তায় থাকবে না”। জাতীয় শিশুনীতি ২০১১ এর ৬.২.৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে “পথশিশু সহ স্কল দরিদ্র্য শিশুর পুনর্বাসন ও যথাযথ বিকাশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা বলয় সম্প্রসারিত করতে হবে”। আন্তর্জাতিক শুশু অধিকার সনদের ২০ নং অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এ বলা হয়েছে “পারিবারিক পরিবেশ থেকে যে শিশডিসাময়িক বা চিরতরে বঞ্চিত বা স্বার্থ রক্ষায় যে সকল শিশুর পারিবারিক পরিবেশ উন্মুক্ত নয় সে সকল শিশু রাষ্ট্র থেকে বিশেষ সুরক্ষা ও সহায়তার অধিকারী”। জাতীয় শিশুনীতি ও শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়নে সরকারে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ড্যাফোডিল পরিবার এই সকল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, তাদের শারীরিক , মানসিক ও নৈতিক বিকাশ, আনুষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা, ভরণ-পোষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে গড়ে তুলছে “ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অব সোশ্যাল সাইন্সেস-ডিআইএসএস”
ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় ৪০০০ হাজার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ডিআইএসএস। এখানে ছেলেমেয়ে উভয়েই সমান সুবিধা ভোগ করবে। সমন্বিত সেবার আওতায় এইসব শিশুদের পারিবারিক স্নেহে, আদর্শ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে। যেখানে থাকছে বিনামূল্যে খাদ্য, আবাসন, শিক্ষা, ও চিকিৎসা সুবিধা। যাদেরকে সহযোগিতা করার কেউ নেই, তাদের জন্য রয়েছে ডিআইএসএস শিশু হোম। আপনাদের সকলের সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য। সকলের মিলিত প্রেচেষ্ঠাই পারে সেই সকল শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করতে এবং সমাজ থেকে ক্ষুধা ও দরিদ্রতা দূর করতে। তাই আপনার সামান্য সহযোগিতায় বদলে যেতে পারে একজন সুবিধাবঞ্চিত শিশুর আগামী।
« Last Edit: March 27, 2019, 11:28:38 PM by Farhana Haque »
Logged
কারো মত নয় আমরা হবো যার যার মত। প্রতিজন "আমি" হবো এক একটি আদর্শ। জীবন একটিই। সময় অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। নিজেকে প্রমান করার এবং ভালো কাজ করার এখনই সময়।