Author Topic: সিজদাবনত হয়ে তওবার মাধ্যমে শুরু হোক নতুন ব  (Read 3580 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

ashraful.diss

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 386
  • জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না
    • View Profile
    • Email

সিজদাবনত হয়ে তওবার মাধ্যমে শুরু হোক নতুন বছর

পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর উৎসব ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’। নতুন বছরটি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিগত একটি বছরের পর্যালোচনা ও নতুন এক বছরের পরিকল্পনা গ্রহণ করা সচেতন মুমিনের ঈমানি দায়িত্ব।
 
ইংরেজি নববর্ষের সঙ্গে মুসলমানদের তেমন সম্পর্ক নেই। তাই ইংরেজি নববর্ষ পালন করা মুসলিম উম্মাহর জন্য কল্যাণকর নয়।
 
খৃস্টানদের অনুকরণে ইংরেজি বছর শেষে নতুন বছরের শুরুতে ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ (১২টা ১ মিনিট) পালন করাকে ইসলাম সমর্থন করে না'। এ রাতে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে অশ্লীলতা-নগ্নতা ও বেলেল্লাপনার বন্যায় মেতে উঠে অনেকে। মদ পান, ছেলে মেয়ের যৌন উম্মাদনাসহ বিভিন্ন অনৈতিক, কর্মকান্ড ও নোংরা অনুষ্ঠান করে ইংরেজি নববর্ষকে বরণ করা হয়। যা ইসলামের দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধ।

ইসলামে নৈতিকতাহীন ক্রিয়া কর্মের অশ্লীল উপভোগ নেই। বেহায়াপনা, অশ্লীলতা ও নোংরামীকে ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। ইংরেজি নববর্ষ তথা ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ ইসলামে অবৈধ। এটা খৃষ্টানদের সংস্কৃতি।

আমাদের দেশে থার্টি ফার্স্ট নাইটে অসামাজিক কার্যকলাপ বহুগুণে বেড়ে যায়। নেশাদ্রব্য, আপত্তিকর নাচ-গানসহ বিভিন্ন বেহায়ামিপূর্ণ কীর্তিকলাপ দ্বারা থার্টি ফার্স্ট উদযাপন গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে চলে আসছে।

একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, দশক আগে এ দিবসটি এভাবে উদযাপন করা হতো না। কিন্তু ভিনদেশের সংস্কৃতিতে আজ এ দিবসগুলোতে শরীয়ত বিরোধী ও গোনাহের কাজে লিপ্ত হয়ে ঈমানদাররা তাদের ঈমান-আমলকে বিনষ্ট করছেন।

মূলত এটা খৃস্টানদের সংস্কৃতি হলেও প্রতি বছর অনেক মুসলিমও পালন করে থাকেন। কিন্তু এটা করতে গিয়ে আমরা অনেক সময় উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়ি, শরীয়তের সীমালঙ্ঘন করে ফেলি। অশ্লীলতা ও নোংরামীতে লিপ্ত হয়ে পড়ি। এটা মুসলমানদের কোন সভ্যতা, সংস্কৃতি হতে পারে না।

বরং এটা একটি অপসংস্কৃতি। থার্টি ফার্স্ট নাইট বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুসরণ এবং অশ্লীলতার মহাপ্লাবন। এটি সম্পূর্ণ বিজাতীয় সংস্কৃতি। একজন ঈমানদার মুসলমান ও রুচিশীল-সচেতন মানুষ কিভাবে বিজাতীয় সংস্কৃতি ও বেহায়াপনাকে সমর্থন করে তা বোধগম্য নয়।

বিজাতীয় সংস্কৃতি উদযাপন থেকে বিরত থাকতে কোরআন ও হাদিসে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া (ইসলামি রীতিনীতি) অন্য কোনো ধর্মের অনুসরণ করবে কখনো তার সেই আমল গ্রহণ করা হবে না। আর পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’। (সূরা আল ইমরান : ৮৫)।

নবীজী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে অন্য জাতির সঙ্গে আচার-আচরণে, কৃষ্টি-কালচারে সামঞ্জস্য গ্রহণ করবে সে তাদের দলভুক্ত বিবেচিত হবে। (সুনানে আবু দাউদ : ২৭৩২)।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহপাক সু-স্পষ্ট এরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক জাতির জন্য আমি একটি নির্দিষ্ট বিধান এবং সুস্পষ্ট পথ নির্ধারণ করেছি’। (সুরা মায়িদাহ : ৪৮)।

রাসুল (সাঃ ) এরশাদ করেন, ‘যদি তুমি খারাপ কাজ করো, আর তোমার খারাপ লাগে, ভালো কাজ করে ভালো লাগে তাহলে তুমি মুমিন। কিন্তু যদি খারাপ কাজ করে ভালো এবং ভালো কাজ করে খারাপ লাগে তাহলে তুমি মুমিন হতে পার না’। (মুসলিম : ১৯২৭)।

হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি অনারবীয় দেশে বসবাস করে, সে যদি সে দেশের মেহেরজান (নববর্ষ) উদযাপন করে এবং বাহ্যিকভাবে তাদের সঙ্গে সাদৃশ্য রাখে এমনকি এ অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে, তা হলে কিয়ামতের দিন তাকে তাদের (কাফিরদের) সঙ্গে হাশর করা হবে’ (বায়হাকি মাজমুয়াতুত তাওহীদ : ২৭০)।

একজন ঈমানদার নর-নারীর প্রতিটি দিন-রাত উৎসব ও আনন্দের। বছরে গুটি কয়েক দিন নয় বরং প্রতিটি দিন আনন্দের। প্রতিটি দিন ক্ষণ আমাদের জন্য মুল্যবান।
বিশেষ করে থার্টি ফার্স্ট নাইট আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাত। আমাদের দায়িত্ব হল এই রাতে অনুশোচনা ও আত্মসমালোচনা করে আগামী বছরের কল্যাণ কামনা করত: সিজদাবনতে হয়ে থাকা। তওবাহ, ইস্তেগফার, দোয়া- দুরুদ, নফল নামাজসহ ইত্যাদি ভালো কাজের মধ্যে রাতটি অতিবাহিত করা।

জ্ঞানকে পৃথিবী থেকে উঠিয়ে নেওয়ার আগে আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক জ্ঞান অর্জন করার তাওফীক দান করুন। আমীন!
জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের (নারী ও পুরুষ) উপর ফরজ । জ্ঞানের শহর হলেন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) আর সেই শহরের দরজা হলেন হজরত আলী (রাঃ) । জ্ঞান ব্যতীত কর্ম অর্থহীন আবার কর্ম ব্যতীত জ্ঞান অর্থহীন। জ্ঞানী হও তবে অহংকারী হইও না, ইবাদত কর তবে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে করোনা ।