• Welcome to Daffodil Foundation Forum.
 

News:

SMF - Just Installed!

Main Menu

Recent posts

#1
ডিআইএসএস চাইল্ড হোমের শিশুদের জন্য চুরি রোধে কুরআন ও হাদিসের আলোকে নৈতিক শিক্ষা কাউন্সিলিং সেশন

সেশনের শিরোনাম: চুরি: একটি জঘন্য অপরাধ - কুরআন ও হাদিসের আলোকে এর পরিণতি এবং পরিত্রাণের উপায়

সেশনের উদ্দেশ্য:

ডিআইএসএস চাইল্ড হোমের শিশুদের চুরি করার খারাপ অভ্যাস সম্পর্কে সচেতন করা।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে চুরির ভয়াবহতা ও এর কুফল সম্পর্কে জ্ঞান দান করা।
তাদের মধ্যে অনুশোচনা ও অনুশোচনার অনুভূতি জাগানো এবং এই খারাপ কাজ থেকে ফিরে আসার অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করা।
চুরি না করার গুরুত্ব এবং সৎ পথে জীবন যাপনের ফজিলত সম্পর্কে অবগত করা।
চুরি রোধে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণে তাদের উৎসাহিত করা।

সময়: প্রায় ৬০-৭০ মিনিট

উপকরণ:

কুরআনের আয়াত ও হাদিসের কিছু নির্বাচিত অংশ (প্রয়োজনে পোস্টার বা স্লাইডে লিখে আনা)।
কিছু শিক্ষামূলক গল্প বা উদাহরণ।
আলোচনার জন্য সহজ ও বোধগম্য ভাষা।

সেশনের ধাপ:

১. ভূমিকা ও পারস্পরিক পরিচিতি (৫ মিনিট):

কাউন্সিলর শিশুদের সাথে আন্তরিকভাবে সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
তাদের নাম ও ব্যক্তিগত বিষয়ে কুশল জিজ্ঞাসা করবেন, যাতে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়।
আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে সংক্ষেপে ধারণা দেবেন: "আজ আমরা চুরি নামক একটি খারাপ অভ্যাস নিয়ে কথা বলবো। কুরআন ও হাদিসে এই বিষয়ে কী বলা হয়েছে এবং কেন আমাদের এই কাজ থেকে দূরে থাকা উচিত, তা আমরা জানার চেষ্টা করবো।"

২. চুরির ভয়াবহতা - কুরআনের আলোকে (১৫ মিনিট):

কাউন্সিলর কুরআনের কিছু আয়াত তেলাওয়াত করবেন এবং শিশুদের উপযোগী করে এর অর্থ ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করবেন। যেমন:

সূরা আল-মায়েদার ৩৮ নম্বর আয়াত: وَ السَّارِقُ وَ السَّارِقَۃُ فَاقۡطَعُوۡۤا اَیۡدِیَهُمَا جَزَآءًۢ بِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَزِیۡزٌ حَكِیۡمٌ {"পুরুষ চোর ও নারী চোর তাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ তাদের হাত কেটে দাও। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত শাস্তি। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।"}
কাউন্সিলর এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝাবেন যে ইসলামে চুরির শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। যদিও এই শাস্তি বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ও শর্ত রয়েছে, তবে এর মাধ্যমে চুরির জঘন্যতা ও সমাজে এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
সূরা আল-বাকারা'র ১৮৮ নম্বর আয়াত: وَ لَا تَاۡكُلُوۡۤا اَمۡوَالَكُمۡ بَیۡنَكُمۡ بِالۡبَاطِلِ وَ تُدۡلُوۡا بِهَاۤ اِلَی الۡحُكَّامِ لِتَاۡكُلُوۡا فَرِیۡقًا مِّنۡ اَمۡوَالِ النَّاسِ بِالۡاِثۡمِ وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ {"আর তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভক্ষণ করো না এবং মানুষের কাছে ধন-সম্পদ দিয়ে বিচারকদেরকে ঘুষ দিও না, যাতে তোমরা জেনেশুনে কারো সম্পদের কিছু অংশ অন্যায়ভাবে গ্রাস করতে পারো।"}

এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝানো হবে যে আল্লাহ তাআলা যেকোনো উপায়ে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন, চুরিও এর অন্তর্ভুক্ত।

৩. চুরির কুফল - হাদিসের আলোকে (২০ মিনিট):

কাউন্সিলর কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস উল্লেখ করবেন এবং সহজ ভাষায় এর ব্যাখ্যা দেবেন। যেমন:

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: لاَ يَسْرِقُ السَّارِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ {"চোর যখন চুরি করে, তখন সে মুমিন থাকে না।"} (সহীহ বুখারী, হাদিস নং ২৪৭৫; সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৭)
এই হাদিসের মাধ্যমে বোঝানো হবে যে চুরি ঈমানের দুর্বলতা ও আল্লাহর প্রতি আস্থার অভাবের পরিচায়ক। একজন মুমিন কখনো এমন কাজ করতে পারে না।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: «اتَّقُوا الْكَذِبَ، فَإِنَّ الْكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الْفُجُورِ، وَإِنَّ الْفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ، وَاتَّقُوا السَّرِقَةَ، فَإِنَّ السَّرِقَةَ تَهْدِي إِلَى الْفُجُورِ، وَإِنَّ الْفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ» {"তোমরা মিথ্যা বলা থেকে বেঁচে থাকো, কেননা মিথ্যা পাপাচারের দিকে ধাবিত করে আর পাপ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর তোমরা চুরি করা থেকে বেঁচে থাকো, কেননা চুরি কলুষতার দিকে ধাবিত করে আর কলুষতা জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়।"} (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ৫৩০০)

এই হাদিসের মাধ্যমে চুরিকে মিথ্যা বলার মতোই একটি জঘন্য কাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এর ভয়াবহ পরিণতির কথা বলা হয়েছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন: «مَا آمَنَ بِي مَنْ بَاتَ شَبْعَانَ، وَجَارُهُ جَائِعٌ إِلَى جَنْبِهِ وَهُوَ يَعْلَمُ {"সে ব্যক্তি মুমিন নয় যে পেট পুরে খায় আর তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে।"}  (আল-আদাব আল-মুফরাদ, হাদিস নং ১১২)
যদিও সরাসরি চুরির কথা বলা হয়নি, তবে এই হাদিস অন্যের কষ্টের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা দেখানোর গুরুত্ব তুলে ধরে। চুরি অন্যের হক নষ্ট করে এবং তাদের কষ্ট দেয়।

৪. চুরির কারণ ও তার সমাধান (১৫ মিনিট):

কাউন্সিলর শিশুদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণভাবে চুরির পেছনের কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন। যেমন:

অভাব বা প্রয়োজন।
লোভ বা অন্যের জিনিসের প্রতি আকর্ষণ।
খারাপ সঙ্গ।
আবেগের বশে বা না বুঝে করা।
অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা।

এরপর কুরআন ও হাদিসের আলোকে এই কারণগুলোর সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা করবেন:

অভাব ও প্রয়োজন: ধৈর্য ধারণ করা, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া এবং সাধ্যমতো হালাল উপায়ে উপার্জনের চেষ্টা করা। অন্যের কাছে সাহায্য চাওয়ার মানসিকতা তৈরি করা (যদি প্রয়োজন হয়)।
লোভ ও অন্যের জিনিসের প্রতি আকর্ষণ: নিজের যা আছে তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকা এবং অন্যের জিনিসের প্রতি লোভ না করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি দোয়া: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى {"আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা আল-হুদা ওয়াত-তুকা ওয়াল-আফাফা ওয়াল-গিনা।"} (অর্থ: "হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে হেদায়েত, তাকওয়া (আল্লাহভীতি), পবিত্রতা ও প্রাচুর্য কামনা করি।") - এই দোয়া বেশি বেশি পাঠ করার অভ্যাস করা।
খারাপ সঙ্গ: খারাপ সঙ্গ ত্যাগ করা এবং ভালো ও ধার্মিক বন্ধুদের সাথে মেশা।
আবেগের বশে বা না বুঝে করা: নিজেদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখা এবং যেকোনো কাজ করার আগে তার পরিণতি সম্পর্কে চিন্তা করা।
অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা: ভালো কাজের মাধ্যমে অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করা। নিজেদের প্রতিভা ও সক্ষমতা বিকাশের মাধ্যমে সম্মান অর্জন করা।

৫. অনুশোচনা ও সৎ পথে ফিরে আসার গুরুত্ব (৫ মিনিট):

কাউন্সিলর শিশুদের বোঝাবেন যে ভুল করা স্বাভাবিক, কিন্তু সেই ভুলের জন্য অনুতপ্ত হওয়া এবং তা শুধরানোর চেষ্টা করা জরুরি।
তাওবার গুরুত্ব সম্পর্কে বলবেন এবং আল্লাহ তাআলার ক্ষমাশীলতার কথা উল্লেখ করবেন।
চুরি করা জিনিসের মালিকের কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং সম্ভব হলে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলবেন।
ভবিষ্যতে আর কখনো চুরি না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করার জন্য উৎসাহিত করবেন।

৬. দোয়া ও শুভকামনা (৫ মিনিট):

কাউন্সিলর শিশুদের সৎ পথে জীবন যাপন করার এবং চুরি করার মতো খারাপ অভ্যাস থেকে দূরে থাকার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন।
তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করবেন এবং যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেবেন।
সবশেষে, কাউন্সিলর শিশুদের ধন্যবাদ জানাবেন এবং তাদের কাছ থেকে বিদায় নেবেন।

কাউন্সিলরের জন্য কিছু টিপস:

শিশুদের সাথে সহানুভূতিশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন। তাদের তিরস্কার না করে বুঝিয়ে বলুন।
তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করুন এবং তাদের বিশ্বাস অর্জন করুন।
তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং তাদের সমস্যাগুলো বোঝার চেষ্টা করুন।
কুরআন ও হাদিসের উদাহরণ দেওয়ার সময় সহজ ও বোধগম্য ভাষা ব্যবহার করুন।
বাস্তব জীবনের উদাহরণ ও শিক্ষামূলক গল্প ব্যবহার করে আলোচনাকে আকর্ষণীয় করে তুলুন।
তাদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য ধৈর্য ধরুন এবং নিয়মিত ফলো-আপ করুন।
প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না।

এই কাঠামোটি অনুসরণ করে আপনি ডিআইএসএস চাইল্ড হোমের শিশুদের চুরি রোধে কুরআন ও হাদিসের আলোকে একটি কার্যকর নৈতিক শিক্ষা কাউন্সিলিং সেশন পরিচালনা করতে পারেন। আল্লাহ আপনাদের প্রচেষ্টা কবুল করুন।

প্রস্তুতকারক:
......................................
জনাব মোঃ আশ্রাফুল ইসলাম
সিনিয়র ইথিক্স এডুকেশন টিচার
ডিআইএসএস চাইল্ড হোম

#2
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে নতুন সূচনার আহ্বান

"দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে" — এই বাক্যটি শুধু এক ধরনের হতাশার চিত্র নয়, এটি জীবনের এক গভীর বাস্তবতাকে প্রকাশ করে। এমন সময় আসে যখন মনে হয়, সামনে আর কোনো রাস্তা নেই, চারপাশের সব দরজা বন্ধ। এক অদৃশ্য দেওয়ালের সামনে এসে দাঁড়াই, যেখানে পিছু হটার উপায় নেই, আর এগোনোর পথও অস্পষ্ট।

জীবনের এই পর্যায় ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অফিস কিংবা জাতীয়—যেকোনো ক্ষেত্রেই আসতে পারে। কেউ হয়তো আর্থিক সংকটে জর্জরিত, কেউ মানসিক চাপে ভেঙে পড়েছে, আবার কেউ জীবনের কোনো কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি। পরিবারও এমন এক দুঃসময়ে পড়তে পারে, যখন সমাধানের কোনো পথ চোখে পড়ে না। এমনকি একটি জাতিও এমন অবস্থায় পড়তে পারে, যখন ভবিষ্যৎ অন্ধকার মনে হয়।

এই অবস্থায় মানুষ নানা আবেগে ভরে যায়—ভয়, হতাশা, অসহায়তা, ক্ষোভ, অনিশ্চয়তা। সবকিছু যেন থমকে যায়। কিন্তু এখানেই লুকিয়ে থাকে এক আশ্চর্য সুযোগ — নতুন করে শুরু করার শক্তি

সংকটই কখনো কখনো পুনর্জাগরণের সূচনা হয়

যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখন বাধ্য হই নতুন করে ভাবতে, নতুনভাবে বাঁচতে। পুরনো পথে চলা বন্ধ হলে, নতুন পথের সন্ধান শুরু হয়। জীবনের অনেক বড় সাফল্যের সূচনা এমন অচল অবস্থাতেই ঘটে।

এই সময়টিতে আমাদের করণীয় হতে পারে—

১। পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করুন: শান্তভাবে বসে ভেবে দেখুন, কী কারণে এই অবস্থায় এসেছি। মূল কারণ জানা গেলে সমাধানও স্পষ্ট হয়।
২। সম্ভাবনার দরজা খুঁজুন: মনে হতে পারে, সব দরজা বন্ধ — কিন্তু সত্যিকারে হয়তো কোনো ছোট জানালা খোলা আছে। সেটিই হতে পারে আশার আলো।
৩। সহায়তা নিন: সংকটে একা থাকা নয়, বরং যাদের বিশ্বাস করেন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন। পরামর্শ, ভালোবাসা ও সহযোগিতা অনেক সময় অন্ধকারে আলো দেখায়।
৪। মনোবল দৃঢ় রাখুন: ভয় বা হতাশা নয়, বিশ্বাস ও ধৈর্যই এখানে সবচেয়ে বড় শক্তি। মনে রাখুন, রাত যত গভীরই হোক, ভোর আসবেই।
৫। নতুন কৌশল শিখুন: হয়তো পুরনো ধ্যানধারণা আর কাজ করছে না। তাই নিজেকে নতুন করে গড়ে তোলার সময় এসেছে। পরিবর্তনই বেঁচে থাকার প্রমাণ।

দেওয়াল নয়, এটি হতে পারে একটি দরজা

"দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে" — এই বাক্যটি শুধুই অসহায়তার প্রতীক নয়; এটি এক ধরনের জাগরণের আহ্বান। এই দেয়ালই হতে পারে জীবনের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। হয়তো এখান থেকেই শুরু হবে নতুন গল্প, নতুন দিগন্ত।

জীবন কখনোই একেবারে শেষ হয়ে যায় না। প্রতিটি কঠিন মুহূর্তের পেছনে লুকিয়ে থাকে শেখার সুযোগ, বেড়ে ওঠার সম্ভাবনা এবং পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা।
যতক্ষণ আমরা আশাকে বাঁচিয়ে রাখি, ততক্ষণ কোনো দেয়ালই আমাদের আটকে রাখতে পারে না।

শেষ কথা:

যখন মনে হবে, "আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে", তখন ভেবে দেখুন — হয়তো এই দেয়ালটাই আপনার জীবনের নতুন দরজায় পরিণত হতে যাচ্ছে। দরকার শুধু সাহস, বিশ্বাস, এবং একটুখানি আলো দেখার মন।
#3
কখন শিশুরা মিথ্যা বলা শুরু করে?

সাধারণত শিশুদের আট বছর বয়সের আগে পূর্ণ অর্থে মিথ্যা বলার মতো মানসিক বিকাশ ঘটে না।
যেমন, যদি ৩ বছরের শিশুকে জিজ্ঞেস করা হয়, "তুমি কি দুধ খেয়েছো?"—সে দুধ না খেয়েও বলে, "হ্যাঁ, খেয়েছি।"
এক্ষেত্রে শিশুটি আপনাকে ধোঁকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভুল তথ্য দেয়নি; বরং আপনাকে খুশি করার জন্য বা শাস্তি এড়ানোর জন্য এমনটি বলেছে। তাই এটিকে প্রকৃত মিথ্যা বলা যায় না।

কেন শিশুরা মিথ্যা বলে?

১. শাস্তির ভয়: পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিশু বুঝে যায়—সত্য বললে শাস্তি পেতে হবে। তাই শাস্তি এড়াতে মিথ্যা বলে।
২. লজ্জা ও অস্বস্তি: ভুল করলে শিশু লজ্জায় পড়ে। পূর্বে যদি লজ্জা দেওয়া হয়ে থাকে, তবে শিশুরা লজ্জা এড়াতেও মিথ্যা বলে।
৩. বাস্তবতা ও কল্পনার গুলিয়ে ফেলা: ৮ বছর বয়সের আগে শিশুরা বাস্তব আর কল্পনার পার্থক্য ঠিকভাবে বুঝতে পারে না।
৪. পরিবার থেকে শেখা: শিশুরা বড়দের দেখে মিথ্যা বলতে শেখে। যদি পরিবারের কেউ শিশুর সামনে মিথ্যা বলে এবং বলে "প্রয়োজনে মিথ্যা বলা যায়", তবে শিশুও একই আচরণে উৎসাহিত হয়।
৫. কিছু পাওয়ার জন্য: যেমন—"রুটি খেলে আইসক্রিম পাবে।" শিশু রুটি না খেয়েই বলে দেয় সে খেয়েছে।
৬. স্কুলের পরিবেশ: গবেষণায় দেখা গেছে—যেসব স্কুলে বেশি শাস্তি দেওয়া হয়, সেসব স্কুলের শিশুরা বেশি মিথ্যা বলে। কারণ শাস্তি এড়াতে তারা গুছিয়ে মিথ্যা বলতে শেখে।

ডেভেলপমেন্টাল সাইকোলজির ব্যাখ্যা

১। ছোট শিশুরা মনে করে, সব পরিস্থিতিতে মিথ্যা বলা ভুল।
২। ১০ বছর বয়সের পর থেকে তাদের চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আসে।
৩। ১০–১৮ বছরের মধ্যে শিশু মিথ্যা বলার সঠিকতা বা ভুল হওয়া নির্ধারণ করে ঘটনার ফলাফলের উপর।
৪। যদি মিথ্যা বলে কিছু পাওয়া যায়, তবে তা তাদের কাছে সঠিক মনে হয়।
৫। অন্যকে খুশি করার জন্য মিথ্যা বলাও তখন গ্রহণযোগ্য মনে হয়।

শিশুকে সত্য বলায় উৎসাহিত করার উপায়

✅ গল্প শুনানো: সত্য বলার সুবিধা বা পুরস্কারের গল্প বলুন। ধর্মীয় গল্প বা বয়স অনুযায়ী ছোট-বড় গল্প তৈরি করতে পারেন।
✅ প্রশংসা করা: শিশু সত্য বললে তার সততা প্রশংসা করুন।
✅ নিজে উদাহরণ হওয়া: শিশুর সামনে সবসময় সত্য বলুন এবং কথা দিয়ে কথা রাখুন।
✅ ভিন্ন সমাধান খোঁজা: শিশু মিথ্যা বললে শাস্তি না দিয়ে বিকল্প উপায়ে সমস্যার সমাধান করুন। যেমন—হোমওয়ার্ক না করে বললে করেছে, তখন তাকে হোমওয়ার্ক শেষ করতে বলুন এবং পরে চেক করুন।
✅ কাউন্সেলিং: যদি মিথ্যা বলা অভ্যাসে পরিণত হয় এবং পরিবারের জন্য সমস্যার কারণ হয়, তবে ফ্যামিলি ও ইন্ডিভিজুয়াল কাউন্সেলিং করা যেতে পারে। এতে শিশুর উদ্বিগ্নতা ও বিষণ্নতা কমে, আত্মমর্যাদা বাড়ে এবং ট্রমা থাকলে তা নিয়েও কাজ হয়।

যা করবেন না

❌ শিশুকে ভিন্ন ভিন্ন বার্তা দেবেন না—একবার সত্য বলতে বলে আবার বলবেন, প্রয়োজনে মিথ্যা বলা যায়।
❌ মিথ্যা বললে শাস্তির গল্প শুনাবেন না।
❌ কথা দিলে তা রাখুন। রাখতে না পারলে কারণ ব্যাখ্যা করুন।
❌ শিশুকে "মিথ্যুক" বলে ডাকবেন না বা অন্যদের সামনে হেয় করবেন না।
❌ সত্য বলার জন্য উপহার দিতে শুরু করে আবার বন্ধ করবেন না। উপহারের ওপর নির্ভরশীল হলে উপহার না পেলে শিশু সত্য বলা বন্ধ করে দিতে পারে।

👉 এইভাবে শিশুর প্রতি সহানুভূতিশীল, ধারাবাহিক এবং ইতিবাচক আচরণই তাকে সত্য বলার অভ্যাসে গড়ে তুলবে।
#4
🌟 ডিআইএসএস শিশুদের জন্য কিছু নির্দেশনা 🌟

নির্দেশনা কী?

শিশুর বা শিক্ষার্থীর ক্ষমতার সর্বাধিক বিকাশে সাহায্য করার একটি অবিরত প্রক্রিয়া। এটি সহায়তা প্রদান, কিন্তু কখনো জোর প্রয়োগ নয়। নির্দেশনা গণতান্ত্রিক ও সহযোগিতা মূলক।

নির্দেশনার ধরন:

1️⃣ শিক্ষামূলক – জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি
2️⃣ বৃত্তিমূলক – পেশাগত বা কর্মসংক্রান্ত দক্ষতা উন্নয়ন
3️⃣ স্বাস্থ্য – শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা
4️⃣ ধর্মবিষয়ক – নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ
5️⃣ অবসর ও বিনোদনমূলক – সৃজনশীলতা ও আনন্দদায়ক কার্যক্রম
6️⃣ সামাজিক ও নৈতিক – দায়িত্বশীল ও নৈতিক আচরণ গঠন

🏫 বিদ্যালয়ে নির্দেশনার প্রয়োজনীয়তা:

✔ শিক্ষার কৌশল আয়ত্ত
✔ শিক্ষোপকরণের সঠিক ব্যবহার
✔ পরীক্ষার সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ
✔ নিয়মিত হাজিরা
✔ কার্যক্রম ও সহ-পাঠক্রমিক কর্মসূচীর সমন্বয়
✔ সু-অভ্যাস গঠন
✔ দৈনন্দিন কার্যক্রম ও শিক্ষাক্রম নিয়মিত অনুমোদন
✔ ভবিষ্যৎ গঠনমূলক কর্মসূচি পরিকল্পনায় সহায়তা

📋 নির্দেশনার ধাপ:

1️⃣ ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ
2️⃣ পরিবেশগত সুযোগ সুবিধা যাচাই
3️⃣ পরামর্শ প্রদান
4️⃣ অভিযোজন (Adaptation)
5️⃣ সুযোগ ধরে রাখা ও প্রবর্তন
#5
Age Group / প্যারেন্টিং
Last post by ashraful.diss - September 09, 2025, 10:07:44 AM
🧒👨‍👩‍👧 প্যারেন্টিং: শিশুর আচরণ পরিবর্তন করার আগে নিজেকে পরিবর্তন করুন

সন্তান আমাদের প্রতিচ্ছবি। আমরা যেমন আচরণ করি, তারা তেমনই শিখে নেয়। তাই শিশুর চরিত্র গঠনে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন অভিভাবকের নিজেকে পরিবর্তন করা।

কি করবেন

১। ভালো কাজের জন্য শিশুকে উৎসাহ দিন বা পুরস্কৃত করুন – এতে সে আত্মবিশ্বাসী হবে।
২। শিশুকে প্রশংসা করুন – এতে সে অন্যকেও প্রশংসা করতে শিখবে।
৩। শিশুকে নৈতিকতা শিক্ষা দিন – সে সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত নাগরিক হবে।
৪। শিশুকে স্নেহ ও ভালোবাসা দিন – সে অন্যকে ভালোবাসতে শিখবে।
৫। শিশুর সাথে বন্ধুভাবাপন্ন হোন – তার নিজের জগৎ গড়ে তুলতে পাশে থাকুন।

কি করবেন না

১। শিশুকে নিন্দা করবেন না – এতে তার মনে ঘৃণা তৈরি হবে।
২। শিশুকে মারবেন না – এতে তার মধ্যে অবাধ্যতা জন্ম নেবে।
৩। শিশুকে উপহাস করবেন না – এতে তার মধ্যে হীনমন্যতা তৈরি হবে।
৪। শিশুকে সকলের সামনে লজ্জা দিবেন না – এতে সে অপরাধী মানসিকতায় ভুগবে।
৫। শিশুর সামনে কোনো অপরাধ করবেন না বা অপরাধের পক্ষ নেবেন না – এতে সে অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠতে পারে।
৬। শিশুর সামনে দাম্পত্য কলহ করবেন না – এতে তার ভবিষ্যৎ পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৭। শিশুর সামনে শিক্ষক বা পরিচিত কারো নিন্দা করবেন না – এতে তার শ্রদ্ধাবোধ নষ্ট হবে।

👉 মনে রাখবেন, শিশু আপনার কথায় নয়, আপনার আচরণে গড়ে ওঠে
#6

কা'বা হল আজরের পুত্র ইব্রাহীম খলিলের বানানো, আর মানুষের হৃদয় হল মহান আল্লাহ্ অবস্থানের পথ

আমরা জানি, কা'বা শরীফ মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র স্থান, যার নির্মাণ নবী ইব্রাহীম (আঃ) এর হাতে সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু কেন একটি মানব হৃদয়কে সেই পবিত্র কা'বার থেকেও অধিক মূল্যবান বলা হচ্ছে? এর কারণটি নিহিত রয়েছে উভয়ের উৎপত্তির মহিমায় এবং উদ্দেশ্যের গভীরতায়।

কা'বা শরীফ, নিঃসন্দেহে, আল্লাহর এক বিশেষ নিদর্শন। এটি সেই কিবলা, যেদিকে মুখ করে সারা বিশ্বের মুসলমানগণ সালাত আদায় করেন। এর ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় তাৎপর্য অপরিসীম। নবী ইব্রাহীম (আঃ), যিনি আল্লাহর একনিষ্ঠ বন্ধু (খলিল) ছিলেন, তিনি স্বহস্তে এই ঘর নির্মাণ করেছিলেন আল্লাহর ইবাদতের জন্য। এটি আল্লাহর একত্ববাদের প্রতীক এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু।

কিন্তু যদি আমরা গভীরভাবে চিন্তা করি, তবে দেখব যে কা'বা একটি কাঠামো, যা পাথর ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে নির্মিত। এর একটি নির্দিষ্ট স্থান এবং আকার রয়েছে। এটি আল্লাহর ইবাদতের জন্য একটি পবিত্র স্থান হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে, যেখানে মানুষ একত্রিত হয়ে তাদের আনুগত্য প্রকাশ করে।

অন্যদিকে, মানুষের হৃদয় – এটি কোনো বস্তু নয়। এটি মহান আল্লাহ্ তায়ালার এক বিশেষ সৃষ্টি, যেখানে তিনি স্বয়ং অবস্থান করেন। হাদীসে ইরশাদ হয়েছে, "আমার আকাশ ও পৃথিবী কিছুই আমাকে ধারণ করতে পারে না, কিন্তু মুমিনের হৃদয় আমাকে ধারণ করতে পারে।" (আল-হাদীস আল-কুদসী)।

এই হাদীস থেকে আমরা বুঝতে পারি, মানুষের হৃদয় আল্লাহর এক বিশেষ আবাসস্থল। যখন কোনো মুমিনের হৃদয় ঈমান, ভালোবাসা, এবং আল্লাহর স্মরণে পরিপূর্ণ থাকে, তখন সেই হৃদয় আল্লাহর নূরে আলোকিত হয়। সেই হৃদয় যেন এক জীবন্ত কা'বা, যেখানে সর্বদা আল্লাহর জিকির ও মহিমা ধ্বনিত হয়।

নবী ইব্রাহীম (আঃ) কর্তৃক নির্মিত কা'বা যেমন আল্লাহর ইবাদতের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান, তেমনি প্রতিটি মুমিনের হৃদয় আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি ব্যক্তিগত ক্ষেত্র। বাহ্যিক কা'বার দিকে মুখ করে আমরা যেমন আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করি, তেমনি আমাদের ভেতরের হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করি।

একটি বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে, বাহ্যিক ইবাদতের গুরুত্ব কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না। কা'বা শরীফের সম্মান ও মর্যাদা আমাদের হৃদয়ে সর্বদা অক্ষুণ্ণ থাকবে। কিন্তু এর পাশাপাশি আমাদের অন্তরের দিকেও নজর দিতে হবে। যদি আমাদের হৃদয় কলুষিত থাকে, হিংসা-বিদ্বেষে পরিপূর্ণ থাকে, তাহলে শুধু বাহ্যিক ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা কঠিন।

আমরা আমাদের বাহ্যিক ইবাদতের পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ জগতকে সুন্দর ও পবিত্র করি। আমাদের হৃদয়কে আল্লাহর ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করি। কারণ যে হৃদয় আল্লাহর মহব্বতে পূর্ণ, সেই হৃদয় নিঃসন্দেহে হাজার হাজার কা'বার থেকেও উত্তম। এটি মহান আল্লাহর অবস্থানের পথ, যেখানে তিনি সর্বদা বিরাজমান।

আমাদের লক্ষ্য হোক এমন একটি হৃদয় গড়ে তোলা, যা সর্বদা আল্লাহর স্মরণে সজীব থাকে, যা অন্যের কষ্টে ব্যথিত হয় এবং অন্যের সুখে আনন্দিত হয়। এই প্রকার হৃদয়ই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় এবং এটাই হল আধ্যাত্মিকতার সর্বোচ্চ শিখর।
#7
জীবিকা – চাঁদপুর: সুদমুক্ত অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা

ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন পরিচালিত জীবিকা – চাঁদপুর প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সদস্যরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

সুদের অভিশাপ থেকে মুক্তি

প্রকল্পের আওতায় সদস্যদের কর্জে হাসানাহ প্রদান করা হচ্ছে, যা সুদবিহীন অর্থ। এর মাধ্যমে তারা:

১। প্রয়োজনীয় মূলধন দিয়ে ব্যবসা বা উদ্যোক্তা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন
২। সুদের বোঝা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন
৩।আত্মসম্মান ও আর্থিক নিরাপত্তা অর্জন করছেন

টেকসই সুবিধা

🔹 ক্ষুদ্র ব্যবসা ও পশুপালন/কৃষিভিত্তিক উদ্যোগে বিনিয়োগ
🔹 পরিবারে আয়ের উৎস বৃদ্ধি
🔹 সমাজে দারিদ্র্য হ্রাস ও আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধি

জীবিকা – চাঁদপুর প্রমাণ করছে যে, সুদমুক্ত অর্থনৈতিক সহায়তা এবং সঠিক নির্দেশনার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ নিজের জীবনকে গড়ে তুলতে পারে এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে পারে।
#8
জীবিকা – চাঁদপুর: কর্জে হাসানাহ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কার্যক্রম

অসহায় ও পিছিয়ে পড়া মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন পরিচালিত "জীবিকা – চাঁদপুর" একটি কার্যকর কর্মসূচি। জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি এবং স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে সদস্যদের আর্থিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

কর্জে হাসানাহ প্রদান

জীবিকা – চাঁদপুর প্রকল্পের আওতায় সদস্যদের কর্জে হাসানাহ প্রদান করা হচ্ছে। এটি একটি সুদবিহীন আর্থিক সহায়তা, যা সমাজের দুর্বল শ্রেণীর মানুষের জন্য একটি বড় সহায়ক শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মূলধন হস্তান্তরের পদ্ধতি

প্রকল্পের সদস্যদের জন্য সমান মালিকানা নিশ্চিত করতে:

১। প্রত্যেক সদস্যের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে
২। উপযুক্ত নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে
৩। ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে স্বচ্ছতার সাথে মূলধন হস্তান্তর করা হয়েছে

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কার্যক্রম

এই মূলধনের মাধ্যমে সদস্যরা ক্ষুদ্র ব্যবসা, পশুপালন, কৃষিভিত্তিক উদ্যোগ ও অন্যান্য আয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে করে:

১। সদস্যরা আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে
২। পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসছে
৩। সমাজে দারিদ্র্য হ্রাস ও টেকসই উন্নয়নের পথ সুগম হচ্ছে

জীবিকা – চাঁদপুর প্রকল্প প্রমাণ করছে যে, সঠিক দিকনির্দেশনা ও আর্থিক সহায়তা পেলে প্রত্যেক মানুষই নিজেকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে সক্ষম।
#9
🌾 ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন – জীবিকা (চাঁদপুর)

সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য একটি সম্মানজনক জীবন গড়ে তোলাই ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন-এর অন্যতম লক্ষ্য। বিধবা, ইয়াতিম, বয়স্ক ও বিপদাপন্ন মানুষরা প্রায়ই জীবিকার অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করেন। তাদের জন্য টেকসই সমাধান তৈরি করতেই ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন পরিচালনা করছে "জীবিকা – চাঁদপুর" কর্মসূচি।

কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য

✅ বিধবা, ইয়াতিম, বয়স্ক ও অসহায় মানুষদের জীবিকা নির্বাহের সুযোগ সৃষ্টি করা
✅ দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করা
✅ দারিদ্র্য হ্রাস ও পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা

সাম্প্রতিক কার্যক্রম

📌 গাভী ও ছাগল পালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ
📌 গরু মোটাতাজাকরণ কৌশল নিয়ে দক্ষতা উন্নয়ন
📌 অংশগ্রহণকারীদের হাতে-কলমে শেখার সুযোগ প্রদান
📌 গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান রাখার পথ উন্মুক্ত করা

প্রত্যাশিত ফলাফল

🌟 প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পরিবারগুলো নিয়মিত আয় করতে সক্ষম হবে
🌟 স্থানীয় পর্যায়ে পশুপালন ও কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি শক্তিশালী হবে
🌟 অসহায় মানুষরা আত্মসম্মান ও স্বনির্ভর জীবনে অভ্যস্ত হবে

🌱 ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে—শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থানের সুযোগের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ স্বনির্ভর হতে পারে।
"জীবিকা – চাঁদপুর" প্রকল্প সেই স্বপ্নপূরণের একটি বাস্তব উদ্যোগ।
#10
🌍 ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন – মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধে উদ্যোগ

দুর্যোগ মানুষের জীবনে অনিবার্য সত্য। প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট—যে কোনো ধরনের দুর্যোগ মুহূর্তের মধ্যে পারিবারিক স্থিতি নষ্ট করে দিতে পারে, মানুষের জীবনে এনে দিতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয়। বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রতিবন্ধী মানুষরা এসব পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে—সঠিক সচেতনতা, প্রস্তুতি এবং সহায়তার মাধ্যমে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই আমরা কাজ করছি:

আমাদের কার্যক্রম

🔹 দুর্যোগ প্রস্তুতি প্রশিক্ষণ – পরিবার ও ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি
🔹 প্রতিবন্ধী-বান্ধব কর্মসূচি – বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
🔹 মানবিক সহায়তা – দুর্গত মানুষকে খাদ্য, চিকিৎসা ও মানসিক সমর্থন প্রদান
🔹 সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি – স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করে দুর্যোগ মোকাবেলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা

আমাদের লক্ষ্য

✅ পরিবারকে স্বনির্ভর করে তোলা
✅ ব্যক্তি পর্যায়ে আত্মবিশ্বাস তৈরি করা
✅ দুর্যোগ-পরবর্তী মানবিক বিপর্যয় রোধ করা
✅ সমাজে একটি টেকসই ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা

🌱 ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে—মানবিক সহযোগিতা ও সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে একটি মানবিক, সহমর্মী ও নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।